প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের সৈনিক হিসেবে পরিচিত মুকুল রায়। তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়েছিল, যার ফলে তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করে তিনি যোগদান করেছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে। তবে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানোর আগে তিনি ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ। 2017 সালে বিজেপিতে যোগদান করার পর 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনে তাকে বিজেপির পক্ষ থেকে কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভায় টিকিট দেওয়া হয়েছিল। জয়লাভও করেছিলেন মুকুল রায়। আর তারপরেই আবার নিজের পুরাতন দল তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন তিনি। পরবর্তীতে তার বিধায়ক পদ খারিজের জন্য বিজেপির পক্ষ থেকে শুভেন্দু অধিকারী উঠেপড়ে লাগলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মুকুল রায় বিজেপি পার্টি মেম্বার।

অর্থাৎ এখনও পর্যন্ত খাতায়-কলমে মুকুল রায় বিজেপি বিধায়ক। কিন্তু তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছেন। তাই তিনি কি করে বিজেপির প্রতিনিধি হতে পারেন, তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় একাংশ। তবে তৃণমূলও কৌশল অবলম্বন করে মুকুল রায়কে যাতে পিএসির চেয়ারম্যান করানো যায়, তার জন্যই শ্যাম এবং কুল রাখার চেষ্টা করেছে বলে অনেকে দাবি করেন। আর এই পরিস্থিতিতে এবার কি বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে সরাসরি তৃণমূলের টিকিটে রাজ্যসভায় যেতে চলেছেন মুকুল রায়? ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে জল্পনা ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই দুটি রাজ্যসভার আসন ফাঁকা রয়েছে। আগামী আগস্ট মাসের 9 তারিখে দীনেশ ত্রিবেদীর ছেড়ে দেওয়া রাজ্যসভার আসনে নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছে কমিশন। স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই আসনে প্রার্থী করা হবে, তা অবশ্যই লক্ষণীয় বিষয়। সেদিক থেকে এই আসনে বর্তমান বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায়কে প্রার্থী করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কেননা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বভারতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে চাইছেন মুকুল রায়কে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে দলকে আরও বেশি করে সর্বভারতীয় স্তরে ছড়িয়ে দেওয়া তার প্রধান টার্গেট, 2024 এর লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন থেকেই বিভিন্ন বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। তাই সেদিক থেকে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থাকা মুকুল রায়কে আবার তৃণমূলের টিকিটে সংসদে পাঠাতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই মনে করছেন একাংশ।

পর্যবেক্ষকদের মতে, বর্তমানে দলের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তেমনভাবে অভিজ্ঞ নন সর্বভারতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে। তাই তাকে সাহায্য করার জন্য দীর্ঘদিন তৃণমূলের সর্বভারতীয় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সামাল দেওয়া মুকুল রায়কে ব্যবহার করতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই কারণেই বিজেপির বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে মুকুল রায়কে রাজ্যসভার কাজে লাগাতে চাইছে তৃণমূল নেত্রী। তবে এই সমস্ত বিষয় জল্পনার পর্যায়েই রয়েছে। শেষ পর্যন্ত এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মুকুল রায়কে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে কাজে লাগানোয় তাকে রাজ্যসভায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কি সিদ্ধান্ত নেন তৃণমূল নেত্রী, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।