এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন যে কোনো মুহূর্তে? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী- রাজ্যপাল বৈঠকের পর শুরু জল্পনা

বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন যে কোনো মুহূর্তে? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী- রাজ্যপাল বৈঠকের পর শুরু জল্পনা


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –আশঙ্কা ছিলই। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলার রাজ্যপালের বৈঠকের পর সেই আশঙ্কা এবং জল্পনা ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে শুরু করল। যেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠকের পর কার্যত রাজ্য প্রশাসনকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন পশ্চিমবঙ্গের সাংবিধানিক প্রধান। যা দেখে অনেকেই বলছেন, রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা।

বস্তুত, রাজ্যের রাজ্যপালের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই জাগদীপ ধনকার শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, আইন-শৃঙ্খলা বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হতে শুরু করেন। যার ফলে রাজ্য বনাম রাজ্যপালের সম্পর্কের তিক্ততা তৈরি হয়। কিছুদিন আগেই জল্পনা বাড়িয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবি অমূলক নয়।

আর এর কিছুদিন পরেই হঠাৎ করেই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের দিল্লি সফর এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা রাজ্যজুড়ে। অনেকেই বলেছিলেন, তাহলে কি রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করতে গেলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল! আর আলোচনা শেষে পশ্চিমবঙ্গের সাংবিধানিক প্রধান যেভাবে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করতে শুরু করলেন, তাতে রাজ্য সেই রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকেই এগোচ্ছে বলে মনে করছেন একাংশ।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সূত্রের খবর, এদিন অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার। যেখানে বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করেন তিনি। রাজ্যপাল বলেন, “রাজ্যে কার্যত নৈরাজ্য চলছে। সাংবিধানিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার মুখে। আল-কায়েদা দাঁত-নখ ছড়াচ্ছে। পুলিশ রাষ্ট্রের মত পরিস্থিতি। শীর্ষ আইএএস, আইপিএসরা প্রথম সারির রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে কাজ করছেন।” অর্থাৎ রাজ্যপাল রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনকে কার্যত কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিলেন।

এদিন রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুরজিৎ কর পুরকায়স্থকে “ডিজির সুপার বস” বলে কটাক্ষ করেন রাজ্যপাল। পাশাপাশি প্রশান্ত কিশোরের নাম না করেও তাকে সমালোচনা করেন পশ্চিমবঙ্গের সাংবিধানিক প্রধান। পুলিশ প্রশাসনের দায়বদ্ধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে রাজ্যপাল বলেন, “একে যদি বানানা রিপাবলিকের পুলিশ রাষ্ট্র না বলা হয়, তাহলে কি বলা হবে!” অর্থ্যাৎ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর যেভাবে রাজ্যপাল রাজ্য প্রশাসনকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন, তাতে ভেতরের আলোচনায় যে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধ বেশ কিছু কথা উঠে এসেছে, তাতে কার্যত নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা।

 

এদিকে রাজ্যপালের এই মন্তব্য নিয়ে এখন রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক শোরগোলের সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যপালের এই বক্তব্যকে সমর্থন করেছে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “এই রাজ্যে মানুষের কথা বলার, পছন্দমত রাজনীতি করার অধিকার নেই। সরকার হিংসার নীতি নিয়ে চলছে। আর পুলিশ প্রশাসন তাদের মদত দিচ্ছে। পূজার মধ্যেও বিজেপি কর্মীদের হত্যা করা হয়েছে। গণতন্ত্র ফেরানোর লড়াইয়ে আমাদের 120 জন প্রাণ দিয়েছেন। প্রয়োজনে আরও 120 জন প্রাণ দেবেন। কিন্তু রাজ্যে ক্ষমতার পরিবর্তন করব। ক্ষমতায় এলে যে দলেরই হোক, রাজনৈতিক কর্মীদের মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি দেব।” তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর রাজ্যপাল যেভাবে রাজ্য প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তুলেছেন, তার পাল্টা মন্তব্য করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

এদিন এই প্রসঙ্গে লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যপাল কি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন, না বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে? এর আগে অন্তত 99 বার একই কাজ করেছেন। মিথ্যায় ভরা আবর্জনা নিয়ে 100 তম বার দিল্লি গিয়েছেন।” বিশ্লেষকদের মতে যে যাই বলুন না কেন রাজ্যপালের এই সফর নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।

যত সময় যাচ্ছে, ততই স্পষ্ট হচ্ছে যে, এবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে গিয়ে রাজ্যপাল এমন কিছু বলেছেন, যা ভবিষ্যতে বড় আকার ধারণ করতে পারে। আর তাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পর প্রকাশ্যে রাজ্য প্রশাসনের বিরোধিতা করতে দেখা গেল তাকে। তবে এই সমস্ত কিছু আগামী দিনে বড় কোনো ঘটনা ঘটার ইঙ্গিত, নাকি স্বাভাবিক নিয়মেই এই সমস্ত কিছু ঘটছে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!