প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – কিছুদিন আগেই করোনা ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে বড় রকমের গলদ ধরা পড়েছিল বলে জানা গিয়েছিল। সেখানে এই খবরে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে সেটা আশাভঙ্গের খবর ছিল। এমন পরিস্থিতিতে আবার সুখবর শোনাতে দেখা গেছে। জানা গেছে, অক্সফোর্ড টিকার ট্রায়াল সঠিক পথেই হচ্ছে।

তাই এতদিন যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া গিয়েছিল, সেগুলো নেহাতই গুজব বলেই জানা গিয়েছিল। আর এই খবরই শুনিয়েছে পুনের সিরাম ইনস্টিটিউট। তাঁদের দাবি, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি ‘কোভিশিল্ড’ সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। সেখানে গত সপ্তাহে যে খবর শোনা গিয়েছিল যে চেন্নাইয়ের এক স্বেচ্ছাসেবক টিকা নেওয়ার পর জটিল স্নায়ু ও স্মৃতিভ্রংশ রোগে ভুগছেন, সেটা গুজব বলেই জানিয়েছেন তাঁরা।

সেইসঙ্গে জানা গেছে, এই অভিযোগে সিরামের বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণের মামলাও করা হয়। মঙ্গলবার সিরাম ইনস্টিটিউটের তরফে এক বিবৃতি দিয়ে জানান হয় যে, একাধিকবার পরীক্ষার পর তবেই মানুষের শরীরে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হয়েছে। টিকা নিরাপদ প্রমাণিত না হলে কখনই তাঁরা মানুষের উপর টিকার প্রয়োগ সংক্রান্ত ঝুঁকি নিতেন না।

সেখানে, ভ্যাকসিন রেগুলেটরি কমিটি, বিশেষজ্ঞরা সবদিক খতিয়ে দেখার পর তবেই স্বেচ্ছাসেবকদের উপর ট্রায়াল শুরু হয়েছে বলেই জানান হয়। আর তাই চেন্নাইয়ের ওই স্বেচ্ছাসেবকের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি করেছে বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন নির্মাতা সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউট। এই সংস্থার অধিকর্তার কথা অনুযায়ী, মিথ্যা অভিযোগ এনে সংস্থার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সেইসঙ্গে এবিষয়ে তাঁরা আইনি পদক্ষেপ করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, ইতিমধ্যেই আইনি পথে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। সেইসঙ্গে জানা গেছে, ওই স্বেচ্ছাসেবকে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে। সিরাম ইনস্টিটিউটের তরফে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাল্টা ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করা হবে বলেও জানান হয়েছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অক্সফোর্ডের গবেষণা ও উৎপাদন সহকারী অ্যাস্ট্রোজেনেকা স্বীকার করে নিয়েছে যে ট্রায়ালে ব্যবহৃত ডোজে একাধিক ভুল হয়েছে। জানা গেছে, ভ্যাকসিন গবেষণার সাথে জড়িত আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন যে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার ট্রায়ালে প্রথমে সাফল্য মেলে ৯০%। পরে অন্যান্য ক্ষেত্রে দুটি ডোজ দেওয়া হলে পরে সফলতার হার হয় ৬২%। আর সেখানেই গবেষকরা এই দুই হারের গড় করে সাফল্যের হার ৭০% বলে জানিয়েছিলেন।

জানা গেছে, ব্রাজিল ও ব্রিটেনে একটি ট্রায়ালে ৩০ জনের মধ্যে ২৭ জনকে সম্পূর্ণ ও তিনজনকে ‘ভুল’ করে অর্ধেক ডোজ দেওয়া হয়। যার ভিত্তিতে অক্সফোর্ড ‘কোভিশিল্ড’-এর সাফল্য ৯০% বিবেচনা করে। অন্যদিকে কোনো ট্রায়ালে ৫টির মধ্যে ২টি ক্ষেত্রে কোভিশিল্ড সফল হলেও অন্য ক্ষেত্রে ২০ বারের মধ্যে ১৯ বার সফল হচ্ছে এই ভ্যাকসিন।

তাই স্বভাবতই এই ট্রায়াল চিন্তার ভাঁজ ফেলে চিকিৎসকদের কপালে। অনেক গবেষকদের মতে, অক্সফোর্ডের গবেষণা ট্রায়ালের নিয়মাবলী লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। তবে সম্প্রতি এই খবরে সেখানে আবার আশার আলো দেখা যাচ্ছে বলেই দাবি করেছেন চিকিৎসকরা।