অশোক ভট্টাচার্য না বলতেই শাসকদলের অন্দরে চর্চা শিলিগুড়ির মাথায় বসছেন কোন হেভিওয়েট? উত্তরবঙ্গ কলকাতা রাজ্য May 16, 2020 করোনা ভাইরাসের কারণে এখন সমস্ত কিছু স্থগিত রয়েছে। যার কারণে মেয়াদ উত্তীর্ণ সমস্ত পৌরসভাগুলোতে প্রশাসক বসানোর পথে হেঁটেছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই কলকাতার মত পৌরসভায় অতীতে এই নজির না থাকলেও, এবার সেখানে প্রশাসক বসানো হয়েছে।যেখানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পৌরসভার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের উপর। আর কলকাতা পৌরসভায় এই সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়ার পরই বিরোধীদের পক্ষ থেকে তীব্র আপত্তি শোনা যায়। যেখানে বিরোধীরা দাবি করে, সরকার এবং শাসক দল নিজেদের হাতে পৌরসভার ক্ষমতা রাখার জন্য ফিরহাদ হাকিমকে সেখানে প্রশাসক পদে বসিয়েছে। তবে কলকাতা পৌরসভায় রাজ্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই রাজধর্ম পালনের বার্তা দিতে দেখা যায় রাজ্য সরকারকে। যেখানে বিরোধীদের দখলে থাকা একাধিক পৌরসভায় সেই পৌরসভায় মেয়রকেই প্রশাসক করানোর সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। যার মধ্যে অন্যতম শিলিগুড়ি পৌরসভা। দীর্ঘদিন ধরে এই পৌরসভা বামেদের দখলে আছে। যেখানে মেয়রের দায়িত্ব সামলেছেন অশোক ভট্টাচার্যর মত হেভিওয়েট নেতা। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - সূত্রের খবর, শুক্রবার প্রশাসক নিয়োগের নির্দেশিকা জারির দু’ঘণ্টার মধ্যেই সেই বোর্ডের দায়িত্বভার গ্রহণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দেন অশোক রঞ্জন ভট্টাচার্য। জানা গেছে, শিলিগুড়ি পৌরসভায় প্রশাসক বোর্ডের মাথায় রেখে সেই বোর্ডের 12 জন সদস্য রাখা হয়েছিল। যেখানে বিদায়ী ডেপুটি মেয়র সহ পাঁচ সদস্য এবং বিরোধী দলনেতা সহ তৃণমূলের চারজন কাউন্সিলরকে রাখা হয়েছিল। তবে এই ঘটনাকে কটাক্ষ করে সেই পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা জানান শিলিগুড়ি পৌরসভার বিদায়ী মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “রাজ্যের অনেক পৌরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সর্বত্রই বিদায়ী মেয়র বা চেয়ারম্যান, ডেপুটি মেয়র বা ভাইস চেয়ারম্যানদের প্রশাসক বোর্ডে রাখা হয়েছে। কিন্তু এখানে প্রশাসক বোর্ডে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের 5 জন কাউন্সিলরকে রাখা হয়েছে। কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল! রাজ্যের অন্যান্য পৌরসভার ক্ষেত্রে এক নিয়ম, আর শিলিগুড়ির ক্ষেত্রে আরেক নিয়ম, এটা মানা যায় না। এখানে শিলিগুড়িবাসীকে অপমান করা হয়েছে। তাই রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে প্রশাসক বোর্ডে বসার প্রস্তাব গ্রহণ করছি না।” এদিকে অশোক রঞ্জন ভট্টাচার্য এই কথা বলে প্রশাসক পদ ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলায় এখন রীতিমতো শোরগোল তৈরি হয়েছে। তবে অশোকবাবুর এই মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা শিলিগুড়ি পৌরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার বলেন, “রাজ্য সরকার পুরো আইন মেনে এখানে প্রশাসক বোর্ড মনোনীত করেছে। তাছাড়া অশোকবাবু এভাবেই বোর্ড গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এখন তিনি রাজনীতি করার উদ্দেশ্যে রাজ্য সরকারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। এটা ঠিক নয়। করোনা পরিস্থিতিতে রাজনীতি করার সময় নেই। ওনারা বোর্ডে থাকুন। তাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলব।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অশোক রঞ্জন ভট্টাচার্য একথা বলে একদিকে যেমন নিজেদের অবস্থান ঠিক রাখার চেষ্টা করলেন, ঠিক তেমনই তৃণমূল কংগ্রেস দুমুখো নীতি চালাচ্ছে। আর তাই তিনি এই পদে বসবেন না বলে তৃণমূলের ওপর চাপ সৃষ্টি করলেন। কেননা কলকাতা পৌরসভায় প্রশাসক পদে ফিরহাদ হাকিমকে বসানোর পর তা নিয়ে বিরোধিতা করেছিল বামেরা। ফলে সেদিক থেকে শিলিগুড়ি পৌরসভায় যদি অশোক রঞ্জন ভট্টাচার্যকে প্রশাসক করা হয়, তাহলে যদি তৃণমূল কংগ্রেসের বিরোধিতা করার রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে ভবিষ্যতে বিপাকে পড়বে বামেরা। আর সেদিকটা মাথায় রেখেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে একটা ইস্যু খুঁজে নিয়ে সেই পদ ফিরিয়ে দিয়ে কার্যত বিদ্রোহী ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন অশোক রঞ্জন ভট্টাচার্য। তবে অশোকবাবুর এই আচরণকে কার্যত রণেভঙ্গ দেওয়ার সাথেই তুলনা করছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেক্ষেত্রে তারা প্রমাণ করার চেষ্টা করছে যে, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মত ক্ষমতা নেই অশোক ভট্টাচার্যের। আর তাই তিনি এখন দায়িত্ব এড়িয়ে যেতেই এই সমস্ত কথা বলছেন। তবে অশোক রঞ্জন ভট্টাচার্য বোর্ডের মাথা থেকে সরে যাওয়ার কথা বলায় এখন শিলিগুড়ি পৌরসভার প্রশাসক কে হয়, তার দিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের। আপনার মতামত জানান -