এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মমতার রাতজাগা শুরু? তদন্তে নয়া মোড় ইডির! উৎসাহ বাড়িয়ে ময়দানে শুভেন্দু!

মমতার রাতজাগা শুরু? তদন্তে নয়া মোড় ইডির! উৎসাহ বাড়িয়ে ময়দানে শুভেন্দু!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-রাজ্যের তৃণমূল সরকারের মুখোশটা খুলে গিয়েছিল নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায়। একের পর এক নেতা মন্ত্রী জেলে গিয়েছেন। কিন্তু এই রাজ্যের শাসক দল যে এতটা নিচে নামতে পারে, তা বিরোধীরাও ভাবতে পারেনি। তবে শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য প্রথম থেকেই দাবি করে এসেছেন, সময় যেতে দিন। আরও অনেক দুর্নীতির ঘটনা সামনে আসবে। কারণ তিনি খুব ভালো করে জানেন, এই তৃণমূল দলটাকে সেখানে থেকে তাদের নেতা-মন্ত্রীরা কিভাবে দুর্নীতি করেছেন, তা দীর্ঘদিন তৃণমূলের সঙ্গে ঘর করা শুভেন্দু অধিকারী খুব ভালোভাবেই প্রত্যক্ষ করেছেন। আর এই পরিস্থিতিতে রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী এবং বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেপ্তার হওয়ার পর বিরোধীদের উৎসাহ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকে আবার এটাও বলতে শুরু করেছেন, এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাতজাগা শুরু হয়ে গেল। যে প্রবণতা শুরু হয়েছে, তাতে তদন্তকারী সংস্থা এই দুর্নীতির ক্ষেত্রেও আরও একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। আর তাতে বেশ কিছু মোবাইল ফোন তাদের হাতিয়ার হতে চলেছে। আর সেই মোবাইল ফোন থেকে তথ্য উদ্ধার হলে নাকের জল চোখের জল এক হতে পারে রাজ্যের শাসকদলের বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।

প্রসঙ্গত, এদিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির তদন্ত নিয়ে এবং বেশ কিছু মোবাইল ফোনের প্রতি তাদের নজর নিয়ে শুভেন্দুবাবুকে প্রশ্ন করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা অবশ্য স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমাতেই জানিয়ে দেন যে, তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়ে তিনি কিছু বলবেন না। তবে যেখানে যেখানে তার বলার মত কিছু কিছু বিষয় থাকে, সেখানে তিনি নিশ্চয়ই নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তথ্য দিয়ে থাকেন, যাতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার এতে সুবিধা হয়। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে কার্যত এই তদন্ত করতে আরও উৎসাহ দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। পাশাপাশি তিনি এটাও বুঝিয়ে দিলেন যে, উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ দিয়ে যদি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে সাহায্য করতে হয়, তাহলেও তাতে তার কোনো অসুবিধা নেই। অবশ্য এতে তো অসুবিধা থাকার কথাও নয়। বরঞ্চ প্রকৃত বিষয়কে উৎঘাটন করতে হলে, প্রকৃত সত্যকে সামনে আনতে গেলে তো যে কোনো ভারতবর্ষের নাগরিকের সেই অধিকার রয়েছে, যারা তদন্ত করছে, তাদের কাছে প্রকৃত তথ্য পৌঁছে দেওয়ার। তাই শুভেন্দু অধিকারীও বিরোধী দলনেতা হিসেবে নয়, একজন ভারতবর্ষের নাগরিক হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা একজন সাধারন মানুষ হিসেবে এই তথ্য পৌঁছে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘুম উড়িয়ে দিতে পারেন। কারণ তার কাছে যে তথ্য রয়েছে তৃণমূল দল সম্পর্কে, তা অনেকের কাছেই নেই। তাই সময় যত এগোচ্ছে, ততই রেশন বন্টন নিয়ে তৃণমূলের চাপ বাড়ছে বলেই দাবি বিরোধীদের।

বিজেপির দাবি, সবে তো সকাল হয়েছে। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের যে দুটো ফোন সবথেকে বেশি ব্যবহার করা হত 25 টি ফোনের মধ্যে, সেই দুটো ফোনের তথ্যও দেখা উচিত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। শুভেন্দুবাবুও সেই কথাই বলেছেন। রেশনের চাল চুরি করে তৃণমূল নেতারা কোটিপতি হয়েছেন। এক দুর্নীতি ফাঁস করতে গিয়ে আর এক দুর্নীতি সামনে আসছে রাজ্যে। যার ফলে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে, এই রাজ্যে তৃণমূল সরকারের আমলে এমন কোনো ব্যবস্থা নেই, যেখানে তারা চুরি করেনি। তাই এবার চোরেদের শাস্তি হবে বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভেবেছিলেন, নিয়োগ দুর্নীতিকে যে করেই হোক ধামাচাপা দিতে পারবেন। কোনো ভাবেই হোক, আন্ডার স্ট্যান্ডিংয়ের রাজনীতি করে তিনি বিষয়টিকে ঘুরিয়ে দেবেন। কিন্তু তিনি স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি যে, তার প্রিয় বালু গ্রেপ্তার হয়ে যাবে। রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় যে দুর্নীতিতে তিনি প্রশ্রয় দিয়েছেন, বিরোধীরা যেভাবে অভিযোগ করছে যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উস্কানি ছাড়া এই দুর্নীতি হতেই পারে না, সেখানে তৃণমূল নেত্রীকে তো এবার না চাইলেও ময়দানে নামতেই হবে। আর কতদিন তিনি আড়ালে থেকে এই নাটক করবেন? তাই শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিন্দুমাত্র সুযোগ না দিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে যেভাবে প্রয়োজন, সেভাবেই সহযোগিতা করার কথা জানিয়ে দিলেন। আর এতেই এবার রাত জাগা শুরু হয়ে গেল পশ্চিমবঙ্গের স্বনামধন্যা সততার প্রতীকের। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!