এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > অকালে প্রেমের বোধন – কলমে – অপরাজিতা , অন্তিম পর্ব

অকালে প্রেমের বোধন – কলমে – অপরাজিতা , অন্তিম পর্ব


এবার অভি আর গুঞ্জাকে চোখে চোখে রাখছে টুম্পা আর রিম্পা। একসঙ্গে দুজনকে দেখলেই এই একসঙ্গে থাকতে নেই সরো ।
গুঞ্জাকে ধমকেছে কেন গিয়েছিলে ভাইয়ের কাছে ? ভাইয়ের ক্ষতি করতে চাও? জুঁই বলেছে অভিকে। রিম্পা পুজোর উপাচারে কিছু অসুবিধা হলেই কথা শোনাচ্ছে গুঞ্জাকে। নিজে পটের বিবি সেজে বসে আছে।

এত শাড়ী, নুপুর এত কিছু দেখে মেজো পিসি অনুপমাকে বলছে – ছেলে হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে , নজর রাখো। সে ভালোমানুষ হুমম, না,  ও কিছু নয় বলে ধমক খেয়েছে।

সেজপিসি বলেছে – ঘটি ছিল না ঘটি হলো , জল খেয়ে খেয়ে বাছা মোলো।
আর কত দেখবো।

সপ্তমীর সকালে সেজপিসি, মেজপিসিকে একচোট দিয়েছে অভি। মজার ছলেই । গুঞ্জা আর রিপনদার বৌ শিউলি মালা গাঁথছে। দুজনের খুব ভাব হয়ে গেছে দেখে সেজপিসি বলেছে — বাব্বা এদের জায়ে জায়ে ভাব দেখো, আমাদের তো এত ছিল না।

অভি – তোমার কি হিংসা হচ্ছে?

মেজপিসি – এই তুই চুপ কর। তুই বৌ ছাড়া কিছু দেখতে পাচ্ছিস না।

অভি – যা বাবা, ওরা যদি এই উঠোনে ঝাঁটা হাতে করে মারপিট করতো সেটা ভালো লাগতো?

গোটা বাড়ির লোক হেসে লুটোপুটি খেয়েছে।

সেজপিসি শুরু করেছিল – ওই কথা বলেছি ? তোর সবেতেই। ……….

কথা শেষ হতে না দিয়েই মেজপিসির ছোট ছেলে শুভদা বলেছে এর একটা এক্সট্রা ঝাঁটা প্লিজ। আমরাও এসে গেছি। আমার বউও জয়েন করবে। তারা সেইমাত্র ঢুকেছে , মা, মাসিকে চেনে সে । বিষয়টাকে হালকা করেছে।

সপ্তমী হৈ হৈ করে কেটেছে। সব বৌদের আত্মীয় স্বজনদের খুব পছন্দ হয়েছে গুঞ্জাকে। খুব ভালো মেয়ে, দেখতেও যেমন সুন্দর, মেয়েও তেমনই ভালো। অভি কপাল করেছে। না আর অভির রাগ হয়নি। এখন সত্যি নিজেকে লাকি মনে হয়। দেখে তো সব মেয়েদের মাটিতে পা পরে না। গুঞ্জার একফোঁটাও রূপ নিয়ে গর্ব নেই। অবশ্য মুখ বেঁকিয়েছে কয়েকজন। নাম আর বলার দরকার নেই।

রিম্পা এর মধ্যে অভিকে বলতে এসেছিলো যে – গুঞ্জাকে যা বলছে করছে না। লোকের সামনে মাথা কাটা যাচ্ছে। অভি বলেছে ও তো জানে না সব , তুই করে দে না।
না কিছুতেই হচ্ছে না বস করে ফেলেছে অভিকে। আর সেই রাগটাই গুঞ্জার উপর বর্ষাচ্ছে রিম্পা।

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

 

অষ্টমীর সকালে অনুপমা গুঞ্জাকে বললো – তুই অভির জন্য যে পাঞ্জাবিতে কাজ করেছিস সেটা বের করে দে ও সেটাই পড়বে।

গুঞ্জার হাতের সেলাই দেখার মতো। এর মধ্যে ঠাকুমা, মা, ছোটমাকে ব্লাউস, দাদুভাই, বাবা, কাকুকে রুমাল , পুচকি আর জুঁইকে সেলোয়ার আর ফ্রকে এমব্রয়ডারি করে দিয়েছে। আর অভির জন্য একটা পাঞ্জাবিতে করেছে। অনুপমা আর সুপ্রিয়াই বলেছিলো।

