এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > 40 কেন, 100 টা বিধায়ক নিয়ে নিন – আমি বুঝিয়ে দেব কত ধানে কত চাল, দাবি মমতার

40 কেন, 100 টা বিধায়ক নিয়ে নিন – আমি বুঝিয়ে দেব কত ধানে কত চাল, দাবি মমতার


লোকসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় 42 টি আসনের মধ্যে 42 টি আসনই দখলের স্লোগান দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বাস্তবে ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর তৃণমূল নেত্রীর সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। উল্টে গেরুয়া ঝড়ে এই রাজ্যে 2 টি থেকে বিজেপি তাদের আসন সংখ্যা 18 টি করে নিয়েছে। আর সারা বাংলায় বিজেপির এই বাড়বাড়ন্ত দেখেই এখন হতাশা এবং প্রবল আতঙ্ক গ্রাস করতে শুরু করেছে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ।

এদিকে ভোটের ফলাফল প্রকাশের পরই বিভিন্ন সময়ে উত্তর 24 পরগনা জেলা যেটি তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত ছিল, সেইখানে তৃণমূলের একাধিক নেতা, কাউন্সিলররা বিজেপিতে যোগদান করেছেন। এমনকি শাসকদলের অনেক দলীয় অফিস বিজেপি দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ তুলতে দেখা গিয়েছিল জেলার নেতাদের। আর এইরকম একটা পরিস্থিতিতে গতকাল ফল প্রকাশের পর প্রথম উত্তর 24 পরগনা নৈহাটি পৌরসভা ভবনের সামনে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

জানা গেছে, এদিন মুখ্যমন্ত্রী যখন ঘোষপাড়া রোড দিয়ে নৈহাটির দিকে যাচ্ছিলেন, সেই সময় রিলায়েন্স জুটমিলের ধারে তার কনভয়ের সামনে বিজেপি সমর্থকরা জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতে থাকে। আর এতেই রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়ে গাড়ি থেকে নেমে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কিরে পালাচ্ছিস কেন! সামনে আয়, বাংলায় বেঁচে আছিস আমাদের জন্য। ক্রিমিনাল সব!”

আর এতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। এরপর বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ নৈহাটিতে পৌঁছে সভাস্থল থেকে ফের বিজেপির বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানাতে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সূত্রের খবর, এদিনের এই সভাস্থলে উপস্থিত ছিলেন উত্তর 24 পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, ফিরহাদ হাকিম, বিধায়ক পার্থ ভৌমিক, নির্মল ঘোষ, তাপস রায়, মদন মিত্র সহ অন্যান্যরা।

সেইখানেই তিনি বলেন, “আমার গাড়ির সামনে এসে হামলা করতে এসেছিল। কত বড় সাহস! আমি চাইলে ওদের গ্রেপ্তার করতে পারতাম। কিন্তু যারা এসেছিল তাদের নাম আমি পুলিশকে দিয়েছি। বাংলা বাংলাই থাকবে। এটাকে গুজরাট করা যাবে না। পুলিশ যদি দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তবে আমি পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। বাংলায় কোনো ভেদাভেদ আমরা বরদাস্ত করব না।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে এদিনের সভা মঞ্চ থেকে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার হিড়িক প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি বলেন, “40 কেন, আপনারা একশোটা বিধায়ক নিয়ে নিন। কিচ্ছু হবে না। আমার দল আবর্জনা মুক্ত হবে। আমি বুঝিয়ে দেব কত ধানে কত চাল।”

সুর চড়ানোর লক্ষ্যেই তিনি এ দিন বলেছেন, ‘‘পরিবর্তনের পরে ২০১১ সালে বলেছিলাম, বদলা নয়, বদল চাই। রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজাতে বলেছিলাম। আমি মানবিক, তাই একটু বেশি করেছিলাম! এখন বলছি, বদলা নেব!’’ তবে মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, ‘‘সন্ত্রাসের বদলা নেব শান্তি ফিরিয়ে এনে, অত্যাচার বন্ধ করে।’’

সাথেই এদিন তিনি বলেন যে, ‘‘দীনেশ ত্রিবেদী হারেননি। আসনটা (ব্যারাকপুর) ওরা ভোট লুঠ করে দখল করেছে। আমরা পুনরুদ্ধার করব। আগামী বিধানসভায় বিজেপি একটা আসনও পাবে না, আমি চ্যালেঞ্জ করলাম! যদি আমি বেঁচে থাকি!’’

ব্লকে ব্লকে ছেলেদের জন্য তৈরি করতে বলেছেন, ‘জয় হিন্দ বাহিনী’ আর মেয়েরা গড়বেন ‘বঙ্গ জননী বাহিনী’। সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি পরে ‘জয় হিন্দ বাহিনী’ এবং ‘গঙ্গা-যমুনা পাড়ে’র শাড়িতে ‘বঙ্গ জননী বাহিনী’ এলাকা পাহারা দেবে। রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে পড়তে থাকা ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনির মোকাবিলায় ‘জয় হিন্দ’ বলার জন্যও সকলকে পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘জয় হিন্দ বাংলা, হিন্দি সব ভাষাতেই চলে। নেতাজি সুভাষচন্দ্রের কথা। দেখা হলেই বা ফোনে কথা হলে একে অপরকে বলুন ‘জয় হিন্দ’। বিজেপির স্লোগান আমরা মানব কেন?

অন্যদিকে আরএসএসের পাল্টা এদিন জয় হিন্দ বাহিনী ও বঙ্গজননী বাহিনী তৈরির কথাও ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সব মিলিয়ে ফল প্রকাশের পর তৃণমূল নেত্রীর মুখ থেকে শালীনতার বার্তা পাওয়ার কথা সকলে আশা করলেও উল্টে নির্বাচনের আগে বিজেপির বিরুদ্ধে যেরকম মনোভাব ছিল, নির্বাচনের পর প্রথম সভার মধ্যে দিয়ে সেই একই মনোভাব বজিয়ে রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!