এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > নরেন্দ্র মোদী আর অমিত শাহের কথায় বিভ্রান্তি! কে সত্যি বলছেন? প্রশ্ন বিরোধীদের

নরেন্দ্র মোদী আর অমিত শাহের কথায় বিভ্রান্তি! কে সত্যি বলছেন? প্রশ্ন বিরোধীদের

ভোটে বৈতরণী পার হওয়ার জন্য নির্বাচনী ইশতেহারে এনআরসি নিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। সেই মত ক্ষমতায় আসার পর থেকেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর গলায় বারেবারেই শোনা গিয়েছিল দেশজুড়ে এনআরসি প্রক্রিয়া চালু করার কথা। এমনকি সম্প্রতি সংসদে কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রী স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন, আগামী 2024 সালের নির্বাচনের আগেই এই নাগরিকপঞ্জি সারা দেশে চালু হবে।

কিন্তু বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই কথা বললেও, রামলীলা ময়দানে গিয়ে এনআরসি নিয়ে তার সরকারের কোনো বক্তব্য নেই বলে দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যা নিঃসন্দেহে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্যে অনেকটাই ফারাক রয়েছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

জানা গেছে, এদিন রামলীলা ময়দান থেকে এনআরসি সংক্রান্ত বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এনআরসি নিয়ে সরকারের মধ্যে কোনো কথা হয়নি। 2014 সাল থেকে এনআরসি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। বিরোধীরা মিথ্যে কথা বলছে। কেবলমাত্র সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অসমের জন্য এনআরসি করতে হয়েছে।” আর প্রধানমন্ত্রী এহেন মন্তব্য করাতেই তৈরি হয়েছে জল্পনা।

অনেকে বলছেন, তাহলে কি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যা বলেছেন, তা মিথ্যে কথা? তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে মিথ্যে কথা বলেছেন, তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না অনেকে। কেননা এদিন প্রধানমন্ত্রী এনআরসি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানালেও, পরোক্ষে এনআরসি সংক্রান্ত কিছু কথা উপস্থাপিত করেছেন। মুসলিমদের সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী বলেন, “যিনি ভারতের মাটির মুসলমান, যার পূর্বপুরুষ মা ভারতীর সন্তান, নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি নিয়ে তার কোন লেনদেন নেই।”

অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য থেকে অনেকে বলছেন, যদি এনআরসি না হত, তাহলে মুসলমানদের নিয়ে এইভাবে মন্তব্য করতেন না প্রধানমন্ত্রী। তবে সরাসরি এককথায় প্রধানমন্ত্রী এনআরসি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানানোয় এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিছুদিন আগে এনআরসি সারাদেশে লাগু হবে বলে জানিয়ে দেওয়ায়, দুই ব্যক্তির মন্তব্য নিয়ে তৈরি হয়েছে জল্পনা। কেননা দুইজনের মধ্যে একটি বিষয় নিয়ে এহেন বিভ্রান্ত দেখা যাচ্ছে। তাহলে কি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে ফাটল দেখা দিতে শুরু করেছে? আর তাই এনআরসি ইস্যুতে ভিন্ন ভিন্ন মন্তব্য করছেন তারা!

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস মুখপাত্র রনদীপ সূর্যেওয়ালা বলেন, “নরেন্দ্র মোদী দিল্লিতে বলেছেন, এনআরসি নিয়ে আলোচনা হয়নি। তাহলে কি প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে সামঞ্জস্য নেই! দল ও সরকারের মধ্যে সংঘাত তৈরি হয়েছে! নাকি দুজনে মিলে দেশকে বোকা বানাচ্ছেন!” একইভাবে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এনআরসি নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্যের জেরে তাদেরকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের এক নেতা বলেন, “সিএএ এবং এনআরসি হচ্ছে বিজেপির যৌথ প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রী যাই বোঝানোর চেষ্টা করুন না কেন, বিজেপি যে এনআরসি গোটা দেশে করবে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। সুতরাং ওরা যে দেশবাসীকে ভুল বোঝাচ্ছে, তা জলের মত স্পষ্ট।” তবে যে যাই বলুন না কেন, বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন লাগু হওয়ার পর থেকে যেভাবে দেশজুড়ে বিক্ষোভ সংগঠিত হচ্ছে, তাতে কিছুটা হলেও চাপে রয়েছে কেন্দ্রের মোদি সরকার।

তাই তো এখন যাতে এনআরসি নিয়ে কোনো মন্তব্য না করা হয়, তার জন্যই হয়ত বা দল সাবধানী পদক্ষেপ নিয়েছে। আর তাই প্রধানমন্ত্রী এদিনের সভা থেকে স্পষ্ট ভাষায় এনআরসি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু কিছুদিন আগে করা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য এনআরসির স্বপক্ষে থাকায় তৈরি হচ্ছে জল্পনা।

তবে দেশে যাতে শান্তি বজায় থাকে, তার জন্যই যে প্রধানমন্ত্রী এনআরসি নিয়ে এই ধরনের মন্তব্য করেছেন, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তবে সামগ্রিকভাবে দেশের প্রধানমন্ত্রী এই মন্তব্য করলেও, ভবিষ্যতে কেন্দ্রের মোদি সরকার এনআরসি নিয়ে ঠিক কি সিদ্ধান্ত নেয়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলেরই।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!