গুঞ্জা উপরে গেলো , অভির এখন তিনতলায় ঠাঁই হলেও অভি দোতলায় নিজের ব্যাগ নিয়ে কিছু একথা করছিলো। গুঞ্জা পাঞ্জাবি বের করে দিলো।

অভি জানে না। সে জিজ্ঞাসা করলো এটা দেখতে দারুন তো কে কিনেছে ছোটমা? ছোটমার পছন্দ দেখার মতো।

গুঞ্জা বললো – হুম। টি শার্ট ছেড়ে এটা মা এটা পড়তে বললো।

রিম্পা ঘরে এসে চোটপাট চেচাচ্ছে। তোমাকে মানা করেছিলাম না। অভি থাকলে তার সামনে যাবে না , কেন এসেছো? একটা অকল্যাণ না বাধালে হয় না না।
গুঞ্জা ভয়ে ভয়ে বলতে গেলো – অভি গুঞ্জার হাতটা ধরে বললো – তুই এখন যা রিম্পাদি। এক ঘন্টা আমাদের ডিসটার্ব করবি না। আমরা এখন ফুল সজ্জা করবো।

রিম্পা – কি ? বলছি দাঁড়া বাড়িতে।

গুঞ্জা অভির হাত থেকে নিজের হাতটা ছাড়াতে প্রানপনে চেষ্টা করতে করতে বললো – দিদিভাই যেওনা।

অভি – হ্যাঁ যা সবাইকে বল , যেন আমাদের ডিসটার্ব না করে।
গুঞ্জা এসবে অভ্যস্থ নয়, তার বাড়িতে প্রেম, ভালোবাসা এসব বড়দের সামনে বলা পাপ, সেখানে ফুলসজ্জা র কথা। মুখটা লাল হয়ে গেছে গুঞ্জার।

রিম্পাদি – অকল্যাণ হয়ে গেলো, সর্বনাশ হয়ে গেলো করে চেঁচাতে চেঁচাতে ছুটলো। এই সুযোগ কিছুতেই হাতছাড়া করবে না।

গুঞ্জা – ছাড়ো, দিদিভাই উল্টোপাল্টা বলবে।

অভি – আগে প্রমিস করো – তোমাকে ধমকালে , বা আমাদের একসাথে থাকা নিয়ে কিছু বললে – তুমি পাল্টা জবাব দেবে। বলবে – আমাদের মাঝে আসবে না ,আমাদের ব্যাপার আমাদের বুঝতে দাও। , যদি না বলো আমি সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো। গুঞ্জা সম্মতি জানিয়ে নিচে গেলো ।

পুজো একটু পরেই শুরু হবে। সবাই নিচে আছে।

রিম্পার চেঁচানি শুনে জিজ্ঞাসা করলো – কি হয়েছে – রিম্পা অভির কথা বলেছে। বাড়ির দাদা বৌদির হো হো করে হাসছে।

ছোট পিসে আর কাকু বসে ছিল। ছোট পিসে কাকুকে বলেছে – ছোট কর্তা কিছু বুঝছো?

ছোট কাকু – ছেলে ট্রাকে ফিরছে।

রিম্পা এবার দিদিমা, মামিমাদের, মাসিদের বোঝাতে গেছে। মাসিরা সর্বনাশ হয়ে গেলো করে বাড়ি মাথায় তুললো।
ঠাকুমা – ওকি কথা গো, এখনো যে খ্যানের পুজো হয়নি।

অনুপমা – ছোট তুই গিয়ে দেখ। আমার ছেলেকে বিশ্বাস নেই। কোনো নিয়ম মানে না।

সুপ্রিয়া – তুমি অভিকে চেনো না। রিম্পাকে জ্বালানোর জন্য কিছু বলেছে। আর তোমরা সেটাকে নিয়ে।

জুঁই – ওই তো বৌমনি। রিম্পাদি কার সাথে দাদাভাই ফুলসজ্জা করছে? ফালতু চেঁচিয়ে বাড়ি মাথায় করছিস।গুঞ্জার ভীষণ লজ্জা করছে।

আমি মিথ্যা বলিনি। অভি এলে ওকে জিজ্ঞাসা কর। এই গুঞ্জা অভি বললো না – এক ঘন্টা আমাদের ডিসটার্ব করবি না। আমরা এখন ফুল সজ্জা করবো।

গুঞ্জা কোনো সাড়া দিলো না। মাথা নামিয়ে রইলো।

অভি আসতেই ওকে রিম্পা বললো – এই তুই বললি না যে আমি আর গুঞ্জা এখন ফুল সজ্জা করবো, তুই আমাদের এক ঘন্টা ডিসটার্ব করবি না.

