এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > বিজেপি > অমিত শাহের এক মাস্টারস্ট্রোকেই বিফলে গেল তৃণমূলের ভোটকূশলী প্রশান্ত কিশোরের সব চাল?

অমিত শাহের এক মাস্টারস্ট্রোকেই বিফলে গেল তৃণমূলের ভোটকূশলী প্রশান্ত কিশোরের সব চাল?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিগত লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় 42 এ 42 এর আওয়াজ তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বাস্তবে তার সেই আশা পূর্ণ হয়নি। উল্টো 22 টি আসন পেয়েই আটকে গিয়েছিল তৃণমূলের বিজয় রথ। অন্যদিকে 18 টি আসন পেয়ে তৃনমূলের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। আর এর পরেই 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের ক্ষমতা দখল করতে বিখ্যাত রাজনৈতিক রণনীতিকার প্রশান্ত কিশোর।

যাকে রাজনৈতিক পরামর্শদাতা করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এর পেছনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগ ছিল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক মহল। পরবর্তীতে এই প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শ অনুযায়ী তৃণমূল কংগ্রেস পথ চলে খুব একটা নিরাশ হয়নি। লোকসভা নির্বাচনের পর রাজ্যের তিনটি বিধানসভা উপনির্বাচনে ব্যাপকভাবে জয় পায় তৃণমূল কংগ্রেস। যার মধ্যে ছিল কালিয়াগঞ্জ, করিমপুর এবং খড়গপুর বিধানসভা কেন্দ্র। শুধু তাই নয়, এই প্রশান্ত কিশোরের উদ্যোগে “দিদিকে বলো” থেকে শুরু করে “বাংলার গর্ব মমতা” কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে তৃণমূল কংগ্রেসকে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে শুরু করেন।

আর সেই প্রশান্ত কিশোর ছাড়াও লোকসভা নির্বাচনের আগে এবং পরে তৃণমূলের যে সমস্ত নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তারা আবার প্রশান্ত কিশোরের রাজনৈতিক কৌশলে যোগ দিতে শুরু করেন তৃণমূল কংগ্রেসে। যার ফলে প্রশান্ত কিশোরকে ঘিরে একটা তীব্র আগ্রহ এবং ভরসার জায়গা তৈরি হয়েছিল শাসকদলে। এদিকে প্রশান্ত কিশোর যখন তৃণমুলের শ্রীবৃদ্ধির চেষ্টা করছেন, ঠিক তখনই মুকুল রায়কে নিয়ে একটি জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে বঙ্গ রাজনীতিতে।

যেখানে নানা মহলের তরফে শুনতে পাওয়া যায় যে, মুকুল রায় বিজেপি ছেড়ে যোগদান করবেন তৃণমূল কংগ্রেসে। আর এই জল্পনা ছড়ানোর পেছনে দুটো বড় কারণ রয়েছে বলে মনে করে একাংশ। প্রথমত তৃণমূলের এক মুখপাত্র তথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এক যুব নেতা তিনি তার ফেসবুক পেজে বারবার এই দলবদল নিয়ে জল্পনার কথা শুনিয়ে এসেছেন। যেখানে একবার 4 সাংসদ এবং একবার সাত সাংসদ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করছেন বলে দাবি করেন তিনি। আর শেষে “একটি বটগাছ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করতে চলেছেন” বলে দাবি করেছিলেন সেই তৃণমূল কংগ্রেসের যুব নেতা। যার পরবর্তী সময়কালে মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করতে পারেন বলে নানা মহলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।

শুধু তাই নয়, তৃণমূলের এক রাজ্যসভার সাংসদ মুকুল রায়ের সঙ্গে দু-দুবার বৈঠক করেছেন সেই খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে যাওয়ার সাথে সাথে জল্পনা ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। আর পরপর এই রকম রাজনৈতিক ঘটনা যখন গুঞ্জনের দিকে যেতে শুরু করেছিল, তখন অনেকেই ভেবেছিলেন, এর পেছনে প্রশান্ত কিশোরের সূক্ষ্ম মস্তিষ্ক রয়েছে। অর্থাৎ এমত পরিস্থিতিতে মুকুল রায়ের তৃণমূলে ফিরে আসার ঘটনায় তৃণমূলের যারা বিজেপিতে যোগদান করবেন বলে মনস্থির করেছিলেন, তারা তাদের সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে যান।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কেননা যে মুকুল রায়ের ভরসায় তারা বিজেপিতে যোগদান করতে চেয়েছিলেন, সেই মুকুল রায় যদি আবার তৃনমূলে ফিরে আসেন, তাহলে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কি হবে, তা ভেবে তারা তৃণমূল কংগ্রেসেই থেকে যান বলে খবর। আর মুকুল রায় যে বিজেপি ছেড়ে অন্য কোথাও যাচ্ছেন না বা যাওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই, তার ব্যাপারে সাংবাদিক বৈঠক করে স্পষ্ট ভাষায় তা জানিয়ে দেন তিনি। আর মুকুল রায়ের এই দলবদলের জল্পনা প্রশান্ত কিশোরের মাথা থেকে বেরিয়েছে এবং তার ফলে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান অনেকটাই আটকানো সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেছিল রাজনৈতিক মহল।

তবে বর্তমানে বিজেপির সর্বভারতীয় সংগঠনে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। শনিবার সর্বভারতীয় বিজেপি সহ-সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেই মুকুল রায়কে। যার ফলে মুকুল রায়ের অন্য কোনো দলে যাওয়া তো দূর অস্ত, উল্টে বিজেপিতে তার গুরুত্ব অনেকটাই বাড়িয়ে দেওয়া হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আর এখানেই রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছেন, যে সমস্ত নেতারা এতদিন অনুভব করেছিলেন যে বিজেপিতে গেলে কোনো পদ পাওয়া যাবে না, মুকুল রায়কে দল দীর্ঘ পরীক্ষার পর সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়ে কার্যত প্রমাণ করে দিল যে, বিজেপিতে যদি কেউ পারফরম্যান্স করে, তাহলে তাকে দল যোগ্য সম্মান দেবে।

অনেকে আবার এটাও বলছেন, মুকুল রায়কে বড়সড় পদ দিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় চাণক্য অমিত শাহ যারা বিজেপিতে বাড়িয়েও তিন পা পিছিয়ে ছিলেন, তাদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করলেন। অর্থাৎ বিজেপির নিয়ম এবং শৃঙ্খলা মেনে যদি কেউ অন্য দল থেকে গেরুয়া শিবিরে যোগদান করেন এবং ভালো পারফর্ম্যান্স করেন, তাহলে তাকে দল যোগ্য মর্যাদা দেবে।

স্বাভাবিকভাবেই প্রশান্ত কিশোরের মস্তিষ্কপ্রসূত পরিকল্পনায় এতদিন যেভাবে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগদান আটকে ছিল, অমিত শাহের বড়সড় পদক্ষেপ এবং মুকুল রায়ের বড় পদপ্রাপ্তির ফলে সেই সম্ভাবনা বন্ধ হয়ে গেল। যার ফলে এবার মুকুল রায় খেলা ঘোরাতে শুরু করবেন এবং প্রশান্ত কিশোরের সমস্ত স্ট্র্যাটেজি ভেস্তে যাবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল মহল‌।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!