এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > বিধানসভা নির্বাচনের আগে ‘কলঙ্কমুক্ত’ হতে ‘ভাইপোর’ সব দায় ঝেড়ে ফেলতে চায় শীর্ষনেতৃত্ব?

বিধানসভা নির্বাচনের আগে ‘কলঙ্কমুক্ত’ হতে ‘ভাইপোর’ সব দায় ঝেড়ে ফেলতে চায় শীর্ষনেতৃত্ব?


লোকসভা নির্বাচনে দেশজোড়া তুমুল সাফল্যের পরে – গেরুয়া শিবিরের এবার লক্ষ্য বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনেও জয়ের তিলক নিজের কপালে রাখা। যেসব রাজ্যে ইতিমধ্যে পদ্ম ফোটেনি, সেখানেও ঝাঁপিয়ে পড়ার পাশাপাশি – যেখানে ইতিমধ্যেই গেরুয়া আধিপত্য আছে সেখানেও গড় অটুট রাখাই লক্ষ্য নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের। আর এবছর অন্তত তিনটি রাজ্যে গেরুয়া শিবিরের অগ্নিপরীক্ষা হতে চলেছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল – মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা ও ঝাড়খন্ড।

তবে, ঐসব রাজ্যে বিজেপির পাশাপাশি অ্যাসিড টেস্ট হতে চলেছে বিরোধীদেরও। কেননা লোকসভা নির্বাচনে দীর্ঘদিনের বৈরিতা ভুলে, বিরোধী দলগুলি এক ছাতার তলায় এসে নরেন্দ্র মোদিকে প্রধানমন্ত্রীর কুরসী থেকে সরানোর পরিকল্পনা করেছিল। বিরোধীদের সেই প্রচেষ্টা সফল তো হয়ই নি, উল্টে লোকসভা নির্বাচনের পরে শুরু হয়ে গেছে পারস্পরিক কোন্দল। ফলে একে বেহাল সংগঠন, তার উপর গেরুয়া প্রভাব – এই দুই জোড়া ফলার মাঝে পরে, লোকসভার পরে বিধানসভা নির্বাচনেও ভালো ফল করতে না পারলে, আগামীদিনে দল ধরে রাখা নিয়েই সংশয়ে অনেকে।

আর এই পরিস্থিতিতে, গোদের উপর বিষফোঁড়ার মত, মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে, মহারাষ্ট্র কো অপারেটিভ ব্যাঙ্কে কয়েক হাজার কোটি টাকা আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে। এতবড় দুর্নীতি সামনে আসতেই – তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ইডি। আর চাঞ্চল্যকরভাবে সেই দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ার, তাঁর ভাইপো অজিত পাওয়ার সহ মোট ৭০ জনের। বিরোধীদের হয়ে, একটা প্রচার তোলার চেষ্টা হচ্ছে – এই অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং নির্বাচনে জেতার জন্যই বিজেপি নাকি এইসব করছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু, তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই দুর্নীতিতে নাম জড়ানোর পরেই এনসিপি থেকে তড়িঘড়ি ইস্তফা দিয়েছেন এনসিপির অন্যতম শীর্ষ নেতা তথা শরদ পাওয়ারের ভাইপো অজিত পাওয়ার। যদিও, সেই ইস্তফার কারণ কি সেই নিয়ে মুখ খোলেননি কেউই। সবথেকে বড় কথা সেই ইস্তফাপত্র গৃহীতও হয়েছে। পার্টি সুপ্রিমো হিসাবে শরদ পাওয়ার সেই ইস্তফা গ্রহণ করলেও, আশ্চর্যজনকভাবে তিনি জানিয়েছেন – এই ইস্তফার কারণ নাকি তিনি জানেনই না! কারণ না জেনে তাহলে ইস্তফা গ্রহণ করা হল কেন? সেই ব্যাপারে অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন শরদ পাওয়ার।

এই ব্যাপারে এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ার জানিয়েছেন, অজিত ইস্তফা দেওয়ার আগে কারোর সঙ্গে কোনও পরামর্শ করেননি। তাই কেন অজিত ইস্তফা দিলেন সে সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারনা আমার নেই। এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে অজিতের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা যায়নি। যে কোনও সিদ্ধান্তে আমিই পরিবারের শেষ কথা। সে কারণেই অজিতের পদত্যাগ গ্রহণ করেছি। ইডির এই তদন্ত নিয়ে আমি বিন্দুমাত্র ভীত নই। এই নিয়ে পরিবারের অন্দরেও কোনও বিবাদ নেই।

তবে, শরদ পাওয়ার যতই ব্যাপার ধামাচাপা দিতে চান, মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে অন্য কথা! ব্যাঙ্ক দুর্নীতি কাণ্ডে শরদ পাওয়ারের সঙ্গে ভাইপো অজিত পাওয়ারের নাম জড়ানোর পর থেকেই নাকি পরিবারের অন্দরে গণ্ডগোল শুরু হয়ে গিয়েছিল।মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই কেলেঙ্কারির দায় যতই বিজেপির ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা হোক – পাল্টা এই নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে বিজেপি-শিবসেনা জোট চেপে ধরবেই। সংগঠনে ভাঙনের ফলে দল এমনিতেই চাপে, সেখানে পাওয়ার পরিবারের জোড়া সদস্যের নাম এত বড় দুর্নীতিতে জড়িয়ে যাওয়ায় – এনসিপি যথেষ্ট চাপে।

আর তাই, নির্বাচনের আগে দলকে কলঙ্কমুক্ত করতেই নাকি তড়িঘড়ি অজিত পাওয়ারকে ইস্তফা দিতে বলে হয়। সেখান থেকেই পারিবারিক বিবাদের শুরু। তবে শরদ পাওয়ারের মত হেভিওয়েটের চাপের কাছে নাকি শেষপর্যন্ত টিকতে পারেননি অজিত পাওয়ার – একরকম বাধ্য হয়েই ইস্তফা দেন। আর এরপরেই অজিত পাওয়ারের ইস্তফা নিয়ে নিজেকে ‘উদাসীন’ দেখাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এনসিপি সুপ্রিমো। এমনকি এনসিপি শীর্ষনেতৃত্ত্বও এই ব্যাপারে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছেন। ফলে মহারাষ্ট্র রাজনীতিতে এখন কোটি টাকার প্রশ্ন একটাই – বিধানসভা নির্বাচনের আগে ‘কলঙ্কমুক্ত’ হতেই কি ‘ভাইপোর’ সব দায় ঝেড়ে ফেলতে চায় এনসিপি শীর্ষনেতৃত্ব?

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!