এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বালুর জন্য এত দরদ ? মমতার কাছে ভালো হতেই কৌশলী অর্জুন, কটাক্ষ বিজেপির !

বালুর জন্য এত দরদ ? মমতার কাছে ভালো হতেই কৌশলী অর্জুন, কটাক্ষ বিজেপির !


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- রেশন দুর্নীতির ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী এবং বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তবে তিনি গ্রেফতার হওয়ার সাথে সাথেই তৃণমূল কংগ্রেসের যারা নীচু তলার নেতাকর্মী, তারা ভাবছিলেন যে, তারা কি এর পক্ষে বক্তব্য রাখবেন, নাকি বিপক্ষে! অবশেষে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের পর স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতারিকে তৃণমূল রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবেই দেখছে। অর্থাৎ সর্বতোভাবে তারা এই গ্রেফতারের বিরোধিতা করে বিজেপির বিরুদ্ধে সোচ্চার হবেন, এটা স্পষ্ট। কিন্তু সমস্যার বিষয় হচ্ছে, দুদিন আগে বিজেপি থেকে এসে এখন তৃণমূলের কাছে ভালো হওয়ার চেষ্টা যে সমস্ত দলবদলু সাংসদরা করছেন, তার মধ্যে অন্যতম ব্যারাকপুরের সাংসদ। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতারি নিয়ে শুধু বিরোধিতা করাই নয়, বরঞ্চ এমন এক কথা বললেন অর্জুন সিংহ, যা দেখে একাংশ বলছেন, আসলে এসব আর কিছুই নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোখে নিজেকে ভালো রাখার জন্যেই কৌশল অবলম্বন করছেন এই সাংসদ। কিন্তু কি এমন বলেছেন অর্জুনবাবু?

প্রসঙ্গত, এদিন গ্রেপ্তার হওয়ার রাজ্যের বনমন্ত্রী প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন ব্যারাকপুরের সংসদ অর্জুন সিংহ। তিনি বলেন, “জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ভালো লোক তার পাশে সব সময় আছি এবং থাকব। প্রয়োজনে তার যদি আইনের সহযোগিতা প্রয়োজন হয়, তাহলে সেটাও দেব।” আর এখানেই একাংশ বলছেন, যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, নিজের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে যে, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের এই গ্রেফতারের বিরুদ্ধে তাদের মতামত রয়েছে। তখন তৃণমূলের সবাই যে সেই সুরেই কথা বলবেন, তা স্পষ্ট। যে কারণে স্বাভাবিকভাবেই এমনিতেই বিজেপি থেকে তৃণমূলে আসার পর অর্জুন সিংহের গ্রহণযোগ্যতা দলের মধ্যে প্রশ্নের মুখে। মাঝেমধ্যেই পুলিশ প্রশাসন নিয়ে তিনি এমন সব কথা বলছেন, যাতে অস্বস্তিতে পড়ছেন স্বয়ং পুলিশ মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাই এই পরিস্থিতিতে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখার পর প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে তাকে সব সহযোগিতা করার কথা বলে নিজের দলনেত্রীকেই খুশি রাখার চেষ্টা করলেন অর্জুনবাবু। কিন্তু এসব বলে কি দলের মধ্যে নিজের নম্বর বাড়াতে পারবেন দলবদলু এই সাংসদ?

বিজেপির দাবি, তৃণমূলে এখন দুটো ভাগ। একটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অপরটি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লবিতে যারা রয়েছেন, তারা শেষ পর্যন্ত নেত্রীর সুরেই বক্তব্য রেখে তাকে খুশি রাখার চেষ্টা করছেন। অর্জুন সিংহ হয়ত সেই লবিতেই পড়েন। যার কারণে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখার পরেই আগ বাড়িয়ে আরও বেশি বেশি করে বক্তব্য রেখে সিমপ্যাথি আদায়ের চেষ্টা করলেন অর্জুন সিংহ। কিন্তু পরবর্তীতে যদি পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নেয়, যদি অতীতের মতো পার্থ চ্যাটার্জির ক্ষেত্রে যেমনটা হয়েছিল, তাকে যেভাবে দলের সমস্ত পদ এবং মন্ত্রীপদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ক্ষেত্রেও যদি সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তখন কি করবেন এই অর্জুন সিংহ? দলনেত্রীকে খুশি রাখার জন্য তিনি হয়ত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পক্ষে এখন কথা বললেন। কিন্তু ভবিষ্যতে তার এই মন্তব্যই তার পথের কাটা হয়ে দাঁড়াবে না তো! তখন সুযোগ পেয়ে ভাইপো এই অর্জুন সিংহকে দলের জনপ্রতিনিধির টিকিট দেওয়া থেকেও নামটি কেটে দেবে না তো? প্রশ্ন তুলছে গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহল।

পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূল দলকে তাদের নেতাকর্মীরাও বিশ্বাস করতে পারেন না। আজকে হয়তো জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সমর্থনে দু চারটি কথা বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সময়ের স্রোত বয়ে যাওয়ার মতই হয়ত ভবিষ্যতেও দেখা যাবে। এই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মাথার থেকে হাত সরিয়ে নিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। তাকে আরও বিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছে তার দল। কারণ পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দেখলেই বোঝা যায় যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সব থেকে ঘনিষ্ঠ বৃত্তে এই পার্থবাবু থাকলেও এখন তাকে সব রকম ভাবেই এড়িয়ে যাচ্ছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ক্ষেত্রে তৃণমূল যে তার পাশে একশো শতাংশ থাকবে, এটা কোনো মতেই নিশ্চিত করে বলা যায় না। তাই এখন হয়ত সিমপ্যাথি আদায় করার জন্য অর্জুন সিংহ জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন, কিন্তু ভবিষ্যতে এটাই তার পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!