এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > কংগ্রেস > মুকুল নন, বাংলায় এবার ‘কিং মেকার’ হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিলেন মান্নান! নতুন সমীকরণে বাড়ছে জল্পনা

মুকুল নন, বাংলায় এবার ‘কিং মেকার’ হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিলেন মান্নান! নতুন সমীকরণে বাড়ছে জল্পনা


করোনা আবহে কিছুদিন যাবৎ বাংলায় রাজনৈতিক গতিবিধি একটু থমকে থাকলেও, বর্তমানে তা পূর্ণোদ্যমে নতুন করে শুরু হয়ে গেছে। একদিকে রাজ্যের অঘোষিত প্রধান বিরোধী দল বিজেপি রাজ্য কমিটি সাজিয়ে নিয়ে, অমিত শাহকে দিয়ে ভার্চুয়াল সভা করিয়ে ময়দানে নেমে পড়েছে। অন্যদিকে, রাজ্যের শাসকদল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ও পিকের পরামর্শে বঙ্গ রাজনীতিতে নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে নতুন করে ঘুঁটি সাজাচ্ছে।

আর এবার, এই সব কিছুকে পিছিয়ে ফেলে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ সামনে এনে বঙ্গ রাজনীতিকে কার্যত চমকে দিলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ আব্দুল মান্নান। তাঁর নতুন ফর্মুলায় তিনিই বঙ্গ রাজনীতির নতুন ‘কিং মেকার’ হয়ে ওঠার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিলেন। এমনকি, তাঁর পরিকল্পনা যদি কাজে লেগে যায় – তাহলে তিনি কার্যত পিছনে ফেলে দিতে পারেন বঙ্গ রাজনীতির চাণক্য বলে পরিচিত তথা বঙ্গ বিজেপির অন্যতম ভরসা মুকুল রায়কেও!

আর এই সব জল্পনার পিছনে রয়েছে একটি চিঠি – যা মান্নান সাহেব লিখেছেন দলের সর্বভারতীয় সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে। সেখানেই তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের। কি সেই সমীকরণ? মান্নান সাহেব জানিয়েছেন, নিজেদের জনবিরোধী নীতির কারণে বাংলায় প্রতিদিন জমি হারাচ্ছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। ঘাসফুল শিবিরের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের আম জনতার ক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিজেপিও নিজের জনবিরোধী নীতি ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতির কারণে দ্রুত জন সমর্থন হারাচ্ছে বাংলায়।

এরপরেই কার্যত বোমা ফাটিয়েছেন মান্নান সাহেব। তিনি লিখেছেন, বহু বিশিষ্ট মানুষ ও তৃণমূলের মন্ত্রী-বিধায়করা এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের বিকল্প পথ খুঁজছেন। সেই সমস্ত নেতারা একটি পৃথক রাজনৈতিক দল গড়তে চাইছেন। এমন সময় আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে – আমাদের কংগ্রেস ও বামেদের সঙ্গে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ নেতৃত্বকে নিয়ে বিরোধী জোট গঠনে উদ্যোগী হতে হবে। এমন একটি রাজনৈতিক জোট করতে পারলেই একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির উত্থান আটকে তৃণমূল কংগ্রেসকে সরকার থেকে সরানো যাবে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর মান্নান সাহেবের এই চিঠি সামনে আসতেই তীব্র জল্পনা শুরু হয়েছে রাজ্য-রাজনীতিতে। এতদিন শাসকদলের তরফে দাবি করা হচ্ছিল, দলের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকলেও – দলে বড়সড় ভাঙন ধরার মত কোনো পরিস্থিতি নেই। অন্যদিকে, তৃণমূলে ভাঙন ধরা ও সেই সব বিক্ষুব্ধদের বিজেপিতে যোগদান করা নাকি সময়ের অপেক্ষা বলেই দাবি করছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু মান্নান সাহেবের ইঙ্গিত অনুযায়ী, তৃণমূলের একটা বড় অংশ না দলে থাকতে চাইছেন না বিজেপিতে যোগ দিতে চাইছেন।

এদিকে, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পরেই বাংলায় আবারো এক ছাতার তলায় আসার প্রক্রিয়া শুরু করেছে কংগ্রেস-বামফ্রন্ট। ২০১৬ সালে বাংলায় সিপিএম-কংগ্রেসের ঐতিহাসিক মহাজোটের পিছনে আব্দুল মান্নানের ঐকান্তিক চেষ্টা কম ছিল না। এই অবস্থায় যদি সত্যিই এখন বামফ্রন্ট-কংগ্রেস ও বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের নতুন সমীকরণ তৈরী হয় তাহলে অনেক অঙ্কই বাংলায় ঘুরে যাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কেননা, লোকসভা নির্বাচনের পর বিজেপির উপর ক্ষোভ কিছুটা বেড়েছে তা ৩ টি উপনির্বাচনের ফলেই প্রমাণিত।

আর তাই, সত্যিই যদি সোনিয়া গান্ধীকে ধরে আব্দুল মান্নান এই মহাজোট গড়ে ফেলতে পারেন তাহলে তিনিই হয়ে উঠতে পারেন বঙ্গ রাজনীতির নতুন ‘কিং মেকার’। এ ক্ষেত্রে তিনি বঙ্গ রাজনীতির চাণক্য বলে পরিচিত মুকুল রায়কেও টেক্কা দিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। কেননা, বিজেপি এতদিন মুকুল রায়ের উপরেই বাজি ধরেছিল, বিক্ষুব্ধ তৃণমূলীদের গেরুয়াকরণের জন্য। লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি হতাশও করেননি। কিন্তু, এতদিন হয়ে গেলেও এখনও তিনি বিজেপিতে পদ বা মন্ত্রক পান নি।

ফলে, বিক্ষুব্ধ তৃণমূলীদের মনে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, মুকুল রায়ের মত নেতা যদি বিজেপিতে গিয়ে আড়াই বছরেও পদ জোগাড় করতে না পারেন, তাহলে তাঁদের গুরুত্ব ঠিক কতটা হবে! এই অবস্থায়, মুকুল রায় কি নতুন করে বিক্ষুব্ধ তৃণমূলীদের টানতে পারবেন? অন্যদিকে নিজেদের দল হওয়া মানে, সেখানে অনেক স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। এই অবস্থায় আসন সমঝোতা করেই নির্বাচনে যাওয়া যাবে। ফলে, আব্দুল মান্নানের এই পরিকল্পনা অনেক বাস্তবসম্মত বলেই অভিমত বিশেষজ্ঞদের। এখন কংগ্রেস হাইকম্যান্ড এই পরিকল্পনা কতটা বাস্তবায়িত করতে পারে সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!