এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > ছাই খাদানের দখলেও ছেয়ে গেছে সিন্ডিকেট-রাজ? গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ক্রমশ উত্তপ্ত পরিস্থিতি নবাব-গড়

ছাই খাদানের দখলেও ছেয়ে গেছে সিন্ডিকেট-রাজ? গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ক্রমশ উত্তপ্ত পরিস্থিতি নবাব-গড়


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – জমি, বাড়ি, রাস্তাঘাট, বহুতল নিয়ে সিন্ডিকেট রাজ্যের কথা ইতিপূর্বে বহুবার শোনা গেছে। কিন্তু একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই তোলা নিয়েও যে দুই সিন্ডিকের মধ্যে মারামারি হতে পারে তা ইতিপূর্বে শোনা যায়নি। এবার মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের খাদান থেকে ছাই তোলাকে কেন্দ্র করে দুই সিন্ডিকেটের মধ্যে দেখা দিল ব্যাপক সংঘর্ষ।

স্থানীয় সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ছাই এনে জমা করা হয় ছাই পুকুর বা খাদান নাম পরিচিত একটি স্থানে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ টেন্ডার ডেকে প্রতি বছর কোন সংস্থাকে বরাত দেয় এই ছাই তোলা ও ফেলার কাজের। ইতিপূর্বে ছাই পুকুর এর দখল নিয়ে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন সিন্ডিকেটের সংঘর্ষ দেখা গিয়েছিল।

গত বুধবার এই ছাই পুকুর থেকে ছাই তোলাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ভাবে শুরু হলো সংঘর্ষ। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে টেন্ডার প্রাপ্ত এক ঠিকাদার যখন তার নিজের লোকদের নিয়ে ছাই তোলার কাজ করছিল আর ঠিক তখনি অপর একটি সিন্ডিকেট তার দলবল সহ এসে হাজির হয় পুকুর থেকে ছাই তোলার দাবি জানিয়ে, তা নিয়েই শুরু হয় ব্যাপক গন্ডগোল।

মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানা গেছে, সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণে ছাই এসে জমা হয় ছাই পুরুরে। আর এখান থেকে প্রতিদিন ১০০-১২০ টি ট্রাকে করে এই ছাই বিভিন্ন পাঠিয়ে দেওয়া হয়ে থাকে। আর একেকটি ট্রাকভর্তি এই ছাইয়ের দাম প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা। প্রতিদিন এভাবে ছাই বিক্রি করে টাকা রোজগার হয় ১ লক্ষেরও বেশি টাকা।

এ প্রসঙ্গে স্থানীয় মানুষেরা জানিয়েছেন যে, ছাই পুকুর থেকে প্রতিদিন লক্ষেরও বেশি টাকা রোজগার করে বিভিন্ন স্থানে এই ছাই বিক্রি করে, কিন্তু ছাই তোলার খরচ ন্যূনতম। তাই যে যত বেশি ছাই এখান থেকে তুলতে পারে, সে ততো বেশি লাভবান হয়। আর এই অল্প সময়ের মধ্যে কোটিপতি হয়ে ওঠে ছাই ওয়ালা।

গত বুধবার ছাই পুকুর থেকে ছাই তোলা নিয়ে দুইপক্ষের সংঘর্ষে ৪ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এই চারজনকে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই তোলার বর্তমান টেন্ডার পেয়েছেন জনৈক মশিউর রহমান।

এই ঘটনা সম্পর্কে তিনি জানিয়েছেন, ” শ্রমিকরা দুপুরে কাজ করছিল। সে সময় হঠাৎ করেই কিছু লোকজন তাদের উপর হামলা চালায়। এলাকার সিন্ডিকেটের সদস্যরা ট্রাক পিছু কখনও ৩০০টাকা আবার কখনও ৫০০টাকা দাবি করে। আবার কখনও কখনও হাজার টাকা দাবি করে। তা দেওয়া সম্ভব নয়। সেকারণেই ওরা বারবার শ্রমিকদের উপর হামলা চালাচ্ছে। আমরা পুরো বিষয়টি জানিয়ে থানায় অভিযোগ করেছি।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

গত বুধবারের গন্ডগোলে আহত হয়ে মেডিকেল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জনৈক শ্রমিক মোঃ আমিরুল সেখ এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেছেন, ” কিছু বোঝার আগেই আট-দশজন এসে আমাদের উপর চড়াও হয়। লাঠি ও রড দিয়ে মারধর করতে শুরু করে। কেন আমরা ছাই তুলছি তার কৈফিয়ত চাইতে থাকে। দীর্ঘদিন ধরেই এই ছাইখাদানে কাজ করছি। এর আগেও হুমকির মুখে পড়েছিলাম। আমরা টাকার বিনিময়ে ছাই তোলার কাজ করি। আমাদের কী অপরাধ তা বুঝে উঠতে পারলাম না।”
এই হামলায় আহত ও হাসপাতালে চিকিতসাধীন অপর এক শ্রমিকের কথায়, ” ওরা লাঠি এবং অন্যান্য আগ্নেয়াস্ত্র হাতেই পুকুরে এসেছিল। এই ছাই পুকুরের দখল নেওয়াই তাদের উদ্দেশ্য ছিল।”

তবে, এই ঘটনায় অভিযুক্ত সাহেব শেখ তার নিজের ওপর ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উল্টে এই ঘটনার জন্য তিনি দায়ী করেছেন মসিউর রহমানকে । এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, খাদান অঞ্চলের কাছে পুছে তাদের ট্রাকের একটি চাকা আচমকা বসে গিয়েছিল। ট্রাকের সেই চাকা তোলার জন্য তারা শ্রমিকদের সাহায্য চেয়েছিলেন।

তিনি অভিযোগ করেছেন, মসিউর রহমান এর শ্রমিকেরা তাদের কোনরকম সাহায্য না করে তাদের লোকজনের ওপর অকস্মাত চড়াও হয় ও তাদের মারতে শুরু করে। তারপরেই সংঘর্ষ বাধে দুই দলের। আর দুই দলের এই সংঘর্ষে আহত হয় ৪ জন। দুই তরফের এরকম সংঘর্ষের কারণে গতকাল বৃহস্পতিবার ছাই পুকুরের থেকে ছাই তোলার কাজ সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করে রাখা হয়েছিল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!