রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলায় ‘The Unsung Hero’ – জানুন ইউনিটি ফোরাম ও দেবপ্রসাদ হালদারের অনন্য লড়াইয়ের কাহিনী কলকাতা বিশেষ খবর রাজ্য January 20, 2019 রাজ্যের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক ও সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত কর্মচারীদের এখন পাখির চোখ ডিএ মামলা। ডিএ নিয়ে বর্তমানে দুটি মামলা রাজ্য সরকারের ঘুম উড়িয়ে দিয়েছে। একটি কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের করা ও অপরটি সরকারি কর্মচারী পরিষদের করা। আর এই দুই মামলার ফলে, রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা আশায় বুক বাঁধছেন – এবার বোধহয় দীর্ঘদিনের বঞ্চনার দুঃস্বপ্ন কাটিয়ে তাঁদের ন্যায্য ডিএ তাঁরা হাতে পাবেন। কেননা, ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্ট গত ৩১ শে আগস্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়ে দিয়েছে – ডিএ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সাংবিধানিক অধিকার, কোনোমতেই রাজ্য সরকারের দয়ার দান নয়। কিন্তু, এই ‘প্রায়’ জিতে যাওয়া মামলায় অধিকাংশ সরকারি কর্মচারী বোধহয় জানেনই না এর মূল স্থপতির কথা। হ্যাঁ, আমরা বলছি ইউনিটি ফোরামের রাজ্য আহ্বায়ক দেবপ্রসাদ হালদারের কথা। এই বিষয়ে আমাদের সরকারি কর্মচারী পরিষদের দেবাশীষ শীল বা স্টিয়ারিং কমিটির সঙ্কেত চক্রবর্তী আগেই জানিয়েছিলেন। আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সরাসরি যোগাযোগ করি দেবপ্রসাদবাবুর সঙ্গে। তাঁর নিজের কথায়, আগে ইউনিটি ফোরামের সদস্যরা সকলেই প্রায় অন্য সরকারি কর্মচারী সংগঠন নবপর্যায়ের সদস্য ছিলেন – কিন্তু ডিএ ও বেতন কমিশন নিয়ে একটি ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে মতপার্থক্যের জেরে ওই সংগঠন থেকে বেরিয়ে এসে তাঁরা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক একটি সংগঠন ইউনিটি ফোরাম তৈরী করেন। আর সংগঠনের প্রথম পর্যায়েই ২০১২ সাল নাগাদ রাইটার্স বিল্ডিংয়ে ডিএর দাবিতে টানা ২৯ দিনের অনশন কর্মসূচি নেন। দেবপ্রসাদবাবুর কথায়, কিন্তু এত বড় অনশনের পরেও সরকার আমাদের কথা শোনে না, আমাদের এক সদস্য তথা অন্যতম রাজ্য আহ্বায়ক অনিরুদ্ধ ভট্টাচার্য গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন, এমনকি তাঁকে স্ট্রেচারে করে নিয়ে গিয়ে পুলিশই এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করতে বাধ্য হয় এবং আমাদের আন্দোলন ভেঙে দেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি হতে থাকে। তখন আমরা অনুধাবন করি, শুধু আন্দোলন নয় – নিজেদের ন্যায্য দাবি এই সরকারের কাছ থেকে আদায় করতে গেলে আন্দোলনের পাশাপাশি আইনি লড়াইয়েরও আশু প্রয়োজন। আর তাই আমরা, কো-অর্ডিনেশন কমিটি থেকে শুরু করে সমস্ত সরকারি কর্মচারী সংগঠনের সঙ্গে আলোচনায় বসি। কিন্তু, কোনো সংগঠনই তখন এই আইনি লড়াইয়ের পথে এগোতে চায় নি। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - দেবপ্রসাদবাবুর কথা অনুযায়ী, এরপরেই কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে ঠিক হয় আমাদের দুই সংগঠন যৌথভাবে আইনি লড়াইয়ে যাবে। আর সেদিন থেকেই দুই সংগঠন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা প্রথমে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুন্যালে মামলা করলে আমাদের জানিয়ে দেওয়া হয়, ডিএ রাজ্য সরকারের দয়ার দান। আর তাই আমরা কালবিলম্ব না করে কলকাতা হাইকোর্টে এই নিয়ে মামলা করি। সেখানে ৩৭ টি শুনানির পর অবশেষে কলকাতা হাইকোর্ট ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়ে দেয় – ডিএ রাজ্য সরকারি কর্মীদের সাংবিধানিক অধিকার। দেবপ্রসাদবাবু আরও বলেন, এরপরে স্যাটে পুনরায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ডিএর হার বা তা বছরে কতবার করে দেওয়া হবে তা নিয়ে মামলা চলছে। যার শুনানি শেষ এবং তা শুধুমাত্র রায়দানের অপেক্ষায়। অথচ, রাজ্য সরকার নিশ্চিত হার বুঝে শুধুমাত্র সময় নষ্টের জন্য কলকাতা হাইকোর্টে ‘রিভিউ পিটিশন’ করেছে। কিন্তু তার শুনানিতে মাননীয় বিচারপতিরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ডিএ নিয়ে যখন রায় বেরোয় তখন এর কোনো বিরোধিতা না করে এখন রিভিউ পিটিশন করার অর্থ কি? তাও রাজ্য সরকার নাছোড়ভাবে আরও কিছু বলতে চেয়ে ২৯ শে জানুয়ারির ডেট নিয়েছে। দেবপ্রসাদবাবুর দাবি, কিন্তু এত করেও শেষ রক্ষা করতে পারবে না রাজ্য সরকার। আমাদের ধারণা, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল যে যুক্তিতে দাঁড়িয়ে রিভিউ পিটিশন করছেন তা আগামী ২৯ শে জানুয়ারীই খারিজ হয়ে যাবে আর সেক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই ডিএ নিয়ে স্যাট রায়দান করে দেবে। তবে, রাজ্য সরকারের যা গতি-প্রকৃতি হয়ত এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চলে যাবে – কিন্তু তা করে কি আর লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারীদের হকের পাওনা আটকাতে পারবে? প্রথম থেকে এই মামলায় আছি এবং প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টেও গিয়ে এই নিয়ে ইনি লড়াইয়ের পথে সরকারি কর্মচারীদের ন্যায্য পাওনা তাঁদের হাতে তুলে দেবই। ডিএ মামলার অন্যতম স্থপতি ইউনিটি ফোরামের রাজ্য আহ্বায়ক – দেবপ্রসাদ হালদার। আপনার মতামত জানান -