এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > ভয় দেখিয়ে আমপানের টাকাতেও কাটমানি আদায় করছেন প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা! সামনে বিস্ফোরক অভিযোগ

ভয় দেখিয়ে আমপানের টাকাতেও কাটমানি আদায় করছেন প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা! সামনে বিস্ফোরক অভিযোগ


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – দলের তরফে দুর্নীতি বন্ধ করবার জন্য কড়া বার্তা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও নেতারা কিছুতেই শোধরাচ্ছেন না‌। যার ফলে অস্বস্তি বাড়ছে তৃণমূল কংগ্রেসের। এমনিতেই ভয়াবহ দুর্যোগে ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে নানা তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। আর এবার সেই দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের থেকে ক্ষতিপূরণের 6000 টাকা নিয়ে বাকি 14000 টাকা হাতিয়ে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ উঠল।

জানা গেছে, ক্যানিং 2 ব্লকের নারায়নপুর পঞ্চায়েতের দক্ষিণ মাকালতলা গ্রামের বাসিন্দা ইয়াকুব লস্করের মাটির বাড়ি ভয়াবহ দুর্যোগের ফলে ভেঙে যায়। ক্ষতি হয় এডবেস্টারের। আর এরপরই সরকারের তরফে ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার জন্য ক্যানিং 2 ব্লক অফিসে তিনি আবেদন করেন। যার পরবর্তীতে সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা হিসেবে কুড়ি হাজার টাকা তার ব্যাংকে চলে আসে। এমনকি নিজের ঘর মেরামতির জন্য সেই টাকা তিনি দোকানে দিয়ে দেন। তবে এর মাঝেই সেই টাকা হাতাতে উদ্যোগী হয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান সালাউদ্দিন সর্দার বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, নারায়নপুর পঞ্চায়েতের প্রধান সালাউদ্দিন সর্দার তার 2 অনুগামীকে পাঠিয়ে ইয়াকুব লস্করকে কুড়ি হাজার টাকা দেওয়ার জন্য হুমকি দেয়। টাকা না দিলে দেখে নেওয়া হবে বলেও হুমকি দেয়া হয়। এমনকি সরকারি আবাস যোজনা প্রকল্পে তাকে ঘরের টাকা দেয়া হবে না বলেও সাধারণ সেই বাসিন্দাকে হুমকি দেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের অনুগামীরা। আর এরপরই ইয়াকুব লস্কর পঞ্চায়েত প্রধানের সাকরেদদের 6000 টাকা দেন। তবে পরবর্তীতে আরও 14 হাজার টাকা দেওয়ার জন্য পঞ্চায়েত প্রধান ইয়াকুব সর্দার চাপ দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে গোটা ঘটনা নিয়ে সেই তৃনমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে মহকুমা শাসকের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন ইয়াকুব লস্কর। এদিন তিনি বলেন, “আমপানে আমার মাটির বাড়ির অ্যাসবেস্টসের চাল ভেঙে গিয়েছে। বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্লক অফিসে গিয়ে বার বার আবেদন করার পরে ক্ষতিপূরণের কুড়ি হাজার টাকা পেয়েছি। পঞ্চায়েত প্রধানের লোকজন আমার বাড়িতে এসে হুমকি দিচ্ছে। আমি ধার করে প্রধানকে 6000 টাকা দিয়েছি। তার পরেও বাকি টাকা আমার কাছে চাওয়া হচ্ছে। নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।”

যেখানে বারবার প্রশাসন এবং তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নিচুতলার কেউ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হবেন না, সেখানে কেন হতদরিদ্র মানুষের টাকা আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান? এদিন এই প্রসঙ্গে অভিযুক্ত পঞ্চায়েত প্রধান সালাউদ্দিন সর্দার বলেন, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আমাকে বদনাম করতে এসব বলা হয়েছে। আমি কয়েকদিন ধরে অসুস্থ। দীর্ঘদিন ধরে ঘুটিয়ারি শরীফ এলাকায় হিরোইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছি‌। তাদেরই কেউ আমার বদনাম করতে এসব করছে। আমি কখনও কারও কাছ থেকে টাকা চাইনি।”

কিন্তু তাহলে কি হতদরিদ্র ইয়াকুব লস্কর মিথ্যে কথা বললেন? কিন্তু তিনি মিথ্যে কথা বলবেন কেন? গরিব মানুষের একটু সাহায্যের প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে তিনি সাহায্য পেলে আবার দুর্নীতির অভিযোগ করতে যাবেন কেন? তাহলে নিশ্চয়ই দুর্নীতি হয়েছে, আর তাই তিনি পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন! এখন তা নিয়ে সরব হতে শুরু করেছে বিরোধীরা। যদিও বা এই প্রসঙ্গে ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা বলেন, “এই ধরনের কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। সেই মত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি পরিষ্কার বলে দিয়েছি, আমার বিধানসভা এলাকায় কোনো দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তৃণমূলের নানা জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। তৃণমূলের তরফে কড়া বার্তাও দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তারপরেও যেভাবে সেই টাকায় ভাগ বসাতে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুললেন এক হতদরিদ্র সাধারণ মানুষ, তাতে ঘাসফুল শিবিরের ওপর চাপ আরও বাড়ল। এখন গোটা ঘটনার তদন্ত করে তৃণমূল নেতৃত্ব এই ব্যাপারে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত প্রধানের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় কিনা, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!