আরও সঙ্গীন হাত শিবিরের হাল! এবার প্রভাবশালী নেত্রী করলেন দলবদল, সরগরম উত্তরবঙ্গের রাজনীতি উত্তরবঙ্গ কংগ্রেস রাজনীতি রাজ্য May 16, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বাম, কংগ্রেস এবং আইএসএফ জোট করেও মুখরক্ষা করতে পারেনি। অতীতের নির্বাচনে তারা একটু হলে দাগ কাটতে সক্ষম হলেও, এবারের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্য বিধানসভায় একজন প্রতিনিধি পাঠাতে সক্ষম হয়নি বাম এবং কংগ্রেস। সেদিক থেকে প্রথম রাজনৈতিক দল গঠন করে একজন প্রতিনিধি রাজ্য বিধানসভায় পাঠিয়েছে আইএসএফ। তবে নির্বাচনে যে সমস্ত জায়গায় তারা নিজেদের শক্ত ঘাঁটি রয়েছে বলে দাবি করেছিল, সেখানে মাথা তুলে না দাঁড়ানোর কারনে সেই বাম এবং কংগ্রেসের সংগঠন নিয়ে নানা মহলে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। তবে অনেকেই আশা করেছিলেন, নির্বাচনে যখন সাফল্য পেল না বাম এবং কংগ্রেস, তখন তারা অন্তত ঘুরে দাঁড়াতে এখন থেকে উঠেপড়ে লাগবেন। তবে সেগুড়ে বালি। একের পর এক হেভিওয়েট নেতা কর্মীরা দল ছেড়ে ঘাসফুল শিবিরে নাম লেখালেও, কোনোরকম উদ্যোগ নিতে দেখা যাচ্ছে না বাম এবং কংগ্রেস নেতৃত্বদের। ইতিমধ্যেই শিলিগুড়ি শহরে অশোক রঞ্জন ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠরা যোগ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসে। আর এবার শিলিগুড়িতে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা গেল কংগ্রেসের অন্দরে। বলা বাহুল্য, এবার শিলিগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে জয়লাভ করেছেন বিজেপি প্রার্থী। এতকাল বামেদের শক্ত ঘাঁটি ছিল এই শিলিগুড়ি। কিন্তু এবার সেখানে তারা দাগ কাটতে পারেনি। আর তারপরই বাম ও কংগ্রেস ছেড়ে একের পর এক নেতা, নেত্রী যেভাবে তৃণমূলে যোগ দিতে শুরু করেছেন, তাতে হাত শিবির এবং কাস্তে-হাতুড়ি শিবির ঠিক কোন পথ অবলম্বন করতে চাইছে, তা বুঝতে পারছেন না দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীরা। এভাবেই যদি চলতে থাকে, তাহলে দল কিভাবে বাড়তি অক্সিজেন নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে, সেটাই এখন প্রধান প্রশ্নের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে অনেকের কাছে। সূত্রের খবর, শনিবার শিলিগুড়ি পৌরসভার কংগ্রেসের প্রাক্তন কাউন্সিলার সীমা সাহা এবং তার স্বামী তথা বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা জয়ন্ত সাহা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। যেখানে তাদের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা গৌতম দেব। কেন হঠাৎ কংগ্রেস ছেড়ে তারা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন? এদিন এই প্রসঙ্গে কংগ্রেসের প্রাক্তন কাউন্সিলার সীমা সাহা বলেন, “এবার বিধানসভা নির্বাচনে রাজনীতির যে মহল তৈরি হয়েছে, তাতে আমি এবং আমার স্বামী মনে করেছি, মুখ্যমন্ত্রীর হাতকে আরও শক্ত করার জন্য আমাদের তার পাশে থাকা দরকার। তিনি একজন মহিলা হয়ে যেভাবে বিজেপিকে জবাব দিয়েছেন, তাতে আমি গর্বিত। তার হাত ধরেই বাংলার আরও উন্নয়ন হবে। শিলিগুড়ি শহর এমনিতেই পিছিয়ে গিয়েছে। আমরা চাই না, এই শহর আরও পিছিয়ে পড়ুক। তাই তৃণমূলের ছাতার তলায় এসে শিলিগুড়ি শহরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - আর সারা রাজ্য জুড়ে এমনিতেই বাম এবং কংগ্রেসের এবার খারাপ ফলাফল হয়েছে। তার মধ্যে শিলিগুড়ি শহরে যেভাবে এই দুই রাজনৈতিক দলের অন্দরে ধ্বস নামতে শুরু করেছে, তাতে তারা গোটা পরিস্থিতি কিভাবে সামাল দেবে, এখন সেটাই দেখার বিষয় সকলের কাছে। অনেকে বলছেন, কেন সময় থাকতে থাকতে কংগ্রেস নেতৃত্ব এই দিকে মনোযোগ দিচ্ছে না! 2011 সালে রাজ্যে পরিবর্তনের পর দিনকে দিন বাম এবং কংগ্রেসের অবস্থা খারাপ হতে শুরু করেছে। যেই সময় তাদের সংগঠনের দিকে নজর দেওয়া উচিত ছিল, তখন তারা স্রোতে গা ভাসিয়ে দিয়ে নীরবতা পালন করেছিলেন। কিন্তু এখন যখন তাদের সঙ্কটজনক দশা, তখনও ওপরতলা থেকে শুরু করে নিচুতলার নেতাদের মধ্যে কোনোরকম উদ্যোগ নেওয়ার মনোভাব দেখা যাচ্ছে না। যার ফলে দলে একের পর এক নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে প্রাক্তন জনপ্রতিনিধিরা তৃণমূলে যোগদান করছেন বলেই দাবি করছে সমালোচক মহল। তাদের একের পর এক নেতা, নেত্রী দলত্যাগ করছেন, তারা কেন সেদিকে মনোযোগ দিচ্ছেন না! এদিন এই প্রসঙ্গে শিলিগুড়ি পৌরসভার কংগ্রেসের প্রাক্তন পরিষদীয় নেতা সুজয় ঘটক বলেন, “আমার জানা নেই যে, সীমা সাহা দল ছাড়ছেন।” অনেকে কৌতুক করে বলছেন, দেখেও এখন না দেখার ভান করছেন কংগ্রেস নেতারা। কেননা গোটা বিষয়টি তারা স্বীকার করে নিলে তাদেরকে আরও ব্যাকফুটে চলে যেতে হবে। তাই প্রকাশ্যে তারা এই বিষয়ে কিছু জানেন না বলে এড়িয়ে যেতে চাইছেন। কিন্তু কতদিন এইভাবে তা এড়িয়ে যাবেন কাস্তে-হাতুড়ি শিবির এবং হাত শিবিরের নেতারা? এর ফলে তো তারা যে নিজেদের সর্বনাশ আরও বেশি করে ডেকে আনছেন, তা কি বুঝতে পারছেন না আলিমুদ্দিন স্ট্রিট এবং বিধান ভবনের নেতৃত্বরা! দলের ভাঙ্গন যদি অবিলম্বে তারা আটকাতে না পারেন, তাহলে ভবিষ্যতে আর প্রার্থী দেওয়ার মত জায়গায় থাকবে কিনা এই দুই রাজনৈতিক দল, এখন তা নিয়েই সন্দিহান বিশেষজ্ঞদের একাংশ। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -