পে-কমিশনের রিপোর্ট তৈরী, তবুও কেন জমা পড়ছে না নবান্নে? সামনে এল বিস্ফোরক অভিযোগ কলকাতা বিশেষ খবর রাজ্য August 20, 2019 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া এক্সক্লুসিভ – ডিএ ও পে-কমিশন নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ক্ষোভ আকাশ ছুঁয়েছে। তার প্রমান লোকসভা নির্বাচনেই দিয়েছেন তাঁরা – রাজ্যের ৪২ টি আসনের মধ্যে বিরোধীদের কাছে ৪১ টি আসনেই ‘পোস্টাল ব্যালটের’ ফলে হারতে হয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে। আর এরপরেই সরকারি কর্মচারীদের আশা ছিল, মুখ্যমন্ত্রী এবার অন্তত ডিএ ও পে-কমিশন নিয়ে সদর্থক পদক্ষেপ নেবেন। কিন্তু কোথায় কি? কলকাতা হাইকোর্ট বা স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুন্যাল (স্যাট) ডিএ রাজ্য সরকারকে স্পষ্ট নির্দেশিকা দেওয়ার পরেও মুখ্যমন্ত্রীর সেই একই কথা – টাকা নেই! যেন রাজ্যের টাকা না থাকার জন্য সরকারি কর্মচারীদের বেতনই একমাত্র দায়ী! অন্যদিকে, পে-কমিশন নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন, পে-কমিশন রিপোর্ট জমা না দিলে তাঁর কি করার আছে! এখানেও যেন, এই রিপোর্ট জমা দিচ্ছে না পে-কমিশন তাই মুখ্যমন্ত্রী অসহায়! এমনটাই ‘তির্যক’ অভিযোগ উঠছে সরকারি কর্মচারী মহলে! এদিকে গতকাল, হাওড়ার শরৎ সদন একটি প্রশাসনিক বৈঠকে রাজ্যের সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকদের কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, পলিটিক্যালি কেউ রাস্তায় বসে পড়ছে। এদের সামলানো আমার কাজ নয়। এসব করতে গিয়ে জনগণের কাজটা হচ্ছে না। অনশনের নামে নানান দাবি। শুধু তাদের কাজ হবে, খালি দাও, দাও, দাও। কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, 2 টাকা কেজি দরে চালের টাকা বন্ধ করে দাও। শুধু কয়েকটা লোকের টাকা বাড়িয়ে দাও, সব সময় দাও, দাও! এত টাকা আসবে কোথা থেকে! আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তিনি আরও বলেন, ত্রিপুরা এবং বাংলা একমাত্র পেনশন দিত। ত্রিপুরা পেনশন বন্ধ করলেও আমরা করিনি। এখন শিক্ষকরাও ১ তারিখে বেতন পান। এক বছর আগে প্যারাটিচারদের মাইনে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র সরকার সর্বশিক্ষা মিশনের টাকা না দেওয়া সত্ত্বেও আমরা করছি। এসব কথায় কথায় আন্দোলন আর ধর্মঘট আর মানা যাবে না। আর এইসবের পরিপ্রেক্ষিতে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কার্যত একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটালেন সরকারি কর্মচারী পরিষদের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশীষ শীল। দেবাশীষবাবু বলেন, আগে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী অর্ধসত্য বলতেন আর এখন তো পুরোপুরি অসত্য বলছেন! ত্রিপুরাতে