রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা কবে পেতে পারেন বকেয়া ডিএ ও নতুন বেতন কমিশন – জানুন বিস্তারিত কলকাতা বিশেষ খবর রাজ্য December 23, 2018 রাজ্যের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক ও সরকারি অনুদান প্রাপ্ত কর্মচারীদের কাছে এখন লাখ থাকার প্রশ্ন দুটি। এক, কবে আইন-আদালতের চক্কর কাটা শেষ করে দিনের আলো দেখবে বকেয়া ডিএ নিয়ে সুষ্ঠু সমাধান? দুই, দীর্ঘসূত্রিতার মায়াজাল ছাড়িয়ে কবে ঘোষিত হবে নতুন বেতন কমিশন? আপাতত, দুটিরই উত্তর অধরা – ফলে ক্রমশ বাড়ছে বঞ্চনার হতাশা। কোনো কোনো মহল থেকে মাঝে মাঝে আসে খবর যে এই সংশ্লিষ্ট দিনে হতে পারে ঘোষণা – কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত আলেয়ার আলো হয়েই থেকে যায়। ডিএ নিয়ে একবার স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুন্যাল (স্যাট) থেকে কলকাতা হাইকোর্ট হয়ে আবার স্যাট হয়ে – আপাতত কলকাতা হাইকোর্টের শুনানির অপেক্ষায়। বকেয়া ডিএর কথা উঠলেই রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে চালু রসিকতা – ‘তারিখ পে তারিখ’। ডিএ নিয়ে মামলাকারী সংগঠন কনফেডারেশনের শীর্ষনেতারা অবশ্য অত্যন্ত আশাবাদী। তাঁদের বক্তব্য, এই মামলায় আমরা ইতিমধ্যেই এক ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে – কলকাতা হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে ডিএ, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সাংবিধানিক অধিকারের মধ্যে পরে। রইলো বাকি ডিএর হার বা তা বছরে কবার করে দেওয়া হবে, কনফেডারেশন নেতাদের বক্তব্য – এর রায়ও তাঁদের পক্ষেই যেতে চলেছে খুব শীঘ্রই। আর, তাই রাজ্য সরকার নিশ্চিত হার বুঝেই – এই ‘তারিখ পে তারিখ’ ব্যাপার শুরু করেছে! কিন্তু সেটাও কতদিন? কলকাতা হাইকোর্ট বা স্যাট এই ব্যাপারে যে অত্যন্ত সহানুভূতিশীল – তা বিচারপতিদের শরীরী ভাষাই বুঝিয়ে দিচ্ছে। আর তাই – রাজ্য সরকারের এই সময় পিছোনোর ব্যাপার খুব বেশিদিন আর চলবে না – ডিএ নিয়ে ফয়সালা খুব শীঘ্রই হতে চলেছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - কিন্তু, ষষ্ঠ বেতন কমিশন? নজিরবিহীনভাবে তা তিন বছর অতিক্রম করে সাড়ে তিন বছরের দিকে এগোচ্ছে। সারা ভারতবর্ষে কোনো সরকারের পে-কমিশন নিয়ে এই দীর্ঘসূত্রিতার ইতিহাস কারোর জানা নেই! কিন্তু সাড়ে তিন বছরের শেষেও কি দেখা মিলবে নতুন বেতনক্রমের? কোন কোন মহল থেকে সুচারুভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে – আগামী জানুয়ারী মাসের শুরুতেই নাকি নতুন পে কমিশন ঘোষণা করে দেবে রাজ্য সরকার। এই প্রসঙ্গে অবশ্য পে কমিশনের চেয়ারম্যান অভিরূপ সরকার সংবাদমাধ্যমের সামনে একটি শব্দও খরচ করতে চান নি। তাহলে সত্যিটা কি? বিভিন্ন সংবাদপত্রের প্রকাশিত খবর ও বিভিন্ন সরকারি কর্মচারী সংগঠনের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে কথা বলে যা জানা গেল তা চমকে দেওয়ার মত! নতুন করে বেতন কমিশনের মেয়াদ আরও ৬ মাস বৃদ্ধির পরে তা শেষ হতে চলেছে আগামী মে মাসে। আর, বিশাল কিছু হঠাৎ পরিবর্তন না হলে – সেখানেও এর কাজ শেষ হবে না! কেননা, সূত্রের খবর, বিভিন্ন দফতরের কর্মী ইউনিয়নগুলির তরফে যে আবেদন পেশ করা হয়েছিল তার ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই ৯০০ টি শুনানি শেষ হয়েছে। আর, কর্মীদের আবেদন শোনার পর, এবার কমিশন দপ্তরের মতামত জানতে শুরু করেছে। আপাতত ১৮ টি শুনানি শেষ – বাকি এখনো ৩২ টি শুনানি বলে দাবি কলকাতার এক বহুল প্রচারিত দৈনিকের। আর শুনানির গতি? লজ্জা দেবে কচ্ছপকেও! প্রতি সপ্তাহে একটি করে শুনানি হচ্ছে – অর্থাৎ শুধু দপ্তরগুলির শুনানি শেষ হতেই লেগে যাবে আরও ৮ মাস। আর, লোকাল ট্রেনের ‘চিরুনির বিক্রেতার বিজ্ঞাপনের’ মত – এখানেই শেষ নয়! ওই সংবাদপত্রের দাবি অনুযায়ী, এরপরে শুরু হবে প্রায় ৪০০ কর্মীর শুনানি – যা ইউনিয়নগুলির আবেদনের বাইরে ব্যক্তিগতভাবে পৌঁছেছিল পে কমিশনের কাছে! অর্থাৎ, ডিএ মামলার মত এখানেও ‘তারিখ পে তারিখ’? সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, ধারণাটা নেহাত অমূলক নয়! কিন্তু, বিরোধীনেত্রী থাকার সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে স্পষ্টভাবেই সরকারি কর্মচারীদের দাবি দাওয়া নিয়ে অত্যন্ত ঐকান্তিক ছিলেন। তাহলে, হঠাৎ করে কি হল যে তিনি এইভাবে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন? ওই সংবাদপত্রের দাবি অনুযায়ী, নতুন পে-কমিশন চালু হলে প্রথম বছরেই বাড়তি ১১ হাজার কোটি টাকার দায় চাপবে রাজ্য সরকারের উপরে। এমনিতেই মুখ্যমন্ত্রী বারেবারে জানিয়ে এসেছেন, রাজ্যের কোষাগারের অবস্থা ভালো নয় – তিনি জোর দিয়েছেন ব্যয় সংকোচনে। সেখানে, অতিরিক্ত এই টাকার ধাক্কা সামলানো প্রায় অসম্ভব। আর তাই, বেতন কমিশনের তরফে এইচআরএ বা বাড়িভাড়া বাদ দিয়ে আরেকটি হিসাব পাঠানো হয়েছিল। সেখানেও খরচের পরিমান দাঁড়াবে প্রায় অতিরিক্ত ৭ হাজার কোটি টাকা। আর তা দিতে গেলে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যজুড়ে যে উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছেন – তা এক কথায় স্তব্ধ হয়ে যাবে। সুতরাং, স্বাভাবিক হিসাবেই ডিএর পাশাপাশি বেতন কমিশনেও আপাতত ‘তারিখ পে তারিখ’। আপনার মতামত জানান -