আব্বাস সিদ্দিকী বান সামলাতে না পারলে তৃণমূলের সব ‘ঘেঁটে যাবে’? ৪৪ সংখ্যালঘু আসনে নয়া সমীকরণ? তৃণমূল নদীয়া-২৪ পরগনা রাজনীতি রাজ্য September 27, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিধানসভা নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসছে, ততই নানা সম্প্রদায়ের ভোটব্যাঙ্ক রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতিমধ্যেই শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস থেকে শুরু করে বিরোধী দল বিজেপি – ভোট রাজনীতির সমীকরণ করতে শুরু করে দিয়েছে দলীয় স্তরে। বর্তমানে বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ রক্ষার অন্যতম ভোটব্যাঙ্ক সংখ্যালঘু ভোট। বিগত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি 18 টা আসন পেলেও, চারটি আসন বেশি পেয়ে এই সংখ্যালঘু ভোটের জন্যই মুখ রক্ষা হয়েছে রাজ্যের শাসক শিবিরের। তাই আগামী দিনে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল সংখ্যালঘু ভোটব্যাংককে নিজেদের দিকে রাখতে উদ্যোগী হয়েছে। তবে বিজেপি এই ব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেসকে চাপে ফেলতে পাল্টা রণকৌশল সাজাতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকীকে ফোন করে তাকে পাশে পাওয়ার বার্তা দিয়েছেন। যার ফলে রাজ্যের সংখ্যালঘু ভোটের ভবিষ্যত নিয়ে নয়া রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হতে শুরু করেছে। যদি সত্যি সত্যিই ত্বহা সিদ্দিকী বিজেপিকে সমর্থন করেন, তাহলে তা যে তৃণমূলের কাছে বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা। সূত্রের খবর, শনিবার সকালে দক্ষিণ 24 পরগনার ভাঙ্গড়ের পোলেরহাটের এক জনসভায় ত্বহা সিদ্দিকী বলেন, “আমরা সারা রাজ্যের 44 টি আসনে প্রার্থী দেব। এর মধ্যে দক্ষিণ 24 পরগনায় আটটি এবং উত্তর 24 পরগনায় নয়টি রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা চলছে। দাবি মেনে আসন সমঝোতা করা হলে শাসকদলের হয়ে অন্য আসনগুলোতে আমরা প্রচার করব। আর তৃণমূল যদি আসন সমঝোতায় না যায়, তাহলে সমস্ত আসন ঘেটে দেওয়া হবে।” আর তার এই মন্তব্যেই এবার তৈরি হয়েছে জল্পনা। “ঘেটে দেওয়া হবে” বলে কি বোঝাতে চাইলেন পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজ্যে তৃণমূলের দখলে রয়েছে 27% সংখ্যালঘু ভোট। অন্যদিকে হিন্দু ভোট রয়েছে 15 শতাংশ। সেদিক থেকে তৃণমূলের মোট ভোটের শতাংশের পরিমাণ 42 শতাংশ। অন্যদিকে বিজেপির দখলে রয়েছে 40 শতাংশ ভোট। যার পুরোটাই হিন্দু ভোট। স্বাভাবিকভাবেই 2% ভোটের ফারাক থাকায় বিজেপি যদি সংখ্যালঘুদের বাগে আনতে পারে, তাহলে অনেক আসনেই তৃনমূলকে তারা চাপে ফেলে দিতে সক্ষম হবে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - যার ফলে এখন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ত্বহা সিদ্দিকীর সঙ্গে আলোচনা করতে শুরু করেছেন। তবে ত্বহা সিদ্দিকী অবশ্য এই ব্যাপারে এখনই কোনরকম আলোচনার দরজা খুলতে রাজি হননি। কিন্তু তিনি যেভাবে রাজ্যের শাসক দলকে বার্তা দিলেন, তাতে তৃণমূলের অবস্থান কি হয়, তা অবশ্যই দেখার বিষয় রাজনৈতিক মহলের কাছে। কেননা এখন তৃণমূলের অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে আগামীদিনের সংখ্যালঘু ভোটের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। একাংশের মতে, ত্বহা সিদ্দিকী নিজের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট ভাষায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, 44 টি আসন তৃণমূলকে ছেড়ে দিতে হবে। তাহলেই তারা তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতা করবেন। আর যদি তারা তা না করেন, তাহলে ঘেটে দেওয়া হবে। অর্থাৎ এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, তৃনমূল কংগ্রেস যদি তাদের আসন ছেড়ে না দেয়, তাহলে তারাও তৃণমূল কংগ্রেসকে চাপে ফেলতে শুরু করবেন। অর্থাৎ যে তৃণমূলের সবথেকে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ সম্বল ছিল সংখ্যালঘু ভোটব্যাংক, তৃনমূল যদি এখন পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকির প্রস্তাবে রাজি না হন, তাহলে সংখ্যালঘুদের ভোট কাটাকুটিতে তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলে অনেক আসনেই বেরিয়ে যেতে পারে ভারতীয় জনতা পার্টি। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। এখন তৃণমূলের পক্ষ থেকে ফুরফুরা শরীফের পীরজাদার এই প্রস্তাবে সবুজ সঙ্কেত আসে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -