এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > দিল্লিতে অমিত শাহের মহাবৈঠক ঘিরে দুই তত্ত্বে দ্বিধাবিভক্ত বঙ্গ-বিজেপি, জল্পনা চরমে

দিল্লিতে অমিত শাহের মহাবৈঠক ঘিরে দুই তত্ত্বে দ্বিধাবিভক্ত বঙ্গ-বিজেপি, জল্পনা চরমে


গত ২৮ শে সেপ্টেম্বর দিল্লিতে হয়ে গেল বঙ্গ-বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ত্বের সঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের মহাবৈঠক। এই বৈঠকের খবর প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় রাজনৈতিক মহলে। কেননা, প্রথমে জানা যায় এই বৈঠকে ডাক পেয়েছেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ত্বের পদাধিকারীরা। মোট ২৩ জনকে এই বৈঠকে ডেকে পাঠানো হয়েছে এবং এই বৈঠকে আলোচ্য বিষয় সূচি আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বাংলার রণকৌশল।

আর এখানেই ‘খটকা’! বঙ্গ-রাজনীতির পোড়খাওয়া বেশ কিছু নেতার বক্তব্য – এই মুহূর্তে নরেন্দ্র মোদী অমিত শাহদের মাথায় সবথেকে বড় চিন্তা মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ের বিধানসভা নির্বাচন। আর মাস তিনেকের মধ্যে হতে চলা এই তিন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন – কার্যত আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে শেষ বড় নির্বাচন। আর সেখানে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের করা সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে ছত্তিশগড়ে বিজেপির সরকার টিকে গেলেও – এককথায় ‘ভরাডুবি’ হতে পারে মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে।

আর লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে এই দুই বড় রাজ্যে মুখ থুবড়ে পড়া মানে লোকসভা নির্বাচনে তার প্রবল প্রভাব পড়তে বাধ্য। এহেন পরিস্থিতিতে অমিত শাহ বাংলার লোকসভা নির্বাচন নিয়ে রণকৌশল নিয়ে ভাবছেন? তাছাড়া – প্রশ্নটা আরও গভীরে। বিজেপি তো কোন আঞ্চলিক দল নয় যে একটি বিশেষ রাজ্য নিয়ে ভাবিত হবে – যদি লোকসভা নির্বাচনের রণকৌশল নিয়ে আলোচনায় হয় – তাহলে শুধু বাংলা কেন সব রাজ্যের নেতাদের ডেকেই তো এক এক করে আলোচনা হবে। তাহলে কি আলোচ্য বিষয়সূচি অন্য কিছু? কেননা, এই রাজ্য বিজেপির হাওয়া উঠলেও ইতিমধ্যেই বেশ কিছু শীর্ষনেতার নাম আর্থিক বা মহিলা-ঘটিত কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে গেছে।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

আর তাই এই বৈঠকের আগে তীব্র জল্পনা শুরু হয়েছিল বঙ্গ-বিজেপির অন্দরে তো বটেই, এমনকি সামগ্রিকভাবে রাজনৈতিক মহলেও। বৈঠকের দিন সকালে অবশ্য জানা যায় সমগ্র রাজ্য কমিটি নয় – বৈঠকে ডাক পেয়েছেন ‘কোর কমিটির’ নেতারা। কিন্তু যে নেতারা এই বৈঠকে ডাক পেয়েছিলেন তাঁরা তো বটেই, এই বৈঠক নিয়ে রীতিমত মুখে কুলুপ এঁটেছেন তাঁদের অনুগামীরাও। বৈঠকের পর প্রায় ৪৮ ঘন্টা কেটে গেলেও এই নিয়ে কোন খবরই প্রায় জানা যাচ্ছে না, ফলে এই বৈঠক নিয়ে জল্পনা অন্য মাত্রা পেয়েছে। তার থেকেও বড় কথা – এই বৈঠকে ডাক পাওয়া অন্যান্য নেতারা পরেরদিনই কলকাতায় ফেরত এলেও এক বিশেষ নেতা এখনও দিল্লিতেই থেকে গেছেন।

তবে অনেক চাপাচাপির পর, বিজেপির রাজ্যস্তরের নেতাদের অনুগামীদের কয়েকজন অবশেষে মুখ খুলতে রাজি হলেন, তবে কিছুতেই নাম প্রকাশ করা যাবে না এই শর্তে। কিন্তু, সেখানেও গন্ডগোল! দুই শিবিরের নেতাদের বক্তব্যে তারতম্য ভীষণ রকমের। তবে একটি ব্যাপার মোটামুটি এই দুই ধরনের খবর দেওয়া নেতারা একদম একমত – আর তা হল, রাজ্যে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কঠোর বার্তা দিয়েছেন অমিত শাহ। নতুন এবং পুরোনো নেতা-কর্মীদের সমন্বয়ের একটা অভাব হচ্ছেই আর যা রীতিমত ক্ষতি করছে সংগঠনের বিস্তারে। আর তাই, রাজ্য নেতাদের এই বিষয়ে দ্রুত ঐক্যে পৌঁছে একসাথে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন অমিত শাহ।

এছাড়াও, একটি শিবিরের দাবি – বর্তমান রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও অন্যান্য রাজ্য নেতাদের কাজে বেশ সন্তুষ্ট কেন্দ্রীয় নেতৃত্ত্ব। আসন্ন লোকসভার আগে সংগঠন কিভাবে বাড়ানো হবে বা তার জন্য যে রথযাত্রার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে তা কিভাবে সফল করা হবে মূলত এই নিয়েই আলোচনা হয়েছে। এমনকি আলোচনায় এসেছে ইসলামপুর কান্ড এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে ডাকা বাংলা বনধের কথা। ইসলামপুরের পর এলাকার মানুষের ক্ষোভ বেড়েছে আর তাই সেখানে অমিত শাহ স্বয়ং যাবেন জনসভা করতে – আলোচনা হয়েছে এই বিষয়ে। এমনকি এক নেতা তো জানিয়েই দিলেন – দিলীপ ঘোষের কাজে এতটাই খুশি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ত্ব যে লোকসভা নির্বাচন তো বটেই ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনও তাঁর নেতৃত্ত্বে হবে।

অন্যদিকে, আরেক শ্রেণীর নেতাদের কাছ থেকে টুকরো টুকরো যা খবর পাওয়া গেল তা জুড়লে যা দাঁড়ায় তা হল – এই বৈঠকে শুধু অমিত শাহ নন, মাঝপথে অংশ নিয়েছিলেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী। শুধু অংশ নেওয়ায় নয়, রাজ্যের নেতাদের নাম যেভাবে জড়িয়েছে বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে তাতে তিনি রীতিমত ক্ষুব্ধ। সবথেকে বড় কথা তাঁর ক্ষোভ বেড়েছে এই ‘কলঙ্কের’ দায় না গোটা বাংলা জুড়ে বিজেপিকে আগামী লোকসভা নির্বাচনে বইতে হয়। আর তাই, অমিত শাহ ‘কোর কমিটির’ নেতাদের কার কি বক্তব্য তা অত্যন্ত মন দিয়ে শুনেছেন – আর তারপর জানিয়েছেন, সবকিছুর জন্য তৈরী থাকুন। আর এই বিশেষ বার্তাটি যে বিশেষ অর্থবহ তা বলাই বাহুল্য – এখন দেখার কোন শিবিরের ‘তত্ত্ব’ শেষ পর্যন্ত মান্যতা পায়। তবে যা খবর চিত্রটা পরিষ্কার হয়ে যাবে আগামী শনি-রবিবারের মধ্যেই।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!