প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বর্তমানে রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর দলবদল জল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। দল এবং সরকারের সঙ্গে ক্রমাগত দূরত্ব বজায় রাখতে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের এই শীর্ষ নেতাকে। সম্প্রতি নন্দীগ্রামে তিনি উপস্থিত থাকলেও সেখানে তৃণমূলের নাম নিশান নিতে দেখা যায়নি শুভেন্দুবাবুকে। যার ফলে জল্পনা ক্রমশ বেড়েছে। এমনকি তার বিভিন্ন ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য তার দলত্যাগের দিকেই ইঙ্গিত করছে বলে দাবি করছেন একাংশ।

আর এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দু অধিকারীর অরাজনৈতিক ব্যানারে সভা এবং সেই সভায় পতাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি না থাকা নিয়ে মন্তব্য করলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। যেখানে শুভেন্দু অধিকারীর এইরকম সভাকে নিজেদের কৌশল বলে দাবি করলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি। যার ফলে নতুন করে গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে বাংলার রাজনৈতিক মহলে।

সূত্রের খবর, বুধবার লাভপুরে তৃণমূলের পক্ষ থেকে কর্মীসভার আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে উপস্থিত ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। আর সেই সভাতে গিয়েই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শুভেন্দু অধিকারী সম্পর্কে মন্তব্য করেন তৃণমূল কংগ্রেসের এই হেভিওয়েট নেতা। অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “শুভেন্দু তো বিজেপিতে যাওয়ার কথা বলেননি। সে তৃণমূলেই আছে। কেন বলব তার সম্পর্কে! সে তো বিজেপি করেনি বা বিজেপিতে যোগ দেয়নি। আমিও অনেক সময় ফ্ল্যাগ ছাড়া মিটিং করি।”

এরপরেই তিনি জল্পনা বাড়িয়ে বলেন, “এটা আমাদের কৌশল হতে পারে।” আর এখানেই একাংশের প্রশ্ন, যদি এটা শুভেন্দু অধিকারীর কৌশলই হয়, তাহলে সেই কৌশল কেন প্রকাশ্যে এই রকম মন্তব্য করে বুঝিয়ে দিলেন অনুব্রত মণ্ডলের মত বিচক্ষণ নেতা! বিশেষজ্ঞদের দাবি, আসলে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে ব্যাপক চাপে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই তিনি যখন অরাজনৈতিক সভা করছেন এবং মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামটুকুও নিচ্ছেন না, তখন কার্যত চাপে পড়েই এটা তাদের কৌশল হতে পারে বলে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করলেন অনুব্রত মণ্ডল।

বিশ্লেষকদের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর তৃণমূল কংগ্রেসের যদি সব থেকে বেশি কেউ জনপ্রিয় হয়ে থাকেন, তাহলে তার নাম শুভেন্দু অধিকারী। তিনি যদি দলত্যাগের মত সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস যে সবথেকে বড় ধাক্কা খাবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এই কঠিন সত্যটা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রায় সমস্ত স্তরের নেতাকর্মীরাই বুঝে গিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে জল্পনার পারদ যখন ক্রমশ বাড়ছে, ঠিক তখনই এই ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়েছিল বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে।

তবে অনুব্রতবাবু শুভেন্দু অধিকারী সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে যে বক্তব্য সামনে আনবেন, তা নিয়ে নতুন করে গুঞ্জন তৈরি হতে শুরু করেছে। তাহলে কি সত্যি সত্যিই শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তৃনমূলের দূরত্ব শুধুমাত্র নাটক ও লোক দেখানো! নাকি ড্যামেজ কন্ট্রোলের জন্যই “এটা তাদের কৌশল” বলে দাবি করলেন অনুব্রত মণ্ডল! এখন তা নিয়েই জোরালো চর্চা শুরু হয়েছে বাংলার রাজনৈতিক মহলে। সব মিলিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে এই মন্তব্য কতটা বাস্তব, তা আগামী দিনেই প্রমাণিত হয়ে যাবে বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের।