এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > কংগ্রেস > আমপানের টাকায় তৃনমূল নেতাদের পকেট যেন না ভরে; একযোগে কেন্দ্রীয় দলকে অনুরোধ বিজেপি-বাম-কংগ্রেসের

আমপানের টাকায় তৃনমূল নেতাদের পকেট যেন না ভরে; একযোগে কেন্দ্রীয় দলকে অনুরোধ বিজেপি-বাম-কংগ্রেসের


রাজনৈতিক মতাদর্শ তাদের আলাদা থাকলেও, শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের কাছে অভিযোগ এক তাদের। সম্প্রতি রাজ্যের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আমপান। যে ঝড়ের দাপটে বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন এলাকা। আর ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় এর ফলে বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার জন্য প্রথম থেকেই কেন্দ্রের কাছে অর্থনৈতিক দাবি-দাওয়া করতে দেখা গেছে রাজ্য সরকারকে। ভয়াবহ দুর্যোগের পরেরদিনই রাজ্যে এসে সরকারকে সাহায্য করার কথা বলে আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল রাজ্য পরিদর্শন করে রিপোর্ট জমা দিলে আরও অর্থ দেওয়া হবে বলেও আভাস দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আর সেইমত সম্প্রতি রাজ্যের এই ভয়াবহ দুর্যোগের ক্ষতির ব্যাপারটি দেখতে বাংলায় পা রেখেছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। আশা করা হচ্ছে, তারা সমস্ত রিপোর্ট নিয়ে গিয়ে কেন্দ্রের হাতে তুলে দেবেন এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রাজ্যকে এই ভয়াবহ দুর্যোগের জন্য আরও আর্থিকভাবে সাহায্য করা হবে।

আর এই বিষয় নিয়ে যখন কিছুটা হলেও আশাবাদী রাজ্য সরকার, ঠিক তখনই কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করতে দেখা গেল বিজেপি, বাম এবং কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলকে। সূত্রের খবর, শুক্রবার ভয়াবহ দুর্যোগের বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করার পর আলিপুর হোটেলে রয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। এদিন সেখানে গিয়েই তাদের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপির দিলীপ ঘোষ, সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী এবং কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রায় তিন রাজনৈতিক দলের নেতাদেরই বক্তব্য ছিল, ভয়াবহ দুর্যোগে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রাজ্যকে আরও অর্থ দেওয়া হলেও, সেই অর্থের যেন উপযুক্ত ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ শাসক দলের নেতারা যেন সেই অর্থ নিয়ে কোনরূপ ছিনিমিনি খেলতে না পারে, তার ব্যাপারেই কেন্দ্রের এই প্রতিনিধি দলকে অভিযোগ জানিয়েছে তিন রাজনৈতিক দলের নেতারা বলে খবর। এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, “একটা মোবাইল অ্যাপস বা ওয়েবসাইট করা হোক। যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ তাদের অভিযোগ করতে পারেন। বিডিও, পঞ্চায়েত অফিস কোথাও অভিযোগ নেওয়া হচ্ছে না। মানুষগুলো যাবেন কোথায়!”

এদিন তিনি আরও বলেন, “গতকাল মুখ্যমন্ত্রী তাঁর দলকে ভোটের প্রস্তুতি শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তার মানে কি উনি গন্ধ পেয়ে গিয়েছেন টাকা আসবে! এবার দলকে বলে দিলেন লুট করতে নামো।” পাশাপাশি কেন্দ্রের দেওয়া টাকা ঠিকমতো বিলি হচ্ছে কিনা এবং বাধ মেরামতির কাজ ঠিকমত হচ্ছে কিনা, তা দেখবার জন্য এক বছরের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে একজন নোডাল অফিসার নিয়োগ করা নিয়েও দাবি তুলতে দেখা যায় ভারতীয় জনতা পার্টিকে।

একইভাবে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সেই একই অভিযোগ করে রাজ্য বিধানসভার কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, “এই রাজ্যে কাটমানি নেওয়াটাকে বর্তমান শাসকদল সংস্কৃতি করে ফেলেছে। তা যাতে আটকানো যায়, কেন্দ্রীয় সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে।” অন্যদিকে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীও।

এদিন তিনি বলেন, “এখানে টাকা আসা মানেই তৃণমূল নেতাদের পকেটে ভরবে। কাটমানি যাতে শাসকদল না খেতে পারে, তার বন্দোবস্ত করতে হবে। এই বিপদকে একা রাজ্যের পক্ষে সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। কেন্দ্রকেই সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে। কিন্তু এটাও নিশ্চিত করতে হবে, টাকা আসল ক্ষতিগ্রস্তদের কাছেই যেন যায়। তৃণমূলের নেতারা যেন গরিবের টাকায় থাবা বসাতে না পারে।”

অর্থাৎ বামফ্রন্ট, বিজেপি এবং কংগ্রেস তিন রাজনৈতিক দল কেন্দ্রের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দেখা করে শাসকদলের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করায় এখন রাজ্যের শাসক দল ব্যাপক চাপে পড়ল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও বা তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিরোধীদের এই বক্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তাদের পাল্টা দাবি, আসলে এই তিন রাজনৈতিক দলই বাংলার মানুষের শত্রু। এরা মানুষের বিপদের সময় রাজনীতি করতে নেমেছে। এর থেকে লজ্জার আর কিছু হয় না।

কিন্তু তৃণমূলের পক্ষ থেকে যে কথাই বলা হোক না কেন, যেভাবে বাংলার ভয়াবহ দুর্যোগের আর্থিক সাহায্য করা নিয়ে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং সেই আর্থিক সাহায্যের প্যাকেজের টাকা যাতে তৃণমূলের ছোট নেতাদের পকেটে না ঢোকে, তার ব্যাপারে যেভাবে কেন্দ্রীয় টিমের কাছে অভিযোগ করল বাংলার তিন বিরোধী রাজনৈতিক দল। যার ফলে তৃণমূল এখন অনেকটাই চাপে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!