প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – নির্বাচনী প্রচারের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিরোধীদের যে সমস্ত কটাক্ষ বাণ ধেয়ে এসেছিল, তার মধ্যে থেকে অন্যতম একটি বিষয় ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আর এমন পরিস্থিতিতে সেখানে উঠে এসেছিল আম্পান থেকে শুরু করনা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কেন্দ্রের পাঠানো টাকার কথা।

এরই সঙ্গে অন্যদিকে, সেখানে বিজেপি দাবি করেছিল যে, এর আগে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করে বিজনেস সামিট করেও মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে কোনও শিল্প আনতে পারেননি। তাই বাঁকুড়া হোক বা তাঁর যেকোনো নির্বাচনী প্রচারে সভা করে মুখ্যমন্ত্রী যে কর্মসংস্থানের কথা বলছেন, তা-ও মিথ্যা প্রতিশ্রুতি বলেই দাবি করেছিলেন বিরোধীরা। এরই মধ্যে, সোমবার বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য টুইট করে জানান যে, ২০১৯ বিজনেস সামিটের বিজ্ঞাপনে ২,৮৪,২৮৮ কোটির বিনিয়োগ এসেছিল বলে দাবি করেছিল রাজ্য সরকার।

অথচ ২০২০-২১ অর্থবর্ষে রাজ্যের মোট বাজেট ব্যয় ২,৫৫,৬৭৭ কোটি টাকার থেকেও কম। সেখানে বিধানসভার ভোটের মুখে দাঁড়িয়ে শাসকদল মিথ্যা কথা বলছেন বলেই অভিযোগ শোনা গিয়েছিল। তবে এরই মধ্যে সম্প্রতি রাজ্যে বিপুল কর্মসংস্থানের পূর্বাভাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সেখানে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প থেকে শুরু করে কুটির শিল্প সবেতেই কর্মসংস্থানের কথা শোনাতে দেখা গেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মঙ্গলবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘‘কর্মসংস্থানের জন্য আজ ২০টি তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর ফলে কয়েক হাজার ছেলেমেয়ের কর্মসংস্থান হবে।’’ তবে যদিও সেখানে তিনি বিজেপি বা অমিত মালব্যের নাম নেননি বলেই জানা গেছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগে আমেরিকার সিলিকন ভ্যালির মতো কলকাতার নিউটাউনে তথ্যপ্রযুক্তি হাব তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল নবান্ন এর তরফে। সেই মতো গত বছর ২০টি সংস্থাকে নিউটাউনে ১০০ একর জমিও দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী এদিন সেই প্রসঙ্গে জানান, কর্মসংস্থানের জন্য গত বছর যে ১০০ একর জমি দেওয়া হয়েছিল, তা পূরণ হয়ে গিয়েছে।

সেখানে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলো আরও ১০০ একর জমির দাবি করেছে। তাই সেই জমি তাদেরকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেই জানিয়েছেন তিনি। সেখানে তাঁর কথায় জানা গেছে, ইনফোসিসকে যে শর্তে জমি দেওয়া হয়েছে, সেই একই শর্তে উইপ্রো রাজ্য সরকারের কাছে আইটি সেক্টর তৈরির জন্য জমি চেয়েছিল। আর সেখানে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, উইপ্রোকেও জমি দেওয়া হবে।

শুধু তাই নয়, এর বাইরে জলপাইগুড়িতে একটি সিমেন্ট কারখানাকে জমি দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। আর সেই সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সঙ্গে সঙ্গে কুটির শিল্পের ক্ষেত্রেও প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে বলেও আশা রাখছেন তিনি। এখানে তিনি জানান, ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির পাশাপাশি একাধিক মেলারও আয়োজন করবে রাজ্য সরকার।

আর সেই মেলা থেকেও প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলেও আশা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর। এদিন তিনি জানান, রাজ্য জুড়ে ৬১৭ টি মেলা, প্রদর্শনী, এক্সপো আয়োজন করবে সরকার। তাই তাঁর মতে যদি এই মেলায় ১৫৬ কোটি টাকার মতো কেনাবেচা হয়, তবে তাঁর হিসেব অনুযায়ী এর ফলে ৩.৬৪ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।