পেনশন বন্ধের যে কথা তিনি জানাচ্ছেন তা পুরোপুরি অসত্য। কেন্দ্রীয় সরকারের মতোই ২০১৮ সালের ১ লা অক্টোবর থেকে ত্রিপুরাতে নতুন পেনশন স্কেল চালু হয়েছে – ফলে তার আগে যাঁরা অবসর নিয়েছেন তাঁরা পুরোনো হারেই পেনশন পাচ্ছেন। আর তাছাড়া নতুন স্কেলে যে বেনিফিট পাওয়ার কথা তাতো সবটাই পাওয়া যায়। হ্যাঁ, তা অবশ্যই পুরোনো স্কেলের মত সাথে সাথে নয়, কয়েক বছর বাদে ডিভিডেন্ট হিসাবে। কিন্তু, পাওয়া তো যায়! মুখ্যমন্ত্রী যেরকম দাবি করেছেন – ত্রিপুরাতে পেনশন বন্ধ হয়ে গেছে, তা তো পুরোপুরি সত্যের অপলাপ! এরপরেই আরও বিস্ফোরকভাবে দেবাশীষবাবু বলেন, অত্যন্ত দায়িত্ব সহকারে বলছি, পে-কমিশনের সমস্ত রিপোর্ট তৈরী আছে। মুখ্যমন্ত্রী সকালে নির্দেশ দিলে সন্ধেতেই সেই রিপোর্ট নবান্নে জমা পরে যাবে! কিন্তু শুধুমাত্র নবান্নের নির্দেশেই সেই রিপোর্ট পে-কমিশন জমা করতে পারছে না। পে-কমিশনের ‘ঘাড়ে বন্দুক রেখে’ সরকারি কর্মচারীদের রাজ্য সরকার দিনের পর দিন বঞ্চিত করে চলেছে! আমাদের প্রশ্ন ছিল দেবাশীষবাবুকে – কিসের ভিত্তিতে এত মারাত্মক অভিযোগ করছেন তিনি? এই তথ্যের সূত্র কি? বিজেপির অন্যতম শীর্ষনেতা মুকুল রায়ের উপস্থিতিতে সংগঠনে নতুন সদস্যদের যোগদান করাচ্ছেন সরকারি কর্মচারী পরিষদের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশীষ শীল। জবাবে দেবাশীষবাবু জানান, বিশেষ কারণে এই মুহূর্তে আমি এই তথ্যের সূত্র আপনাদের জানাতে পারছি না। কিন্তু আবারো বলছি, এই কথা আমি অত্যন্ত দায়িত্ত্বের সঙ্গেই জানাচ্ছি। তাছাড়া ভেবে দেখুন, এই পে-কমিশনকে নিযুক্ত করেছে রাজ্য সরকার। পে-কমিশনের ঘাড়ে কটা মাথা আছে, যে নবান্ন যদি স্পষ্ট নির্দেশ দেয় এই নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে, তাহলে তারা না দিয়ে থাকবে! তাছাড়া ৪ বছর পার হতে চলল, এখনও পে-কমিশন রিপোর্ট চালু হল না! মুখ্যমন্ত্রীর যদি সত্যিই সদিচ্ছা থাকত, তাহলে কি তা ছমাসেই প্রকাশ করা যেত না? এরকম তো নয় যে অতীতে ছমাসের মধ্যে পে-কমিশন চালু হওয়ার কোনো নজির নেই! সেই কাজ বর্তমান পে-কমিশন করতে না পারলে, অভিরূপবাবুদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন রাজ্য সরকার? দেবাশীষবাবুর আরও বক্তব্য, আমরা পে-কমিশনের চেয়ারম্যান অভিরূপ সরকারের পদত্যাগ চেয়ে দু-দুবার কুশপুত্তলিকা দাহ করেছি। শেষবার, আমরা এর সাথে ডেপুটেশনও দিই। তখনই পে-কমিশনের তরফে জানানো হয়েছিল, রিপোর্ট তৈরী জুলাইয়ের শেষেই জমা পড়বে। কিন্তু, এখনও তা জমা পড়ল না – তার মানে কি দাঁড়ায়? আসলে, পে-কমিশনের রিপোর্টে এমন কিছু কর্মচারী বিরোধী ‘সাজেশন’ জমা পড়তে চলেছে, যা সরকারি কর্মচারীদের বিক্ষোভ দাবানলের মত বিস্তৃত করে দেবে। তাই কি নবান্নের নির্দেশে, রিপোর্ট তৈরী করেও জমা দিতে পারছে না পে-কমিশন? আপনার মতামত জানান -