স্কুলের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রেও জয় শ্রীরাম, কাটমানির প্রসঙ্গ, জোর চাঞ্চল্য কলকাতা রাজ্য হাওড়া-হুগলি August 8, 2019 লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে রাজ্য রাজনীতিতে দুটি বিষয় নিয়ে শাসক দল তৃণমূল বনাম বিরোধী দল বিজেপির মধ্যে তরজা চরম আকার ধারণ করেছিল। যার মধ্যে একটি হল রামধ্বনী এবং অপরটি হল কাঠমানি ইস্যু। শাসক দল তৃণমূলের অভিযোগ ছিল, রামের নাম করে বিজেপি বাংলা জুড়ে অশান্ত পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে। অন্যদিকে দুর্নীতি রুখতে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের কাউন্সিলরদের বৈঠকে কেউ কোনো কাটমানি খেলে তা তাকেই ফেরত দিতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন। যাকে সদর্থক পদক্ষেপ বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে প্রচারে নামছে দেখা গিয়েছিল গোটা ঘাসফুল শিবিরকে। এমনকি দুর্নীতি রোধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত যুগান্তকারী বলেও দাবি করেছিলেন তৃণমূল নেতারা। কিন্তু এবার আশ্চর্যজনকভাবে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রেও সেই জয় শ্রীরাম এবং কাটমানির প্রসঙ্গ উঠে এল। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - সূত্রের খবর, গত 5 আগস্ট মগরার আকনা ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণীর দ্বিতীয় মূল্যায়নের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। যেখানে সংবাদপত্রে প্রতিবেদন লিখনশৈলী পর্বে সেই কাটমানি এবং জয় শ্রীরাম প্রসঙ্গ উঠে আসে। প্রশ্নপত্রে দেখতে পাওয়া যায়, “জয় শ্রীরাম ধ্বনি সমাজজীবনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করছে” এবং “কাটমানি বন্ধ ও ফেরত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি সাহসী পদক্ষেপ” বলে দুটি প্রতিবেদন ছাত্র-ছাত্রীদের লিখতে বলা হয়েছে। যার জন্য 5 নম্বর বরাদ্দ করা হয়েছে। আর আশ্চর্যজনকভাবে বঙ্গ রাজনীতিতে এই ধরনের ইস্যু ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ওঠায় তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে রাজ্য জুড়ে। তবে বিতর্ক যাতে বেশি দূর না যায়, তার জন্য ইতিমধ্যেই সেই দুটি প্রশ্ন বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়ে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এমনকি সেই প্রশ্নের জন্য বরাদ্দ 5 নম্বর এমনিই ছাত্র-ছাত্রীদের দিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে। কিন্তু যা হওয়ার তা তো হয়ে গিয়েছে। কেন প্রশ্নপত্র বঙ্গ রাজনীতির এহেন জ্বলন্ত ইস্যু তুলে ধরা হল! সুকুমার মতি বুদ্ধিধারী ছাত্র-ছাত্রীদের মনে কেন স্কুল জীবন থেকেই রাজনীতির বিষ ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে! তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিদ্বজ্জনেরা। এদিন এই প্রসঙ্গে সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রোহিত পাইন বলেন, “দশম শ্রেণীর মূল্যায়ন পরীক্ষায় এই প্রশ্ন করা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে কেউ কোনো অভিযোগ না করলেও আমরা ঘটনা দেখে তার প্রতিক্রিয়া হতে পারে অনুমান করে পদক্ষেপ করেছি। সবাইকে প্রশ্নের জন্য নির্ধারিত নম্বর দেওয়া হবে। যিনি প্রশ্ন করেছেন সেই শিক্ষক ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। তবে প্রশ্নপত্র আরও ভালো করে পর্যালোচনা করার প্রয়োজন ছিল।” এদিকে এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে দেখা গেছে বিজেপিকে। এদিন এই প্রসঙ্গে হুগলি জেলা বিজেপির সাংগঠনিক সভাপতি সুবীর নাগ বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের ঢাক পেটানোর দায়িত্ব যে স্কুল নিয়েছে তা বোঝাই যাচ্ছে। যারা আমাদের বিরুদ্ধে শিক্ষায় গৈরিকীকরণের অভিযোগ তোলে, তারা ঘুরিয়ে দলদাস শিক্ষকদের দিয়ে কি করাচ্ছে তা অবিভাবকরা প্রত্যক্ষ করছেন। এই ঘটনায় নিন্দার ভাষা নেই।” তবে এই ব্যাপারে বিজেপির বিরুদ্ধেই পাল্টা অভিযোগের আঙুল তুলতে দেখা গেছে হুগলি জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধক্ষ তথা তৃণমূল নেতা গোপাল রায়কে। আর এই নিয়েই বিরোধীদের অভিযোগ এর মাধ্যমে তৃণমূল সরকারের সুখ্যাতি ও বিজেপির বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কেননা এখানে বলা হয়েছে -“জয় শ্রীরাম ধ্বনি সমাজজীবনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করছে”- এটা বিজেপির বিরুদ্ধে যাচ্ছে। আর “কাটমানি বন্ধ ও ফেরত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি সাহসী পদক্ষেপ”বলে তৃণমূল সরকারের গুণগান করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক তরজা যে পর্যায়েই পৌঁছক না কেন, যেভাবে স্কুলের প্রশ্নপত্রে রাজ্যের রাজনৈতিক বিষয় তুলে ধরে ছাত্র-ছাত্রীদের লিখতে বলা হয়েছিল, তা সত্যিই যে শিক্ষাঙ্গনকে রাজনীতি মুক্ত করার বদলে রাজনৈতিক গ্রাসে পরিণত করা হচ্ছে, সেই ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত প্রায় সকলেই। আপনার মতামত জানান -