এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > সাংবাদিকদের বিবস্ত্র করে প্রাণ নাশের হুমকি, অপহরণ মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ায় প্রশাসনিক ভবনে

সাংবাদিকদের বিবস্ত্র করে প্রাণ নাশের হুমকি, অপহরণ মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ায় প্রশাসনিক ভবনে


রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন সাংবাদিকদেরও হেনস্তা এবং বিবস্ত্র করতে ছাড়ছে না।দুই সাংবাদিকের অপহরণের ঘটনা ঘটল খোদ কোলকাতার বুকে আলিপুরে অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রীর এলাকায়,প্রশাসনিক ভবনে এবং অন্য ঘটনাটি দুর্গাপুরে।প্রথম দফায় পঞ্চায়েত মনোনয়নপর্বে ৯ এপ্রিল আলিপুরের প্রশাসনিক ভবনের চৌহদ্দিতে বেধড়ক মারধর করা হয়েছিলো ইংরাজি সংবাদমাধ্যমের এক সাংবাদিককে।তারপর তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের পিছনের এক বস্তিতে।সেখানে তিনঘন্টারও বেশি সময় ধরে তাকে মারধর করা হয় বিবস্ত্র করে এবং পিস্তল বের করে প্রাণনাশেরও হুমকি দেওয়া হয়।হুমকি দেওয়া হয় এটা বলে তাঁর নগ্নতার ভিডিও ফ্যাসবুকে ভাইরাল করে দেওয়া হবে।পরে অনেক কষ্টে সেই চিত্র সাংবাদিকের কয়েকজন সহকর্মী তাকে উদ্ধার করেছিলেন।
সেই একই ঘটনা পুনরাবৃত্তি ঘটল ২৩ শে এপ্রিল। অদ্ভূত যোগসূত্র এটাই যে দুই দিনই সোমবার ছিল।২৩ তারিখকেই বেছে নিয়েছিলো হাইকোর্ট মনোনয়ন জমা দেওয়ার অতিরিক্ত একদিন হিসাবে।সেইমতো জানানো হয়েছিলো সব রাজনৈতিক দল গুলোকে। আলিপুর প্রশাসনিক ভবনে মনোনয়নের খবর সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন আকাশ আট এর মহিলা সাংবাদিক প্রজ্ঞা সাহা এবং আনন্দবাজার পত্রিকার আর্যভট্ট খান।দুজনেই প্রশাসনিক ভবনের গেটের সামনে তৈরি করা দুষ্কৃতিদের ব্যারিকেডের ফাঁক গলে ভেতরে যেতেই প্রজ্ঞা সাহাকে পাকড়াও করে দুষ্কৃতিরা।তারপর তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে ২ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে অন্ধকার ঘরে আটকে রেখে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তারা।সঙ্গে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ফরম্যাটও মেরে দেওয়া হয়।অন্যদিকে আর্যভট্ট খানও নিস্তার পাননি।তাঁকেও দুষ্কৃতিরা প্রশাসনিক ভবনের অন্য খোলা স্থানে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধোর করা হয়। অকথ্য অত্যাচর চলে দুঘন্টা অশ্রাব্য গালিগালাজের সঙ্গে।ছিনিয়ে নেওয়া হয় হাতের ঘড়ি ও মোবাইল,এমনটাই অভিযোগ উঠেছে।আর্যভট্ট খানের সঙ্গে থাকা চিত্র সাংবাদিক আনন্দবাজার অফিসের ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে খবর দিলে তাঁরা পুলিশ পাঠায়।পুলিশের তৎপরতা এবং সক্রিয়তায় উদ্ধার হন ওই দুই সাংবাদিক।কিন্তু অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে যে দুষ্কৃতিদের অপহরণের কথা ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পরও নীরব দর্শকের ভূমিকায় দাঁড়িয়েছিলো তাঁরা ঘন্টা দুয়েক।পরে উদ্ধার হওয়ার পর পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়।ঘটনা গোপন রাখতে হবে এই শর্তেই মুক্তি পেয়েছিলেন প্রজ্ঞা সাহা। অন্যদিকে বিকাশ সাহা বলে এক সাংবাদিকে অপহরণের চেষ্টা করে দুষ্কৃতিরা।তাঁর উপরেও চড়াও হয়ে বেধড়ক মারধোরের অভিযোগ ওঠে।ওই সাংবাদিককে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।রাজ্যের শীর্ষনেতারা এবং শাসকদলের শীর্ষনেতারা ফ্রিডম অফ প্রেস বলে জোর প্রশ্ন তুললেও তার বাস্তবে কোনো নমুনা দেখা যাচ্ছে না পঞ্চায়েত মনোনয়ন পর্বে।বেনজির সন্ত্রাসের আবহে রাজনৈতিক দলনেতাদের সঙ্গে হামলার শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরাও।কয়েক বছর আগে দিল্লিতে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা বিষয়ক সমাবেশে সামিল হয়ে আওয়াজ তুলেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।পাশাপাশি বেঙ্গালোরে যখন সাংবাদিককে খুন হতে হয় দুষ্কৃতীদের হাতে তখন মুখ্যমন্ত্রী তাঁর প্রতিবাদ করেছিলেন অথচ তার পাড়ায় প্রশাসনিক ভবনের চৌহদ্দি থেকে এভাবে সাংবাদিকদের হেনস্থা হতে হল তবু তিনি চুপ কেন ? এই প্রশ্ন কিন্তু সাংবাদিকমহল থেকে রাজনৈতিকমহল সর্বত্র। বিরোধীরাও আঙুল তুলেছেন শাসকদের দিকে।প্রশাসনিক ভবনের প্রবেশদ্বারে পুলিশের বদলে দুস্কৃতিরা কীভাবে ছিল,তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বড় প্রশ্ন।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!