এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলা – একসাথে তিন বলিষ্ঠ পদক্ষেপ, জানুন বিস্তারিত

রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলা – একসাথে তিন বলিষ্ঠ পদক্ষেপ, জানুন বিস্তারিত

দীর্ঘ ১৭ মাসের আইনি লড়াইয়ের পর বড় জয় পেয়েছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে – ডিএ সরকারি কর্মচারীদের অধিকারের মধ্যে পড়ে, তা কোনোমতেই কোনো দয়ার দান না। স্বাভাবিকভাবেই এই রায়ের পরে নৈতিক জয় পেয়ে – খুশির হাওয়া রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে। কিন্তু এই মামলার তিনটি গুরুত্ত্বপূর্ন দিক নিয়ে আপাতত কোনো ফয়সালা হয় নি – কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মত তা হবে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুন্যাল বা ‘স্যাট’-এ।

রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তিনটি বিষয় স্যাটে বিচার্য হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা। এক – ডিএর হার কি হবে, যেহেতু রাজ্যের নিজস্ব কোনো নিয়ম নেই এই নিয়ে – তাই তা কি কেন্দ্রের প্রাইস ইনডেক্স মেনেই হবে না কি রাজ্য নতুন কোনো ফর্মুলা সামনে নিয়ে আসবে? দুই – কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা নির্ধারিত নিয়ম মেনে বছরে দুবার করে ডিএ পান, রাজ্যের ক্ষেত্রে এরকম কোনো স্পষ্ট নির্দেশিকা নেই। এই বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিন – কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা ২০১৬ সালের ১ লা জানুয়ারী থেকে কেন্দ্রীয়হারে বর্ধিত ডিএ পাচ্ছেন, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে সেই বিপুল ‘বাকি থাকা’ ডিএ প্রসঙ্গে রাজ্য সরকার কি ভাবছে, সেই টাকা পাওয়ার আদৌ কোনো সম্ভবনা আছে কি?

একদিকে, যখন এই নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জল্পনার অন্ত নেই – অন্যদিকে, তখন প্রায় একসাথেই তিনটি গুরুত্ত্বপূর্ন পদক্ষেপ মামলাকারীদের তরফে হয়ে গেল। হাইকোর্টে এই ডিএ মামলা টেনে নিয়ে যাওয়া সরকারি কর্মচারী সংগঠন কনফেডারেশন ডিএ মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে ‘ক্যাভিয়েট’ দাখিল করে রাখলেন। কলকাতা হাইকোর্টের ডিএ মামলার রায় সামনে আসার পর রাজ্য সরকার এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কোনো ইঙ্গিত দেয় নি, তবুও কোনো ঝুঁকি নিতে রাজি নন কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়। তিনি জানিয়ে রাখলেন, এখন কেউ ডিএ মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গেলে সেই মামলার রায়দান তাঁদের বক্তব্য না শুনে কিছুতেই হতে পারবে না।

আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

দ্বিতীয়ত, হাইকোর্টের রায়ে ডিএর হার কি হবে বা বছরে কতবার করে দেওয়া হবে তা নিয়ে ফয়সালা ‘স্যাটে’ হবে – আর তার জন্য প্রয়োজনীয় নথি জমা দিয়ে আজ কলকাতা হাইকোর্টে তা মেনশন করা হল। যেহেতু বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী আপনা-আপনিই এই মামলা কলকাতা হাইকোর্ট থেকে স্যাটে স্থানান্তরিত হবে না – তাই আইন অনুযায়ী ‘টেকনিক্যালি’ এই ‘মেনশন’ অংশটি অত্যন্ত গুরুত্ত্বপূর্ন। বর্তমানে এই ‘মেনশনের’ কাজ সপ্তাহের সবদিন হয় না – নির্দিষ্ট কিছু দিনেই তা হওয়া সম্ভব, আর তাই কনফেডারেশনের শীর্ষনেতারা নিজেদের আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে সকাল থেকেই কলকাতা হাইকোর্টে পড়ে থেকে এই গুরুত্ত্বপূর্ন পদক্ষেপটি সম্পন্ন করলেন। এই প্রসঙ্গে কনফেডারেশনের অন্যতম শীর্ষনেতা সুবীর সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আজ আদালতে ‘অ্যাপ্লিকেশন’ করা হয়েছে, তা আদালতের রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে স্যাটের চেয়ারম্যানের কাছে যাবে। আশা করা যাচ্ছে শীঘ্রই স্যাটে এর ডেট পাওয়া যাবে – ফলে মনে করা হচ্ছে, আগামী সপ্তাহেই এই মামলার শুনানি স্যাটে শুরু হয়ে যেতে পারে।

অন্যদিকে, ডিএ নিয়ে ইতিমধ্যেই একটি মামলা স্যাটে দায়ের করে রেখেছেন সরকারি কর্মচারী পরিষদের আহ্বায়ক দেবাশিস শীল। স্যাট তখন দেবাশিসবাবুকে জানিয়েছিল এই নিয়ে একটি মামলা কলকাতা হাইকোর্টে বিচারাধীন, সেখানে কি রায় হয় – তার উপর নির্ভর করে তাঁর দায়ের করা মামলা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে স্যাট। বর্তমানে, কলকাতা হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে, তার সঙ্গে দেবাশিসবাবুর করা মামলার গতিপ্রকৃতি বহুলাংশে এক – সুতরাং তিনি চান এই দুই মামলার শুনানি একত্রে হোক। কিন্তু নিয়মানুযায়ী, তার জন্য সংশ্লিষ্ট সবপক্ষকে ‘নোটিশ’ দিতে হবে। রাজ্য সরকারের আধিকারিক থেকে শুরু করে যেখানে যেখানে নোটিশ পাঠানোর তা আজ দেবাশিসবাবু সম্পন্ন করছেন এবং এই নিয়ে আগামী সোমবার তিনি ‘স্যাটে’ আবেদন জানাতে চলেছেন।

ফলে সব মিলিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ডিএ মামলা নিয়ে ঐতিহাসিক রায়দানের পর – অত্যন্ত আশাবাদী রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। আর তাই, বকেয়া ডিএ নিয়ে এবং ভবিষ্যতে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে ও হারে ডিএ পেতে চেষ্টার কোনো কসুর রাখছেন না সরকারি কর্মচারীদের হয়ে আন্দোলন করা শীর্ষনেতারা। দল-মত নির্বিশেষে তাঁদের এখন একটাই লক্ষ্য – রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের স্বার্থ সুরক্ষিত করা। ফলে সবমিলিয়ে উৎসবের মরশুমের আগেই বেশ একটা উজ্জীবিতভাব রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!