এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > নারী নির্যাতনে এগিয়ে বাংলা ! বিদেশে গিয়েও নম্বর ওয়ানের অহমিকা মমতার !

নারী নির্যাতনে এগিয়ে বাংলা ! বিদেশে গিয়েও নম্বর ওয়ানের অহমিকা মমতার !


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- 2011 সালে ক্ষমতায় আসার এক মাস পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, তার সরকার যে কাজ করে দিয়েছে, তা নাকি আগামী 300 বছরের কেউ করতে পারবে না। সামাজিক সুরক্ষা যোজনা দিয়ে, ভাতা ভর্তুকি দিয়ে, নারীদের সুরক্ষা দিয়ে নাকি সেরার সেরা পশ্চিমবঙ্গ! প্রত্যাশিতভাবেই এবার বিদেশে গিয়েও সেই একই বড়াই করতে দেখা গেল বাংলার প্রশাসনিক প্রধানকে। পশ্চিমবঙ্গে তার সরকার কি কি কাজ করেছে, সেই তথ্য তুলে ধরতে গিয়ে নিজের জালে নিজেই জড়িয়ে পড়লেন বাংলার স্বনামধন্যা মুখ্যমন্ত্রী। বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে তিনি দাবি করলেন, নারী সুরক্ষায় পশ্চিমবঙ্গ নাকি এক নম্বরে। শুধু তাই নয়, সামাজিক সুরক্ষা প্রদানেও বাংলার স্থান নাকি সবার আগে! আর এই কথা দর্শক আসনে বসে থাকা বিদেশের নামিদামি ব্যক্তিরা তা হজম করতে পারেন। কিন্তু টেলিভিশন চ্যানেলে এই দৃশ্য দেখে রীতিমতো মাথা কুটছে বাংলার আমজনতা।

প্রসঙ্গত, 12 দিনের জন্য বিদেশ সফরে গিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধীরা বলছে, ছুটি কাটাতেই মুখ্যমন্ত্রীরে এই বিদেশ সফর। তবে রাজ্য সরকার অবশ্য তাতে রাগ প্রকাশ করে বলছেন, ছুটি নাকি কাজ, সেটা সময় হলেই দেখতে পাবে বিরোধীরা। আর তার মাঝখানেই মুখ্যমন্ত্রী বিদেশের মাটি থেকে দাঁড়িয়ে দাবি করলেন, কন্যাশ্রী থেকে শুরু করে লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্প চালু করে রাজ্যে মেয়েদের সুরক্ষা দিয়েছে সরকার। এক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ নাকি এক নম্বরে! তবে মুখ্যমন্ত্রী এই কথা বলছেন কি করে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, রাজ্যে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসে প্রচুর বিজেপি কর্মীরা ঘরছাড়া। সেই সব পরিবারেও অনেক মহিলা রয়েছেন। তারা তৃণমূলের ভয়ে আজও অনেকে বাড়িতে প্রবেশ করতে পারছেন না, এটাই কি বাংলার নারী সুরক্ষা! তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর কামদুনি থেকে কুমারগঞ্জ, পার্কস্ট্রীট থেকে উত্তর দিনাজপুর, সর্বত্র একের পর এক মেয়েদের নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। যার বিচার চাইতে গিয়ে পুলিশের ধমকের মুখে পড়তে হয়েছে অনেককে। ফলে এই সুরক্ষার কথাই কি বিদেশের মাটি থেকে বলতে চেয়েছেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।

একাংশ বলছেন, সব জায়গায় নিজে কি করে সেরা হওয়া যায়, নিজে কি করে এক নম্বরে থাকা যায়, তার মরিয়া চেষ্টা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যবাসী চুলোয় যাক, তাতে তার কিছু এসে যায় না। তিনি কতটা প্রচার পেলেন, এতেই সবথেকে বড় মনোযোগ প্রশাসনিক প্রধানের। বিরোধীরা মার খাচ্ছে, তাদের ঘর পুড়ছে, তাদের বাড়ির মেয়েদের সম্মানহানি হচ্ছে, এতে তো সরকারের কিছু এসে যায় না। কারন সরকার বাহাদুরের প্রধান কর্তা ব্যক্তিরা তো বিদেশে গিয়ে ছুটি কাটাচ্ছেন! তাদের কাছে এইসব পরিবারকে সহানুভূতি দেওয়ার মতো সময়টুকু নেই। তাই নিজেকে খবরের শিরোনামে নিয়ে আসতে বাংলার কন্যাশ্রী এবং লক্ষীর ভাণ্ডারের কথা বলে নারী সুরক্ষার দাবি করে বসলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু যে লক্ষীর ভান্ডার দিয়ে তিনি গোটা পরিবারকে কার্যত পঙ্গু করে দিচ্ছেন, বেকারদের চাকরি না দিয়ে বাড়ির মহিলাদের পাঁচশো, হাজার টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখতে চাইছেন, যুব সমাজকে পথে বসাচ্ছেন, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য শুনে কার্যত হতাশ রাজ্যবাসী।

পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর পার্কস্ট্রীট ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। যে প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, এটা নাকি ছোট ঘটনা। যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় রাজ্যজুড়ে। পরবর্তীতে কামদুনির ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী এলাকায় গেলে সুবিচার চাইতে যান কিছু মহিলা। আর সেই সময় তাদের বিরোধী তকমা পর্যন্ত দেন এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে সেই মমতা বন্দোপাধ্যায় বিদেশ থেকে দাঁড়িয়ে বাংলায় নারী সুরক্ষা নিয়ে বড় বড় কথা বলবেন, আর সেটা সাধারণ মানুষ হজম করে নেবে, তা অন্তত সরল মনে মেনে নিচ্ছে না বিরোধীরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!