এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > পরিযায়ীদের নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য অব্যাহত! শতাব্দীর পর এবার বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূল বিধায়ক

পরিযায়ীদের নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য অব্যাহত! শতাব্দীর পর এবার বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূল বিধায়ক


ভিন রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা রাজ্যে ফেরার পর নানারকম অসুবিধার কারণে তাদের নানারকম দাবি নিয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। এরইমধ্যে সম্প্রতি তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, “পরিযায়ী শ্রমিকদের জামাই আদর করা সম্ভব নয়।” এরপরই সাংসদ শতাব্দী রায়কে ঘিরে নানা রকম বিতর্ক শুরু হয়। সূত্রের খবর, এরপরেই তাঁকে তীব্র আক্রমনের রাস্তায় হাঁটছেন বিরোধী দলের নেতারা।

বিরোধীদের বক্তব্য, “তিনি ঠাণ্ডা ঘরে থাকেন, ঠান্ডা গাড়িতে ঘোরেন তাই পরিযায়ী শ্রমিকরা কি কষ্টের মধ্যে রয়েছে এবং কি ভাবে কষ্ট করে ফিরেছে সে বিষয়ে তার কোনো জ্ঞান নেই তাই জন্যই এত সহজে এমন মন্তব্য করতে পেরেছেন তৃণমূল সাংসদ।” শতাব্দী রায়ের বিরুদ্ধে এমন বিতর্কের ঝড় কিছুটা কম হতে না হতেই ফের পরিযায়ী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কড়া মন্তব্য করে শিরোনাম এলেন হাওড়ার পাঁচলা বিধানসভার বিধায়ক গুলশান মল্লিক। ফের পরিযায়ী শ্রমিকদের খাদ্য ব্যবস্থা নিয়ে বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা হলো রাজ্যের শাসক দলের তরফে।

জানা গেছে এদিন গুলশান মল্লিক পরিচয় শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন, “আমরা শ্রমিকদের যথাসাধ্য খাবার-সহ নানা পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। সকালে টিফিন, ভাতের সঙ্গে দুপুরে কখনও ডাল-সবজি তো কখনও ডিম-মাছ দিচ্ছি। সন্ধেয় মুড়ির সঙ্গে চপ-বেগুনি। রাতে ভাতের সঙ্গে সবজি। আর কী দেব? আমরা কি ওদের জন্য আমিনিয়া থেকে বিরিয়ানি আনব? আমরা যা দিচ্ছি তা যদি কারও ভাল না লাগে, তাহলে তাঁদের বাড়ির লোক খাবার দিয়ে যেতে পারে।”

প্রসঙ্গত, পরিযায়ী শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণ হিসাবে রাজনৈতিক কোনো উস্কানি আছে কিনা এ বিষয়ে এর আগে শতাব্দী রায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান বলে জানা গেছে। কিন্তু তৃণমূল বিধায়ক গুলশান মল্লিক সরাসরি গেরুয়া শিবিরের দিকে কটাক্ষ করে বলেছেন, “বিজেপির উষ্কানিতে লোকেরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। বিজেপি কঠিন সময়ে প্রশাসনের পাশে না দাঁড়িয়ে শুধু রাজনীতি করে চলেছে। মানুষ দেখছে তৃণমূল কীভাবে তাঁদের পাশে রয়েছে। আমার নিজের ছেলেরা ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছে। মানুষ বিজেপির সংকীর্ণ রাজনীতির জবাব সময়ে দিয়ে দেবে।”

রাজ্যের শাসকদলের মতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিকরা পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য যথাসম্ভব সুবিধা প্রদানের চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু বিজেপি শিবিরের পক্ষে তা মেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলেই একের পর এক উস্কানি দিয়ে তারা এলাকায় বিক্ষোভের পরিস্থিতি তৈরি করছে। প্রসঙ্গত মন্ত্রী নির্মল মাজি এদিন বিজেপির কোর্টে বল ঠেলে দিয়ে বলেন, “এই সংকটকালে বিজেপি দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করছেন। বিভিন্ন জায়গায় ইচ্ছে করে গণ্ডগোল করছে। মানুষ সচেতন বলে তা রুখে দিচ্ছেন।”

জানা গেছে এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই আমতা-১ পঞ্চায়েত এলাকার সভাপতি সুকান্ত পাল গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন। তাঁর কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার করোনা পরিস্থিতি, আমফান পরবর্তী পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। যাদের বাড়ি, কৃষি, মাছ-সহ নানা সম্পদ নষ্ট হয়েছে তাঁদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেছে। আগামী দিনেও দাঁড়াবে। মানুষ বিজেপির ঘৃণ্য রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করবেই।” সূত্রের খবর গুলশান মল্লিকের এমন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধী শিবিরে নানা সমালোচনার ঝড় ওঠে।

এদিকে গুলশন মল্লিকের বক্তব্য দল যে সমর্থন করছেন তা স্পষ্ট যেহেতু দলীয় বিধায়ক পুলক রায়, সমীর পাঁজা, অরুণাভ সেন, ইদ্রিশ আলি, আবদুল গনি‌ প্রত্যেকেই সমগ্র বিষয়টিতে বিজেপির হাত রয়েছে বলে জানিয়েছেন। সূত্রের খবর তাদের প্রত্যেকেরই ধারণা অনুযায়ী শ্রমিকদের যথেষ্ট পরিমাণে খাদ্য সরবরাহ ছাড়াও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করা হচ্ছে। তৎসত্ত্বেও পরিযায়ী শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে তৃণমূল সরকারকে পড়তে হচ্ছে। এর কারণ হিসাবে বিজেপি নেতা কর্মী সমর্থকদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে হাত রয়েছে বলে মনে করছেন তারা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!