এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > উপনির্বাচনে কেন ভরাডুবি? গ্রাউন্ড রিয়েলিটি চেকে ৩ হেভিওয়েটকে ৩ কেন্দ্রে পাঠাচ্ছে বিজেপি

উপনির্বাচনে কেন ভরাডুবি? গ্রাউন্ড রিয়েলিটি চেকে ৩ হেভিওয়েটকে ৩ কেন্দ্রে পাঠাচ্ছে বিজেপি


লোকসভা নির্বাচনে যে ভারতীয় জনতা পার্টি পশ্চিমবঙ্গে 18 টি আসনে জয়ী হয়ে 2021 সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে নিশ্চিত সাফল্যের স্বপ্ন দেখছিল, গত বৃহস্পতিবার উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পরই বিজেপির 2021 সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে ভালো ফল হওয়ার আশা অনেকটাই প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে‌। মূলত লোকসভা নির্বাচনে যে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে 57 হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী, সেই কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে দুই হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত হয়েছে বিজেপি প্রার্থী।

আবার একই অবস্থা খড়গপুর বিধানসভা কেন্দ্রে। সেখানেও লোকসভা ভোটে দলীয় প্রার্থী 45 হাজারের বেশি ভোটে এগিয়েছিল। কিন্তু বিধানসভা উপনির্বাচনে সেই আসনে সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিতভাবে কুড়ি হাজারেরও বেশি ভোটে পরাজয় ঘটে বিজেপি প্রার্থীর। করিমপুর কেন্দ্রে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে অনেকটা পিছিয়ে থাকলেও রাজ্যে 18 টি লোকসভা আসনে জয়যুক্ত হওয়ার পরে আত্মবিশ্বাসী ভারতীয় জনতা পার্টির মনে করেছিল, এই আসনেও জয় যুক্ত হতে পারে পদ্মফুল শিবিরের প্রার্থী।

তবে এখানেও সফলতার মুখ দেখতে পারেনি ভারতীয় জনতা পার্টি। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে এতটা সাফল্য পাওয়ার পরে হঠাৎ করে কয়েক মাসের মধ্যে এমন কি ঘটল যে ভারতীয় জনতা পার্টির জনপ্রিয়তা একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকল! এর প্রকৃত বিশ্লেষণ করার জন্য এবার উদ্যোগ নিতে দেখা গেল রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে। জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই পরাজিত তিনটি কেন্দ্রে দলের তিনজন সাধারণ সম্পাদককে পাঠিয়ে পরাজয়ের চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে চাইছে গেরুয়া শিবির।

জানা যাচ্ছে, সঞ্জয় সিংকে করিমপুরে পাঠানো হবে। রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় কালিয়াগঞ্জে এবং খড়গপুর সদর কেন্দ্রে পরাজয় পর্যালোচনা করবেন সায়ন্তন বসু। শুধু দলীয় কর্মীদের সঙ্গেই নয়, বিধানসভা উপনির্বাচনে দলের হারের প্রকৃত কারণ অন্বেষণ করার জন্য বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, সকলের সঙ্গে আলোচনা করবেন ওই প্রতিনিধিরা। এলাকায় আলোচনার মাধ্যমে যে সমস্ত দলীয় গাফিলতি উঠে আসবে, সেই রিপোর্ট সাত দিনের মধ্যেই রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কাছে জমা দিতে হবে বলে সাধারণ সম্পাদকদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য বিজেপির তরফ থেকে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রাথমিকভাবে দলের পরাজয়ের কারণ অন্বেষণ করতে গিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির অনেক নেতারাই মনে করছেন, এনআরসির স্বপক্ষে পদ্মফুল শিবির যে প্রচার করেছিল, তা ভালোভাবে নিতে পারেনি নির্বাচকমণ্ডলী। আর জনগণের সেই এনআরসি অসন্তোষের প্রতিফলন ঘটেছে ইভিএমে। কিন্তু একইভাবে বিধানসভা উপনির্বাচনের ক্ষেত্রে শাসকদলের কারচুপিকেও একটা বড় কারণ বলে মনে করছে ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্ব। এই ক্ষেত্রে তাদের যুক্তি, উপনির্বাচনের প্রশাসনিক দিকগুলো যেহেতু সিংহভাগ রাজ্য প্রশাসন দেখাশুনা করে, তাই তৃণমূল কংগ্রেসকে যে জেতানোর ক্ষেত্রে তারা একটা বড় কারচুপি করেছে, এমন অভিযোগ করেছেন ভারতীয় জনতা পার্টির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা।

তবে রাহুলবাবু অবশ্য এনআরসি নিয়ে মানুষের অসন্তোষের কথাটা একমত স্বীকার করে নিয়েছেন। এছাড়াও দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফ থেকে উঠে এসেছে উপনির্বাচনের প্রার্থী চয়নের ক্ষেত্রে একটা বড় মাপের গাফিলতি হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ নেতৃত্বের। তাই নানাবিধ কারণ নিয়ে ইতিমধ্যেই সরগরম হয়ে উঠেছে বিজেপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতি‌। তার মধ্যে আবার আগামী 7 তারিখে কলকাতায় আসছেন ভারতীয় জনতা পার্টির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি কলকাতায় এসে দলের রাজ্য নেতাদের সঙ্গে দেখা করবেন অমিতজি বলে খবর।

আর রাজ্য নেতাদের সঙ্গে ওই দেখাতে তিন বিধানসভা উপনির্বাচনে পার্টির পরাজয় যে আলোচ্যসূচিতে থাকবে, তা বলাই বাহুল্য। সেই কারণে ইতিমধ্যেই দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে সুব্রত চট্টোপাধ্যায়, মুকুল রায় থেকে শুরু করে রাহুল সিনহা, দলের পরাজয়ের কারণ নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ করতে শুরু করে দিয়েছেন। এই নিয়ে রাজ্য কমিটির একটি বৈঠক হয়েছে গত পরশুদিন। আর তারপরেই রাজ্যের সাধারণ সম্পাদকদেরকে পরাজিত বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি বলে খবর।

এদিন এই বিষয়ে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমরা এদিন হারের সম্ভাব্য কারণগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। রাজ্য নেতাদের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে।” পাশাপাশি 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনে উপনির্বাচনের ফলাফল ফ্যাক্টর হবে না বলেও মনে করছে দিলীপবাবু। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রকৃত অর্থেই যদি পরাজয়ের কারণ অন্বেষণ করে 21 এর আগে ত্রুটিগুলোকে দূরীভূত করতে পারে বিজেপি, তবে সেটা দলের পক্ষে হিতকরই হবে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!