এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > 14 ঘন্টার তল্লাশি শেষ, পদত্যাগের হুঁশিয়ারি সুজিতের! সোচ্চার বিজেপি!

14 ঘন্টার তল্লাশি শেষ, পদত্যাগের হুঁশিয়ারি সুজিতের! সোচ্চার বিজেপি!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-শুক্রবার সকাল থেকেই সকলের নজর ছিল দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুর বাড়ির দিকে। তার দুটি বাড়িতে সাত সকালে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের পৌঁছে যাওয়া এবং গোটা এলাকা কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে মুড়ে দেওয়ার ঘটনায় প্রবল আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল তৃণমূলের মধ্যেও। তাহলে কি আজকেই পৌর নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় সুজিত বসুকে নিয়ে বড়সড় স্টেপ নিতে পারে কেন্দ্রীয় সংস্থা! তা নিয়ে নানা মহলে তৈরি হয়েছিল প্রশ্ন। রাত যত বাড়তে শুরু করে, ততই আতঙ্কের প্রহরও বাড়তে শুরু করে সকলের মধ্যে। অবশেষে 14 ঘণ্টা পর ম্যারাথন তল্লাশি শেষ করে সেই দমকল মন্ত্রীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে এল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, তার মোবাইল এবং বেশ কিছু নথি নিয়ে গিয়েছে ইডি। আর এজেন্সি তার বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পরেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রীতিমত পদত্যাগের হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। কিন্তু হঠাৎ করে তিনি কেন এই পদত্যাগের কথা বললেন? কি এমন হলো এই হেভিওয়েট মন্ত্রীর?

প্রসঙ্গত, এদিন ইডি আধিকারিকরা প্রায় 14 ঘণ্টা তল্লাশি শেষে সুজিত বসুর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। আর তারপরেই গৃহ দেবতাকে প্রণাম করে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন রাজ্যের এই হেভিওয়েট মন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমি এক পয়সাও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নই। যদি কেউ বলতে পারে যে, সুজিত বসু কাজের বিনিময়ে টাকা নিয়েছে, তাহলে আমি এখনই আমার রেজিগনেশন পাঠিয়ে দেব।” অনেকে বলছেন, তৃণমূলের এক স্বনামধন্য যুবরাজ, যার এত সম্পত্তি, তিনিও মুখে এরকম অনেক বড় বড় কথা বলেছেন। কিন্তু তার সময়ও ধীরে ধীরে ঘনিয়ে আসছে এবং রাজ্যে যত দুর্নীতি হচ্ছে, তার প্রধান মাথা তিনি বলেই দাবি করছে বিরোধীরা। স্বাভাবিকভাবেই তার বক্তব্যকেই যখন রাজ্যের মানুষ বিশ্বাস করে না, তখন রাজ্যের এই মন্ত্রী যতই রেজিগনেশন পাঠিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিন না কেন, কোনো না কোনো তথ্য তো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে ছিলই। যার কারণে তারা এত সময় ধরে মন্ত্রীর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে। ফলে এখন দমকল মন্ত্রীর এই বড় বড় বক্তব্য রাজ্যের মানুষের মনে বাড়তি কোনো বিশ্বাস যোগাবে না বলেই দাবি সমালোচকদের।

ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, এখন রেজিগনেশন দেওয়ার কথা বলে সিমপ্যাথি আদায় করার চেষ্টা করছেন রাজ্যের এই মন্ত্রী। কিন্তু আজ না হোক কাল তাকে তো পদত্যাগ করতেই হবে। যে দুর্নীতি হয়েছে এবং যেভাবে তিনি নিজের নিকট আত্মীয়দের চাকরি দিয়েছেন, তাতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এমনি এমনি তো তার বাড়িতে যায়নি। তাই এত বড় বড় কথা বলে লাভ নেই। যারা চুরি করেছেন, যারা প্রকৃত চাকরি প্রাপকদের বঞ্চিত করেছেন, তাদের শাস্তি পাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, যুবরাজকে দেখে ভালোই নাটক শিখেছেন তার দলের অন্যান্য নেতা মন্ত্রীরা। তাই দীর্ঘ ম্যারাথন তল্লাশির পর যখন ইডি বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছে, তখন বড় বড় কথা শোনা যাচ্ছে সুজিত বসুর গলায়। এইরকম কথাই এক সময় পার্থ চ্যাটার্জি, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মুখ থেকেও শোনা গিয়েছিল। ফলে এখন তাদের অবস্থা কি, সেটা সকলেই পরিষ্কার চোখে দেখতে পাচ্ছেন। তাই তৃণমূল নেতাদের ওপর রাজ্যের মানুষের আর ভরসা নেই। যতই পদত্যাগ করার হুঁশিয়ারি মন্ত্রী সাহেব দিন না কেন, যে তদন্ত চলছে, সেই তদন্ত যতক্ষণ না শেষ হচ্ছে এবং শেষ দিন পর্যন্ত স্ক্যানারে না থেকে যদি স্বচ্ছতার প্রমাণ দিতে পারেন মন্ত্রী সাহেব, তাহলেই বোঝা যাবে, তিনি সত্যিই সততার প্রতি মূর্তি। তাই এখন তার এই পদত্যাগের হুঁশিয়ারি জনমানসে বিন্দুমাত্র প্রভাব ফেলবে না। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!