উপনির্বাচনে ভরাডুবি হতেই কি এবার দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে মোদী-শাহ এঁকে নতুন রাজ্য সভাপতি করছেন? কলকাতা জাতীয় রাজ্য December 3, 2019 সম্প্রতি রাজ্যে হয়ে গেল তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। করিমপুর, কালিয়াগঞ্জ ও খড়্গপুরের বিধানসভা উপনির্বাচন ঘিরে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে একটা দুর্দান্ত প্রেস্টিজ ফাইট হলো। তবে হেরে গেলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ প্রেস্টিজ ফাইটে। প্রশ্ন উঠেছে, বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মুকুল রায়কে দেওয়া চাণক্য উপাধি নিয়ে। তিন বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে গো হারান হেরে গেছে বিজেপি। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল আবার উপনির্বাচনে নিজেদের জায়গা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। আর এরপরেই উঠেছে নতুন গুঞ্জন বিজেপির অন্দরে। তবে কি এবার রাজ্য সভাপতির মুখ বদল হতে চলেছে? উত্তর অবশ্য এখনও জানা নেই। 2018 সালে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ এর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কথায় তাঁর মেয়াদ 2019 এর ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। 2018 সালে দিলীপ ঘোষের মেয়াদ শেষ হবার পর এই রাজ্য বিজেপির সভাপতির মুখ বদল নিয়ে জল্পনা চলছিলই। তারপর কিছু সময়ের জন্য সেই জল্পনা ধামাচাপা পড়লেও, এবার উপনির্বাচনের হারের পর আবার নতুন করে এই জল্পনা মাথাচাড়া দিয়েছে। শোনা যাচ্ছে, এবার রাজ্য বিজেপি সভাপতি হতে চলেছে আরএসএসের ঘনিষ্ঠ এক নেতা। তবে রাজ্য বিজেপির অন্দরে দিলীপ ঘোষের রাজ্য সভাপতি থাকা নিয়ে দল দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। এক দলের ভাবনায় পশ্চিমবাংলার দায়িত্ব রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের হাতেই থাকবে। কারণ, তাঁর নেতৃত্বেই গত লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবাংলায় উল্লেখযোগ্য ফল করেছে বিজেপি এবং সে কারণে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ পদে পরিবর্তন না করে 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে পুরোদমে লড়াই করতে নামবে। অন্যদিকে, দ্বিতীয় অংশের ভাবনায় সম্পূর্ণভাবে এসেছে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে নতুন মুখের আমদানি। তবে নতুন মুখের ভাবনা আর কথা অনেক বেশি জোড় পেয়েছে সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা উপনির্বাচনে ফলাফল ঘোষণার পর। খড়গপুর বরাবরই দিলীপ ঘোষের গড় বলেই পরিচিত। সেখানেও ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। তৃণমূল মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে এই প্রথম খড়্গপুরে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তবে এবার রাজ্য সভাপতি পদে আসীন হওয়ার জন্য যে নামটি সবার প্রথমে উঠে আসছে, তিনি হলেন আশিস সরকার। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবার রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদে এমন একজনকে বসাতে চাইছেন, যিনি রাজ্য বিজেপির সমস্ত লবিকে একসূত্রে বাঁধতে পারবেন। ইতিমধ্যে মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষের দ্বৈরথ বিজেপি শুধু নয়, গোটা পশ্চিমবঙ্গের সবাই জানে। তবে অন্যদিকে রাহুল সিনহার বেশকিছু অনুগামী আছেন, যাঙ্গেরা সবসময় তাঁর পক্ষে বলে যান আবার বিজেপির অন্দরেই নাম উঠেছে সৌমিক ভট্টাচার্যের। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে দিলীপ ঘোষকে যদি সরানো হয় তাহলে সে জায়গায় এমন একজন নেতাকে আনা দরকার যিনি বাঙালি হবেন এবং আরএসএস ঘনিষ্ঠ হবেন। তবে বাংলা নেতৃত্বের সাথে কোনরকম যোগাযোগ না থাকলেই কোন লবির নিশান থাকবেনা পশ্চিমবাংলায়। এবার সেই কারণেই পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি হওয়ার পথে এগিয়ে রয়েছেন আশিস সরকার। এর আগেও আশিস সরকারের নাম উঠেছিল বঙ্গ বিজেপি সভাপতি পদে বহাল হবার জন্য। 2015 সালে রাহুল সিনহা যখন রাজ্য বিজেপি সভাপতি থেকে সরে যান, দিলীপ ঘোষ সভাপতি হন এবং তখনই আসি সরকারের নামও উঠেছিল। যদিও আশীষ সরকার সেই সময় রাজ্য বিজেপি সভাপতি হননি। এবার আরও একবার রাজ্য বিজেপি সভাপতি বদল হওয়ার গুঞ্জন উঠেছে রাজ্যে। এবং নতুন করে আশিস সরকারের নামও সামনে এসেছে। যদিও আশিস সরকারের ঘনিষ্ঠদের তরফ থেকে এই সম্ভাবনা সম্পূর্ণ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবুও রাজনৈতিক মহলে রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদে আশীষ সরকার এর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে একথা নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, যদি রাজ্য বিজেপি সভাপতি পদে বদল আসে, তাহলে সভাপতি পদের দৌড়ে সবার প্রথমে আছেন আশিস সরকার। অন্যদিকে, রাজ্যের বিধানসভা উপনির্বাচনে তিন কেন্দ্রের নিদারুণ ফলের পর দলের একাংশ বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। আগামী 2021 এর বিধানসভা ভোটে এই উপ-নির্বাচনের ফল কতটা প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যথেষ্ট চিন্তান্বিত। তবে রাজ্য বিজেপির অন্দরের খবর, দিলীপ ঘোষ ধরেই নিয়েছিলেন খড়্গপুরের ভোট সম্পূর্ণরূপে বিজেপির নামেই যাবে। এই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই খড়গপুর কেন্দ্রে হারের কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে উপনির্বাচনের হার নিয়ে ইতিমধ্যে দলীয় স্তরে কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে। তবে এবার দেখার, উপনির্বাচনের ফলাফলের ওপর নির্ভর করে কি রাজ্য বিজেপি সভাপতি পদে এবার বদল আসতে চলেছে? আসছে কি তবে নতুন মুখ? পরিস্থিতির ওপর নজর রাখবে তামাম রাজনৈতিক মহল। আপনার মতামত জানান -