অভি – আমি কখন বললাম – তুই তো বললি যা, তোরা ফুলসজ্জা কর, কেউ ডিসটার্ব করবে না ,তুই ব্যাপারটা দেখবি। আমি বললাম আমাদের একসঙ্গে থাকতে নেই।

জুঁই – স্বভাবটা বদলা না , নিজের কথা গুলো লোকের মুখে বসাস কেন?

রিম্পা – অভি আমাকে মিথ্যাবাদী বলবি না। নিজে বলে আমার নামে বলছিস কেন ?

অভি – যা বাবা তুই যা বলি তাই বললাম , বানিয়ে কি বলবো।

রিম্পা – এই গুঞ্জা। ……………

ওদিক থেকে চুপ করুন পুজো শুরু হচ্ছে।

গোটা বাড়িতে পাঞ্জাবির গুণগান চলছে। অভিও ইতিমধ্যে জেনেছে কার হাতের ছোঁওয়ায় পাঞ্জাবি এমন হয়েছে।

খ্যানের পুজো এবারে সন্ধেতেই হয়েছে, প্রাসাদ দেওয়ার সময় অভি দেখলো গুঞ্জাকে ফের ধমকাচ্ছে রিম্পা। কাছে গিয়ে শুনলো – রূপ দেখিয়ে বেশ তো বশ করেছো অভিকে আমাদের চিনতে পারছে না , ঝগড়া করছে। আমাকে মিথ্যাবাদী বললো সবার সামনে তুমি মজা দেখছিলে। বলতে পারলে না। সত্যি টা।

রিম্পার ধমক এবার এতটাই জোরে ছিল অনেকেই দেখছে কি হচ্ছে। গুঞ্জা দেখেছে অভি রিম্পার পিছনে। অভি চোখের ইশারা করে গুঞ্জাকে পাল্টা দিতে বললো। গুঞ্জা ,মাথা নাড়ছে।
অভি – বলো , নাহলে আমি চলে যাবো এখুনি।

গুঞ্জা – দিদিভাই মানে ,,আমি

অভি – সরি সবাইকে আমার আর থাকা হলো না আমি আসছি।
চলে যাচ্ছে অভি।

গুঞ্জা একটু আটকে আটকে বললো
– দিদিভাই তুমি আমাদের মাঝে আসবে না। আমাদের ব্যাপার আমাদের বুঝতে দাও।

রিম্পা এটার জন্য প্রস্তুত ছিল না। বললো – এত বড় সাহস তোমার , হা ঘরে বাড়ির মেয়ে, কপাল জোরে এই বাড়িতে পরে ধরাকে সরা জ্ঞান করছো। অসভ্য ,ছোটোলোক মেয়ে। তুমি আম  ……………………….

অভির বাবা জোরে ধমক দিয়ে উঠলো – রিম্পা – মুখ সামলা, গুঞ্জা আমার বাড়ির বৌ। ওর সম্পর্কে একটা খারাপ কথা বলবি না আর।

রিম্পা থামার মেয়ে নয়। সে বললো – হুম এখন তো ও আপন হবে। আমি মা মড়া মেয়ে । আমার মা থাকলে এটা হতো না বলে কাঁদতে লাগলো।
সঙ্গে সঙ্গে মাসীরা , টুম্পা এসে সামলাতে লাগলো। চুপ কর মা।

অভি – দাড়াও। রিম্পাকে বললো অনেক চেষ্টা করেও যখন আমাকে আর গুঞ্জাকে আলাদা করতে পারলি না , পারছিস না তখন গুঞ্জাকে ধমকে ছোট করে, অপমান করে ঝাল মেটাচ্ছিস ?

রিম্পা – কি আলাদা করতে চেয়েছি ? তোর বৌ সব বানিয়ে মিথ্যা বলেছে।

অভি – কে বলেছিলো – শিখা মামীমাকেকে বলেছিলো যে গুঞ্জাকে বিয়ে করে আমার ভাগ্য খুলে গেছে, বর্তে গেছি আমি।

রিম্পা – আমার আর মনে নেই।

কাকু – কি হয়েছে ? এবার এক এক করে রিম্পার সব কথা বললো অভি।

মেজপিসি -ও বলে ফেলেছে না হয়। তাতে পুজোর দিনে এইসব, চুপ কর।

অভি – দাড়াও কথা ঘোরাবে না। ছোটোলোক কে গুঞ্জা না তুই ?
কি বলেছিস? আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি, তার সঙ্গেই একসঙ্গে রুম শেয়ার করে থাকি। আমি একটা লম্পট। চেঁচিয়ে উঠলো অভি ?
গুঞ্জা সেটা সত্যি মনে করেছিল। ভাগ্য ভালো ও কিছু করে ফেলেনি।

বাড়ির বাকিরা – কি বলছিস?

