এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > ভাঙড়ে জমিরক্ষা কমিটির সাফল্যই অলীকের গ্রেফতারের কারণ, জল্পনা তুঙ্গে

ভাঙড়ে জমিরক্ষা কমিটির সাফল্যই অলীকের গ্রেফতারের কারণ, জল্পনা তুঙ্গে

সম্প্রতি ভাঙরে জমি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত মোস্ট ওয়ান্টেট নেতা অলীক চক্রবর্তী গ্রেফতার হল। জানা যাচ্ছে দু বছর তাঁর জন্য চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ।  সেই ২০১৬ সালে যখন ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রীড বিরোধীতা নিয়ে হিংসা চরমে পৌছেছিলো, সেইসময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে আন্দোলনকারীদের তখন থেকেই তাকে খুঁজছিলো পুলিশ। আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী শর্মিষ্ঠা চৌধুরীকে বাগে আনা সহজ হলেও খোঁজ মিলছিলো না অলীকের। তবে গোপনসূত্রে নজর রাখছিল পুলিশ সবসময় তাঁর কার্যকলাপে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের কারণে অতিরিক্ত চাপ এসে পড়েছিলো তাঁর কাঁধে। অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। চিকিৎসার জন্য হায়দ্রাবাদ বা ভুবনেশ্বর যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। সেই মত খবর পেয়ে বারুইপুর পুলিশের স্পেশাল অপারেশান টিম এবং কাশীপুর থানার পুলিশ দু দলে ভাগ হয়ে তাঁর অনুসন্ধান চালায় মোবাইল ট্রেস করে সহজেই ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ হাসপাতালের সামনে থেকে পাকরাও করে তাকে। সে আত্মগোপন করে ছিল। কিন্তু তার আগে তো বহু গুরুত্বপূর্ণ সভাতে তাকে প্রকাশ্যে দেখা গেছিলো তবে কেন পুলিশ তখন তাকে গ্রেফতার করেনি। স্বাভাবিকভাবেই পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।

আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

ভাঙড় আন্দোলনের নেতা অলীকবাবু নাকি তৃণমূল বিরোধীদের মদত দিচ্ছিলেন পঞ্চায়েত ভোটের আগে। সেটা নাকি টের পেয়েছিলো পুলিশ প্রশাসন। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহেই অলীক-গ্রেফতার মিশনে্ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করতে দেখা যায় পুলিশকে। কিন্তু তখন সে প্রচেষ্টা সফল হয়নি। তারপর পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যায়,ভাঙড়ে  জমি রক্ষা কমিটি পাঁচটি পঞ্চায়েত আসনে জিতেছে। তারপর থেকেই পুলিশের উপর শাসকদলের তরফ থেকে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করা হয় অলীকবাবুকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য। ক্ষোভও প্রকাশ করা হয় এতোদিনেও কেন জমি আন্দোলনের মূল কান্ডারীকে ধরতে পারা গেলো না তাই নিয়ে। অলীক এতোটাই কৌশলী ছিলেন যে শাসকদলের সমস্ত চালকেই উল্টে তাঁদের দিকে ঘুরিয়েছিলেন। মধ্যে ভাঙরের তৃণমূলের দাপুটে নেতা আরাবুলও গ্রেফতার হন তাঁর তৈরি চালে পা রেখে। শাসকদল চাপে পড়ে আরাবুলকে গ্রেফতারের ফতোয়াও জারি করেছিলেন। অলীক দাপটে নাজেহাল হয়ে গেছিলো রাজ্যসরকার। তাই পরিকল্পনা মাফিক ছক কষে এবার গ্রেফতার করা হল অলীক চক্রবর্তীকে। এমনটাই জানা যাচ্ছে রাজনৈতিক সূত্রের খবর থেকে।

আরো জানা যাচ্ছে, বর্তমানে অলীককে রাখা হয়েছে ভুবনেশ্বরের চন্দ্রশেখরপুর থানায়। ট্রানজিট রিমান্ডে তাঁকে রাজ্যে আনার প্রস্তুতি চলছিল। তাকে এদিন রাজ্যে আনতে সক্ষম হয়েছেন  এ রাজ্যে পুলিশ প্রশাসন এমনটাই জানা যাচ্ছে। এদিকে আবার প্রিয় নেতার গ্রেফতারির খবর আগুনে হাওয়া লাগার মতো ছড়িয়েছে ভাঙড়ে। প্রতিবাদ আন্দোলন জুড়েছে অনুগামীরা গাছের গুড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ করে। অলীক বাবুকে মুক্ত না করলে আন্দোলন থামাবে না বলেই দাবী জানিয়েছেন জমি রক্ষা কমিটির সদস্যরা।

মানুষ আশা করেছিলো পঞ্চায়েত পর্ব মিটে গেলো স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারবে তাঁরা। রাজনৈতিক চাপানউতোর একটু হলেও কমবে। তাদের সেই ভাবনা ভরসা জুগিয়েছে মহেশতলায় সন্ত্রাসবিহীন ভাবে সম্পন্ন উপনির্বাচন প্রক্রিয়া। কিন্তু তাঁদের সেই ভাবনা এক নিমেষেই ছাই হয়ে গেলো অলীক চক্রবর্তী গ্রেফতার নিয়ে অগ্নিগর্ভ রাজনৈতিক পরিস্থিতির সামনে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!