এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > তৃণমূলের নিয়োগ দুর্নীতি, দলের মধ্যেই বিরোধ চরমে! অস্বস্তি বাড়িয়ে MLA-এর দাবি উড়িয়ে দিলেন MP

তৃণমূলের নিয়োগ দুর্নীতি, দলের মধ্যেই বিরোধ চরমে! অস্বস্তি বাড়িয়ে MLA-এর দাবি উড়িয়ে দিলেন MP


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – 2021 এর বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, শাসকদলের বিরুদ্ধে আক্রমণের সুর তত চড়াচ্ছে বিরোধীরা। করোনা পরিস্থিতিতে রেশনিং দুর্নীতি থেকে শুরু করে ঘূর্ণিঝড় আমফানের পর ত্রাণ বিলি পর্যন্ত সবকিছুতেই বিরোধীরা আওয়াজ উঠিয়েছে শাসকদলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, শাসকদলের দুর্নীতি কিন্তু কমার বদলে বেড়ে যাচ্ছে বলে মত বিরোধী দলগুলির।

সম্প্রতি আবারও একটি দুর্নীতি সামনে আসে রাজ্যের শাসকদলের। আর তাই নিয়ে রীতিমতো উত্তাল হয়ে উঠল হুগলি জেলার চুঁচুড়া শহর। তবে এই দুর্নীতি নিয়ে শুধুমাত্র বিরোধীরাই নয়, শাসক দলের মধ্যেও দুই গোষ্ঠীর কোন্দল ধরা পড়েছে বলে জানা যাচ্ছে। 2019এর শুরুতেই চুঁচুড়া পৌরসভার পিয়ন ও মজদুর নিয়োগ করা হবে বলে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেই অনুযায়ী পয়লা মার্চ পরীক্ষা নেওয়া হয়।

জানা যায়, মাত্র 76 টি পদের জন্য পরীক্ষায় বসেছিলেন প্রায় 10 হাজার প্রার্থীর কাছাকাছি। 4 দিনের মধ্যেই ফল প্রকাশ হয় এবং 300 জনকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য বেছে নিয়ে ডাকা হয় কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে। কিন্তু এর পরেই আসে দুর্নীতির স্পষ্ট চিত্র। নিয়োগ প্যানেল বের হওয়া মাত্রই দেখা যায় ওই তালিকায় 22 নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর সৌমিত্র মালাকার এর নাম রয়েছে। শুধু তাই নয়, বেশ কিছু কাউন্সিলরের আত্মীয় থেকে শুরু করে শাসকদলের ঘনিষ্ঠ, এমন বেশ কিছু জনের নাম রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। আর তার পরেই শুরু হয়ে যায় বিরোধী দলের তুমুল বিক্ষোভ।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সোমবার সকাল থেকে চুঁচুড়া পুরসভার গেটে প্রথমে পুরসভার অস্থায়ী শ্রমিকরা প্রবল বিক্ষোভ দেখান বলে জানা গেছে। এরপরে দফায় দফায় বিজেপি ও সিপিএম সমর্থকরা এলাকায় হাজির হন এবং একযোগে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। অন্যদিকে অবশ্য চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার এ প্রসঙ্গে প্রাথমিকভাবে জানান, সরকারি নিয়ম মেনে নিয়েই এই নিয়োগ করা হয়েছে। কোনোরকম দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়নি। যদি কেউ কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে চান তাহলে হাইকোর্টে গিয়ে যেন মামলা করা হয়। কিন্তু এই পুরো ব্যাপারটি সামনে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি জানিয়ে দেন, কর্মী নিয়োগে অস্বচ্ছতা রয়েছে।

শুধু তাই নয়, এ ব্যাপারে পুর ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়ে দিয়েছেন, এই নিয়োগ পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে। আর এখান থেকেই শুরু হয়েছে শাসকদলের অন্দরের গুঞ্জন। দুই তৃণমূল নেতার মুখে দু’রকম কথা শোনার পর খুব স্বাভাবিক ভাবেই বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে দলীয় কর্মীদের মধ্যে। যদিও হুগলীতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বহুল পরিচিত রাজনৈতিক মহলে বলে শোনা যায়। অন্যদিকে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হুগলি জেলার বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘‘নিয়োগ বাতিল হওয়াতে প্রমাণ হল যে দুর্নীতি হয়েছিল। এই নিয়োগ নিয়ে বিজেপি সরব হওয়াতেই তা বাতিল করতে হল।”

এদিন লকেট চট্টোপাধ্যায় আরো দাবি করেন, চুঁচুড়া পৌরসভা ছাড়াও রাজ্যের অন্যান্য পুরসভাতেও কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে চূড়ান্ত দুর্নীতি চলছে শাসকদলের। করোনা পরিস্থিতির আগে ঠিক ছিল রাজ্যজুড়ে পুরভোট সম্পন্ন হবে মার্চ মাসে। কিন্তু তার আগেই রাজ্যজুড়ে পুরসভা গুলিতে কর্মী নিয়োগ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। আর তাই নিয়ে শুরু হয় দুর্নীতি চক্র বলে দাবি করছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি।

অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, চুঁচুড়া পৌরসভার দুর্নীতি যেভাবে সর্বসমক্ষে এসে পরল এবং নিয়োগ-পদ্ধতি বন্ধ হয়ে গেল, তা নিয়ে কিন্তু সাধারণ মানুষের মনে অবশ্যই প্রশ্ন জাগবে এবং শাসক দলের প্রতি বিরূপ মনোভাব পড়তে পারে। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ এক্ষেত্রে শাসকদলের অন্য একটি দিকও উল্লেখ করেছেন। তাঁদের মতে, শাসক দল এবার একটি ভালো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তাঁরা বরাবরের মতো দুর্নীতি ধামাচাপা না দিয়ে পুরো ব্যাপারটি প্রায় খোলসা করেছেন সর্বসমক্ষে। আপাতত প্রশ্ন উঠেছে, শাসকদলের দুর্নীতি নিয়ে যেভাবে রাজনৈতিক জল্পনা হচ্ছে, তাতে কি এবার শাসক দল নড়েচড়ে বসল? তাই কি দুর্নীতির সত্য রূপায়ণ হুগলীতে?

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!