ভোট বড় বালাই , বিজেপিকে রুখতে এবার দলে ফেরানো হলো হেভিওয়েট বহিস্কৃত নেতাকে জোর জল্পনা কলকাতা মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম রাজ্য October 22, 2019 2019 এর লোকসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গের বুক থেকে প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছিল। কোনরকমে 42 টি আসনের মধ্যে 22 টি আসনে জিতে শেষ রক্ষা করেছে তাঁরা। তবে বরাবরই দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত এ রাজ্যের শাসক দল। এমনকি রাজ্যের নেতা, সাংসদ, বিধায়কদের ‘দিদিকে বল’ জনসংযোগ কর্মসূচিতে গিয়ে স্থানীয় মানুষদের কাছে দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগ শুনতে হয়েছে। এই অভিযোগের উপর ভিত্তি করেই বীরভূম থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন অঞ্চল সভাপতি রাকেশ মণ্ডল। কিন্তু ভোট বড় বালাই। তাই সেই ভোটের কথা মাথায় রেখেই আবারও তৃণমূল দলে ফিরলেন বহিস্কৃত অঞ্চল সভাপতি রাকেশ মণ্ডল। বিজয়া সম্মিলনী সভায় দলে ফিরলেন রামপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূলের বহিস্কৃত অঞ্চল সভাপতি রাকেশ মণ্ডল। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এর উপস্থিতিতে রাকেশ মণ্ডলকে দলে ফেরানো হয়। তবে এই মুহূর্তে তাঁকে কোন পদ দেওয়া হয়নি।রবিবার বীরভূমের মহম্মদ বাজারে বলিহারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে রামপুরহাট বিধানসভার ছটি পঞ্চায়েতের তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে একটি বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করা হয়েছিল। প্রসঙ্গত গত পঞ্চায়েত ভোটে রামপুর পঞ্চায়েতে বিজেপি ও তৃণমূল এর আসন সংখ্যা ছিল তিন তিন। 167 পঞ্চায়েতের মধ্যে 164 তে তৃণমূল নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছিল। কিন্তু ব্যতিক্রম ছিল গণপুর আর টাই হয়েছিল রামপুরে। রামপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূলের এই ফলের কারণস্বরূপ উঠে আসে নিচু স্তরের দুর্নীতি। আর তখনই সামনে আসে অঞ্চল সভাপতি রাকেশ মন্ডলের নাম। গত বছর 29 শে ডিসেম্বর এই মহম্মদবাজারে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল প্রকাশ্য জনসভায় রাকেশ মণ্ডলকে দল থেকে বহিষ্কার করেছিলেন। দীর্ঘ 10 মাস দলের বাইরে থাকার পর রাকেশ মণ্ডলকে আবার দলে ফেরানো হলো। রাকেশ মণ্ডলকে দলে ফেরানোর পক্ষে যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, রাকেশ মণ্ডল দল থেকে বহিষ্কৃত হলেও তিনি তৃণমূলের হয়ে কাজ করছিলেন। বীরভূম এলাকায় গত লোকসভা ভোটের পর থেকেই বিজেপির প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের অনুমান, তাহলে কি বিজেপিকে আটকাতেই দলে ফেরানো হলো রাকেশ মন্ডলকে ? আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এ বিষয়ে মন্ত্রী আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “রাকেশ যাতে দলের হয়ে নিজের অঞ্চলে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে তাই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেলা সভাপতি।” অন্যদিকে, রাকেশ মণ্ডল জানিয়েছেন, “দলের সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নিয়েছিলাম। বহিষ্কৃত হলেও তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী হিসেবে কাজ করে এসেছি। তাই দল ফিরিয়ে নিল। আমি খুব খুশি।” অন্যদিকে বিজেপি সম্পূর্ণ ঘটনাটিকে নাটকের নামান্তর দিয়েছে। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ ভান্ডারী ঘটনা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, “এলাকার এক গোষ্ঠীকে চুপ করানোর জন্য এক নেতাকে বহিষ্কার করছে। আবার কিছুদিন পর সেই নেতাকেই দলে ফিরিয়ে নিচ্ছে। এটা নাটক ছাড়া আর কিছু নয়।” এদিন বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে অনুব্রত মণ্ডল দুর্নীতি নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন দলীয় কর্মীদের। অনুব্রত মণ্ডল পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন, আবাস যোজনায় যদি এমন কেউ সুযোগ পায়, যার বাড়ি রয়েছে তাহলে যে সুবিধা দেবে তাকে জেল খাটানো হবে। এনআরসি প্রসঙ্গেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুর তাঁর গলায়। তিনি এদিন জানিয়েছেন, “আপনারা তৃণমূলের সঙ্গে থাকুন, মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে থাকুন। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি পশ্চিমবাংলা এনআরসি চালু হবে না।” এদিনের বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বীরভূমের ছটি পঞ্চায়েতের 66 টি বুথে তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে আগামী দিনের দলীয় কাজকর্মের রূপরেখা ঠিক করা হয়। এই সভায় অনুব্রত মণ্ডল ছাড়াও ছিলেন জেলার দুই সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ ও মলয় মুখোপাধ্যায়, মন্ত্রী আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়, সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, ব্লক সভাপতি তাপস সিংহ সহ তৃণমূল অন্য নেতৃত্ব। সমগ্র বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, লোকসভা ভোটে বিজেপির কাছে পিছিয়ে পড়ে তৃণমূল রীতিমত কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে 2021এর বিধানসভা ভোট মাথায় রেখে তৃণমূল তাঁর ঘর গোছাতে চাইছে। আর সেই লক্ষ্যেই তাঁরা বহিস্কৃত নেতাকেও ঘরে ফেরাতে কুণ্ঠাবোধ করছে না। যদিও এই বিষয়ে বিরোধী দলের বক্তব্য, সম্পূর্ণ বিষয়টি তৃণমূলের নাটক ছাড়া আর কিছুই না। তবে আপাতত পশ্চিমবঙ্গের সামনে একের পর এক নির্বাচন। তাই পশ্চিমবঙ্গের ভোটের আবহাওয়ার দিকেই এখন নজর রয়েছে সমস্ত রাজনৈতিক মহলের। আপনার মতামত জানান -