রিম্পা – আমি ও কথা বলিনি। গুঞ্জার দিকে তেড়ে গিয়ে মিথ্যাবাদী, কখন তোমাকে গলা জড়িয়ে বলতে গেছি।

অভি – ওর গায়ে হাত দেবার চেষ্টাও করবি না। মেজপিসি? তোমাকে বলেনি ও? মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে মিথ্যা বোলো না, মা সব শুনছে।

মেজপিসি – হ্যাঁ বলেছিলো। ও এত জানতো না। ছোট মেয়ে বলে ফেলেছে।

আর কিছু শুনবে তোমরা ওর কীর্তি?

(দাদুর শরীর খারাপের সময় যখন অভি এসেছিলো বিয়েতে রিম্পার কীর্তির কথা শুনেছে অভি। ) আমি তোকে কবে বলেছিলাম যে আমার বৌয়ের মতো শাড়ী আমি তোকে দেব? নিয়েছিস ভালো কথা। নিজের বেলা ১৮০০০-১৯০০০ এর আর গুঞ্জা যে কনে তার জন্য ওই ৪০০০-৫০০০ রের ?

বাড়ির সবাই ছি ছি করছে। করারই কথা।

এবার বৌয়ের হয়ে এগিয়ে এলো রিম্পার বর – কি ভুল করেছে রিমি? (ওর বর ওই নামেই ডাকে।) রূপ থাকলেই হয়না। কি যোগ্যতা আছে গুঞ্জার এই বাড়ির বৌ হওয়ার। কাল একবারে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে সব বুঝে গেলে, দিদি এত খারাপ। দিদি ভালো করতেই গিয়েছিলো।

অভি – দাদাভাই – গুঞ্জাকে নিয়ে একটা ফালতু কথা বলবেন না। আমি তাহলে আপনার মান রাখতে পারবো না।

দাদুভাই এগিয়ে এসে বললো- কে বলেছিলো ভালো করতে। প্রশান্ত আমি গুঞ্জাকে এই বাড়িতে এনেছি অভির বৌ করে। ও এই বাড়ির লক্ষী। গুঞ্জা আমার বাড়ির বৌ তাকে সম্মান দিয়ে কথা বলবে।

রিম্পা এবার রাগে গজরাতে গজরাতে বললো – খুব তো বড় বড় কথা বলছিস? বৌয়ের হয়ে আমার সঙ্গে ঝগড়া করছিস? তোদের বিয়েটা আদেও বিয়ে। জোর করে কোনো মতে বিয়ে করেছিস? মন থেকে বিয়ে হয়েছে তোদের? আর কদিন এই বিয়ে টেকে দেখবো।

অভি আর রাগ করলো না – বললো – ভালো কথা বলেছিস?

দাদুভাই – আমি আজকে এখুনি গুঞ্জকে বিয়ে করতে চাই? সেদিন সত্যি দায়ে পরে বিয়ে করেছিলাম। আজ মন থেকে ওকে ভালোবেসে বিয়ে করতে চাই তুমি অনুমতি দাও। দাদু পুরোহিতমশাই এর দিকে তাকালেন।

কিন্তু এখন বিয়ে করতে চায় শুনে রে রে করে উঠলো মেজপিসি, সেজপিসি। এখন বিয়ে করবে কি? হিন্দু শাস্ত্র মতে আশ্বিন মাস মল মাস। তার উপরে পুজোর অষ্টমী।

পুরোহিত মশাই ও জানেন গায়ে হলুদ থেকে বিয়ে সবটাই। অনুমতি দিলেন , বললেন – মা নিজেই চাইছেন আজকে ফের বিয়ে হোক নাহলে বিয়ের কথা উঠবে কেন?
বিয়ের তোড়জোড় শুরু করুন। পুজোবাড়ি বিয়েবাড়ি হয়ে উঠলো।
ছোট পিসে বাড়ির ছেলেপিলেদের কথা মতো – স্বশুরমশাইকে বলেছেন – বাবা বলছি, ওদের ঘরটা একটু ফুল দিয়ে সাজালে হয়না।
সম্মতি মিলেছে।

