আবারও দলবদল, রাজনৈতিক মহলে জোর সমালোচনা নদীয়া-২৪ পরগনা রাজ্য March 20, 2020 2019 এর লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই দেখা গিয়েছিল বিভিন্ন দল থেকে নেতাকর্মীরা বিজেপিতে যোগদান করে চলেছেন। তবে সম্প্রতি বেশ কিছুদিন ধরেই দেখা যাচ্ছিল, বিজেপি থেকে ক্রমাগত নেতা এবং কর্মীরা বেরিয়ে গিয়ে অন্যান্য দলে যোগদান করছেন। সার্বিকভাবে এই দলবদলের ঘটনাগুলি বিজেপি শিবিরে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে বলে খবর। অন্যদিকে পুরসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের টিটাগড় থেকে আবারও বড় সংখ্যায় বিজেপি নেতা-কর্মী-সমর্থকরা যোগ দিলেন তৃণমূলে। পুরসভা নির্বাচনের এই সন্ধিক্ষণে বিজেপি থেকে তৃণমূলে প্রবেশ খুব স্বাভাবিকভাবেই বিজেপিকে কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলতে পারে বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের। সম্প্রতি টিতাগড়ে বিজেপি থেকে তৃণমূলে প্রবেশ করেছেন 200 জন বিজেপি কর্মী। সূত্রের খবর, ব্যারাকপুরের বিজেপি শ্রমিক সংগঠনের নেতা পরবিন্দর চৌধুরী ও তাঁর অনুগামীরা সোমবার সন্ধ্যায় এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসে এসে যোগদান করেন। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে পরবিন্দর চৌধুরী ও তার সঙ্গীসাথীরা একইভাবে তৃণমূল থেকে বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং এর ছত্রছায়ায় চলে গিয়েছিলেন। সোমবার তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন টিটাগড় পুরসভার পুরপ্রধান প্রশান্ত চৌধুরী। অন্যদিকে সূত্রের খবর, এখনো পর্যন্ত ব্যারাকপুরে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেছেন প্রায় 200 জন বিজেপি কর্মী। এ ব্যাপারে ইতিবাচক ভঙ্গিমায় ব্যারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত জানিয়েছেন, “লোকসভা ভোটের আগে ওরা আমাদের ভুল বুঝে দল ছেড়ে চলে গেছিল। এখন ওরা বিজেপিতে গিয়ে বুঝেছে বিজেপি মানুষের ভাল কিছু করে না। তাই ফের ঘরের ছেলেরা ঘরে ফিরে এল । আমাদের অনেকটাই সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি হল।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - অন্যদিকে দলবদলকারী বিজেপি শ্রমিক সংগঠনের নেতা পরবিন্দর চৌধুরী এদিন জানিয়েছেন, “বিজেপিতে গিয়ে দেখলাম ওখানে উন্নয়নের কোন কাজ নেই। ওখানে শুধু জাতি বিভেদের রাজনীতি। ওদের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারিনি, পুরনো দলে ফিরে এলাম। দিদির হাত ধরে উন্নয়নের কাজ করতে চাই আবার ।” এদিন দলবদলের এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ব্যারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত, নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক, তৃণমূল নেতা সুবোধ অধিকারী, প্রশান্ত চৌধুরী সহ ব্যারাকপুর শহর তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যান্য নেতৃত্বরা। তবে এদিন বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখনো পর্যন্ত ব্যারাকপুর বিজেপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবেই পরিচিত। তাই দল থেকে কে বেরোল ও কে এলো তার কোন প্রভাব পড়বে না। এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা মনীশ শুক্লা জানিয়েছেন, “15 জনের বেশি কেউ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যায়নি। যারা গেছে তাদের বিরুদ্ধে দলের অন্দরে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলছিল। আজ না হোক কাল ওরা দল থেকে বহিস্কার হতই, তাই সুযোগ বুঝে সরে পড়েছে। যে শ্রমিক নেতার কথা বলা হচ্ছে, সে বড় ধান্দাবাজ, এখানে ধান্দাবাজি করতে পারেনি । ওখানে গেছে ধান্দাবাজি করতে।” লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি রাজনৈতিক মঞ্চের সামনের সারিতে চলে আসে। কিন্তু বর্তমান বাংলাতেই রীতিমত উল্টো ধাক্কা সইতে হচ্ছে বিজেপিকে। বহু জায়গা থেকে খবর আসছে বিজেপির দলবদল করার। এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, সম্প্রতি এনআরসি এবং সিএএকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি বেশ কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে। অন্যদিকে, তৃণমূলও লোকসভা ভোটে বেশ কিছুটা কোণঠাসা অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সমর্থ হয়েছে। এই অবস্থায় বিজেপি শিবির থেকে ক্রমাগত শাসক দলে দলবদল করায় আগামী দিনে এ রাজ্যে বিজেপি যথেষ্ট বেকায়দায় পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে রাজনৈতিক মহল থেকে। আপনার মতামত জানান -