এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > অবশেষে রাজ্যপালে আস্থা ব্রাত্যর! আদালত কড়া হতেই চুপসে গেলেন শিক্ষামন্ত্রী?

অবশেষে রাজ্যপালে আস্থা ব্রাত্যর! আদালত কড়া হতেই চুপসে গেলেন শিক্ষামন্ত্রী?


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- অবশেষে কি এবার লাইনে হাঁটতে চলেছেন রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু? এতদিন তো উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালকে যা নয় তাই বলে গিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। কখনও ফাঁসুরে, কখনও বিচারক, বিভিন্ন ভাষায় রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছে ব্রাত্য বসুকে। কিন্তু এবার সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকার, রাজ্যপাল এবং স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের জন্য তিন থেকে পাঁচটি নাম জমা করতে বলা হয়েছে। আর তারপরেই রাজ্যপালকে নিয়ে সুর নরম করতে দেখা গেল শিক্ষা মন্ত্রীকে। ঘটনার গতি প্রকৃতি দেখে তেমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রসঙ্গত, উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে যে সংঘাত তৈরি হয়েছিল, এবার তাতে হস্তক্ষেপ করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী 25 সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাজ্য সরকার, রাজ্যপাল এবং ইউজিসিকে তিন থেকে পাঁচটি নাম আদালতের কাছে জমা দিতে হবে। আর এরপরেই সরগরম হয়ে উঠেছে শিক্ষা মহল। উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য বনাম রাজ্যপালের যে সংঘাত এতদিন চলছিল, তাতে ছেদ পড়ে গেল। প্রমান হয়ে গেল, কোনো পক্ষই বড় নয় শেষ কথা বলবে শীর্ষ আদালত।

এদিন এই ব্যাপারে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমার রাজ্যপালের সঙ্গে বসতে কোনো অসুবিধা নেই। আমরা তো বারবার বলছি, আমরা আলোচনা চাই। আমার রাজ্যপালকে নিয়ে কোনো ইগো নেই।” আর শিক্ষামন্ত্রী এই বক্তব্য দেখেই অনেকে বলছেন হঠাৎ করেই কেন এত পরিবর্তন? এতদিন যে ব্যক্তি সকালে, বিকালে, দুপুরে সাংবিধানিক প্রধানকে আক্রমণ করতেন, তিনিই কিনা এখন আলোচনার টেবিলে বসার ইচ্ছা প্রকাশ করছেন?

বিরোধীদের দাবি, এই রাজ্য সরকার বরাবর সব জায়গায় দখলদারি এবং গা জোয়ারি করে নিজেদের হাতে ক্ষমতা রাখতে চায়। শিক্ষা ব্যবস্থাকেও তারা সেভাবেই পরিচালিত করতে চেয়েছিল। কিন্তু রাজ্যপাল অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সঠিক পথে আনতে চেয়েছিলেন। আর শেষ পর্যন্ত আদালতের হস্তক্ষেপে ইউজিসি, রাজ্য সরকার এবং রাজ্যপালের কাছে তিন থেকে পাঁচটি নাম স্থায়ী উপাচার্যের জন্য চাওয়া হয়েছে।

আর এতেই চাপে পড়ে গিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। কেননা বিরোধীরা বলছেন, রাজ্য সরকার উপাচার্য হিসেবে তাদের নামই পাঠাবে, যাদের দিয়ে কাজ করাতে সুবিধা হয় শাসকদলের। কিন্তু এক্ষেত্রে রাজভবন এবং ইউজিসির প্রস্তাব আলাদা হতে পারে। আর রাজভবন এবং ইউজিসি, দুজনেরই নাম যদি মিলে দেয় এবং তা যদি রাজ্য সরকারের বিপক্ষে চলে যায়, তাহলে আগামী দিনে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে কার্যত শাসকদলের রাশ আলগা হওয়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। অন্তত তেমনটাই দাবি বিরোধীদের।

পর্যবেক্ষকদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের এদিনের নির্দেশের পর এমনিতেই উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে যথেষ্ট চাপে রয়েছে রাজ্য সরকার। কারণ একটা জিনিস অত্যন্ত সত্যি যে, ইউজিসির সঙ্গে রাজভবনের পাঠানো নামের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সাদৃশ্য থাকতে পারে। আর তাতেই কাবু হয়ে যেতে পারে রাজ্য সরকার‌। তাই তা আঁচ করতে পেরেই শেষ পর্যন্ত যে রাজ্যপালকে এতদিন এত কথা শুনিয়েছেন, সেই রাজ্যপালের ব্যাপারেই সুর নরম করতে দেখা গেল শিক্ষামন্ত্রীকে। তবে একতরফা কদর্য আক্রমণ যে রাজভবন ভোলেনি, সময় অনুযায়ী যে তার পদক্ষেপও নেওয়া হবে, তা হয়তো মনে মনে পুষিয়ে রেখেছেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানও। তাই এখন শিক্ষামন্ত্রী নরম গদগদ কথা বললেও রাজভবন তাকে কতটা গ্রহণ করবে, সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!