রিম্পা আর ওর বর চলে যাচ্ছিলো , মেজপিসি, সেজপিসি, ঠাকুমা আটকেছে। তবে সত্যিই যেত কিনা তা নিয়ে সন্দেহ ছিল অভির।

সুপ্রিয়া গুঞ্জাকে একটা জাম রঙের বেনারসি দিয়েছিলো পুজোতে , সেটা , গয়না আর চন্দন সাজে গুঞ্জা ফের বিয়ের কনে হয়ে উঠলো। ফের বিয়ে শুরু হলো। এবার দুজনের মতে, শুভদৃষ্টি ,মালাবদল সিঁধুরদান সব হলো।

মেজপিসি, সেজপিসি বলছে – এমন তো কোনো কালে দেখিনি বাবা।

ছোটপিসে – যা হচ্ছে হতে দিন না। মায়ের বোধন ও তো অকালেই হয়েছিল। তেমন ওদেরও ‘ অকালে প্রেমের বোধন ‘ হলো।

খোওয়াদাওয়া করে ঘরে ঢুকলো অভি – গুঞ্জা। গুঞ্জা খাটের হাতল ধরে দাঁড়িয়ে রইলো। অভি দরজা বন্ধ করে বললো – যা ফের বাদুড় কথা থেকে এলো ?
গুঁজে ভয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে অভির কাছে গিয়ে বললো – কোথায়?

অভি – এখানে বলে জড়িয়ে ধরলো। তারপর বললো- সরি ফুলসজ্জার দিন খুব খারাপ বিহেভ করেছি।

গুঞ্জা – এতদিন আমাদের কালরাত্রি ছিল , আজ আমাদের ফুলসজ্জা। বলে ও জড়িয়ে ধরলো অভিকে। দুজনে দুজনায় মিশতে থাকলো।

নবমীর সকালে রিম্পার বর ক্ষমা চেয়ে বললো – আমার আপনাদের বাড়ির ব্যাপারে কথা বলা উচিত হয়নি। রিম্পা বললো – ভুল হয়ে গেছে।
অভি জানে এগুলো সব নাটক। যদি মামারবাড়ি থেকে সব বন্ধ হয়ে যায়। কেননা অনেকবার ধরা পড়েছে আর প্রত্যেকবার এমন নাটক করেছে। অনুপমা অভি আর গুঞ্জকে মাকে প্রণাম করতে বলে বললো – ঠাকুর মশাই আশীর্বাদ করুন যেন সামনে বছর ছেলে কোলে নিয়ে মায়ের সামনে এই দাঁড়ায়।

অভি – মা ফের শুরু করবে না। কু ডাকবে না বলে দিচ্ছি।

ঠাকুমা – ও মা হয় বলে ফেলেছে, তুমি রাগ করো না আর বলবে না।

অভি – তুমি মায়ের সঙ্গে তাল দেবে না বলে দিচ্ছি।

সুপ্রিয়া – আচ্ছা ঠিক আছে – দিদিভাই ওসব পরে হবে। এখনো ২ বছর পর।

অভি – ৫ বছর পর।

অনুপমা , ঠাকুমা। ৫ বছর?

অভি – হুম

পুজো মিটেছে অভি আর গুঞ্জা ব্যাঙ্গালুরুতে যাচ্ছে। এয়ারপোর্টে অভি গুঞ্জাকে একটা চিপসের প্যাকেট দিলো।গুঞ্জা – খাবো না গা গলাচ্ছে ?

অভি – চমকে উঠে- কি? মানে ?

গুঞ্জা- স্ট্রবেরি খেলে আমার গা গোলায়। বলেছিলাম তো খাবো না আইস ক্রিম।

অভি – সিওর? স্ট্রবেরির জন্য ?

গুঞ্জা – যা। ………………..

অভি ভয়ে ভয়ে আছে। মা কু ডেকেছে। সাবধানে থাকতে হবে। আর যদি কিছু হয় মাকে দিয়ে গুঞ্জাকে নিয়ে ব্যাঙ্গালুরুতে চলে আসবে। মা মানুষ করবে।

না এখনো অবধি কিছু হয়নি। হলে আপনাদের অবশ্যই খবর দেব।

 

আগের পর্ব — অকালে প্রেমের বোধন – কলমে – অপরাজিতা , পর্ব ১৩

 

আমাদের অন্য গল্প পড়তে ক্লিক করুন — অপরাজিতা

খুব শীঘ্রই আসছি অন্য কোনো প্রেম কাহিনী নিয়ে। ততক্ষন ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।

 

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!