এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > মুখে শুধুই বাতেলা, সুজিতের বাড়িতে ইডি যেতেই কি চরম ভয়ে ববি? কটাক্ষ বিজেপির!

মুখে শুধুই বাতেলা, সুজিতের বাড়িতে ইডি যেতেই কি চরম ভয়ে ববি? কটাক্ষ বিজেপির!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-এই রাজ্যে যেখানেই হাত দেওয়া যাচ্ছে, সেখানেই দুর্নীতির গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু তারপরেও সরকারের লজ্জা নেই। তারা আবার বড় বড় গলায় দাবি করছে, তাদের মত সৎ নাকি কেউ নেই। কিন্তু তারা কতটা সৎ, তা একের পর এক নেতা, মন্ত্রীদের গ্রেপ্তার হওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন হেভিওয়েটদের বাড়িতে কেন্দ্রীয় সংস্থার পৌঁছে যাওয়াতেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার দিনভর খবরের শিরোনামে ছিলেন রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু এবং তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়। তাদের দুজনের বাড়িতে সকাল থেকেই ইডির তল্লাশি শুরু হয়েছিল‌। আর এই বিষয় নিয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে যেমন প্রতিক্রিয়া আশা করা হয়েছিল, ঠিক তেমনই প্রতিক্রিয়া এসেছে। পৌর নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় এই দুই হেভিওয়েটের বাড়িতে যখন ইডি তল্লাশি করছে, তখন তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, প্রতিহিংসামূলক আচরণ।

আবার এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা কলকাতা পৌরসভার মেয়র বড় বড় গলায় দাবি করেছেন যে, লোকসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, ততই নাকি এই সমস্ত কান্ড ঘটাবে বিজেপি। কেন্দ্রীয় সরকার নাকি পার্টি চালাচ্ছে। কিন্তু কিছুদিন আগেই তো এই ববি বাবুর বাড়িতেও দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এমনি এমনি তো তারা সেখানে যায়নি। নিশ্চয়ই তার বিরুদ্ধে কোনো তথ্য আছে বলেই সেখানে গিয়েছিল। তাহলে কি পুর নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় সতীর্থের বাড়িতে টানা ইডি তল্লাশি হতেই আবার শিওড়ে বিপদ আঁচ করতে শুরু করেছেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী? সেই কারণেই কি এখন গোটা বিষয়টিকে ঘুরিয়ে দিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করে ময়দানে টিকে থাকতে চাইছেন তিনি, তা নিয়ে নানা মহলে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।

প্রসঙ্গত, এদিন সুজিত বসু এবং তাপস রায়ের বাড়িতে তল্লাশি হতেই ফিরহাদ হাকিমের প্রতিক্রিয়া জানতে চান সাংবাদিকরা। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে যেমনটা আশা করা হয়েছিল, ঠিক তেমনটাই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। তার বক্তব্য যে, লোকসভা নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসবে, ততই এই সমস্ত কান্ড কারখানা ঘটানো হবে। তার বাড়িতেও এই সমস্ত কাজ করা হয়েছে। তাই এখন নির্বাচনের আগে এই সব করাবে বিজেপি। কেন্দ্রীয় সরকার পার্টি চালাচ্ছে। একাংশের মতে, এখন তো অনেক বড় বড় বলছেন পুর মন্ত্রী। কিন্তু যে নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে, সেখানে তো সব থেকে বড় দায় বর্তায় তার ওপরেই। কারণ তিনি এই দপ্তরের মন্ত্রী। ফলে ফিনিশিং টাচ যে তাকে দিয়েই হবে, সেটা কি ধরে ফেলেছেন ববিবাবু? তাই কি এখন ভয়ে বিজেপিকে অ্যাটাক করার পথ বাছতে হলো তাকে? অনেকে বলছেন, কেন্দ্রীয় সংস্থা যখন ময়দানে নেমেছে, তখন কিছু একটা এবার পৌর নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় হতে চলেছে। হয়ত আজকে গ্রেপ্তার হবে না বা সেরকম কোনো পদক্ষেপ তারা নেবে না। কিন্তু যে তথ্য প্রমান জোগাড় হচ্ছে, তার ভিত্তিতে বড় কোনো রাঘববোয়াল অদূর ভবিষ্যতে জালে ধরা পড়তে পারে। তাই ভয় এখন শাসক দলের ওপর থেকে নিচুতলা পর্যন্ত আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে পড়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, লজ্জা লাগে না ফিরহাদ হাকিমের এত বড় বড় কথা বলতে? একের পর এক মন্ত্রীরা জেলে যাচ্ছে, তারপরেও মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় ববি হাকিম বড় বড় কথা বলে যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি যখন মন্ত্রী, তখন পৌর নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে। তাই তাকে এর জবাব দিতেই হবে। টাকার বিনিময়ে যে চাকরি বিক্রি করা হয়েছে, তাতে দুর্নীতিকারীদের শাস্তি পেতেই হবে। তাই নিজের কেলেঙ্কারি ঢাকতে এখন বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলে আসর মাতাতে চাইছেন। তবে এসব করে কিছু হবে না। দোষ করলে জেলযাত্রা নিশ্চিত বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূলের একদম ওপরতলার মাথারা খুব ভালো করে জানেন যে, গোটা দল দুর্নীতিতে ফেঁসে গিয়েছে। কেউ শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতি, কেউ রেশন দুর্নীতি, আবার কেউ বা পৌর নিয়োগ দুর্নীতিতে। তাই ক্ষমতায় থেকে যারা সেই ক্ষমতাকে আস্বাদ করেছেন, যারা মানুষের টাকা লুট করেছেন, তাদেরকে ছেড়ে কথা বলবে না কেন্দ্রীয় এজেন্সি। কিছুদিন আগেই এই ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে দীর্ঘ সময় ধরে তল্লাশি চলেছিল। তারপর অনেক বড় বড় কথা মন্ত্রী সাহেবের গলায় শোনা গিয়েছিল। এখন আবার নিজের দলের কাছে ভালো সাজতে, সাধু হতে তিনি কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে বড় বড় কথা বলছেন। কারণ মন্ত্রী সাহেব বুঝতে পেরেছেন, পৌর নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে এখন একেবারে তথ্য প্রমাণ সহকারেই ময়দানে নেমেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তাই সুজিত বসুর বাড়িতে দীর্ঘ সময় তল্লাশি তার ক্ষেত্রেও ভবিষ্যতে অশনি মেঘ ডেকে আনলেও আনতে পারে। তাই এত বড় বড় বাতেলা দিয়ে দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন বিরোধী দল থেকে শুরু করে রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!