এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভের যুক্তি-পাল্টা যুক্তিতে টালমাটাল রাজ্য বিজেপি

প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভের যুক্তি-পাল্টা যুক্তিতে টালমাটাল রাজ্য বিজেপি


লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার বহুদিন আগে থেকেই গেরুয়া শিবির সমানে বলে আসছিল – তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকারকে নিয়ে বাংলার মানুষ নাকি ‘নাখুশ’, বিশেষ করে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একের পর এক সিদ্ধান্তে রীতিমত নাকি ক্ষুব্ধ বাংলার মানুষ। এর মধ্যে অন্যতম হল – দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া ডিএ, ষষ্ঠ বেতন কমিশন নিয়ে দীর্ঘসূত্রিতা, রাজ্যে চাকরি ও শিল্পের বেহাল দশা বা শাসকদলের নেতাদের তোলাবাজি ও সিন্ডিকেটরাজ। যদিও তৃণমূল কংগ্রেস সবসময়েই বলে এসেছে এগুলি বিরোধীদের অপপ্রচার।

বাংলায় গত ৮ বছরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে যে উন্নয়ন হয়েছে তাতে বাংলার মানুষ নাকি সর্বান্তঃকরণে তৃণমূল নেত্রীর পাশেই আছেন আর তার প্রমান প্রতিটা নির্বাচনেই লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্ক। বিরোধীরা আবার বলেছেন – উন্নয়নের জন্য নয় ওই ভোটবৃদ্ধি হয়েছে আসলে শাসকদলের ‘উন্নয়ন বাহিনীর’ তান্ডবের জন্য। আর তাই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে শাসকদলের নাকি ভরাডুবি হবে এবং বিরোধীদের, বিশেষ করে বিজেপির ঝুলি ভরবে লাফিয়ে লাফিয়ে। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ তো দাবিই করে বসেছেন বাংলার ৪২ আসনের মধ্যে বিজেপি নাকি একই ২৩ টি আসন দখল করবে।

আর এই আবহে, এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে প্রার্থী হওয়ার জন্য হাহাকার শুরু হয়ে গিয়েছিল গেরুয়া শিবিরের অন্দরে। কিন্তু, রাজ্যের ৪২ টির মধ্যে ২৯ টি আসনে প্রার্থীতালিকা প্রকাশিত হতেই রীতিমত ক্ষোভ-বিক্ষোভের আবহে টালমাটাল বঙ্গ-বিজেপির অন্দরমহল! ইতিমধ্যেই রাজ্যের এক শীর্ষস্থানীয় পদাধিকারী রাজকমল পাঠক প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়ার প্রতি অনাস্থা দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন। অন্য এক শীর্ষনেত্রী রাজকুমারী কেশরী জানিয়েছেন তিনি নাকি নেই নির্বাচনের কোনো কাজে। তবে শুধু এঁরাই নন – রাজ্য-বিজেপির বহু নেতা-কর্মীই নাকি ক্ষোভে ফুঁসছেন। তাঁদের মূল অভিযোগ, দলে এসেই টিকিট পেয়ে গেছেন বহু নব্য নেতা – আর দীর্ঘদিন ধরে দল করেও তাঁদের কথা ভাবা হয় নি একফোঁটাও। তাহলে এতদিন ধরে মাটি কামড়ে পরে থেকে লাভের লাভটা কি হল?

অন্যদিকে, গেরুয়া শিবিরের দাবি, এবারের টিকিট বন্টন করেছেন স্বয়ং অমিত শাহ-নরেন্দ্র মোদী, নব্য যাঁরা টিকিট পেয়েছেন, তাঁদেরকে টিকিট দেওয়া হবে এই শর্তেই দলে যোগদান করানো হয়েছিল – এই নিয়ে অহেতুক তর্ক-বিতর্ক কেন? এছাড়া রাজ্য বিজেপির যেসকল নেতারা রাজ্যে ‘প্রমিনেন্ট ফেস’ তাঁরা প্রায় প্রত্যেকেই টিকিট পেয়েছেন। যাঁরা এর আগে বহু সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি, তাঁদেরই একমাত্র টিকিট দেওয়া হয় নি। তাছাড়া, লোকসভা নির্বাচনে মাত্র ৪২ আসন, সেখানে সবাইকে টিকিট দেওয়া কি করে সম্ভব?

সামনেই ১০০-এরও বেশি পুরসভার নির্বাচন আছে আর তারপর বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন – সুতরাং পুরোনো কর্মীরা সেইসব জায়গায় অবশ্যই টিকিট পাবেন। সবথেকে বড় কথা, টিকিট প্রত্যাশী হলেই কি টিকিট পাওয়া যায়? লোকসভায় জিতে সাংসদ হলে দিল্লিতে গিয়ে ছাপ রাখার মত যোগ্যতা থাকতে হবে এমন লোককেই টিকিট দেওয়া সম্ভব। আর তাই সবমিলিয়ে – প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভের যুক্তি-পাল্টা যুক্তিতে টালমাটাল রাজ্য বিজেপি। এইসব সামাল দিয়ে দলীয় কর্মীদের কতখানি নির্বাচনের কাজে নামাতে পারেন শীর্ষনেতারা সেদিকেই আপাতত তাকিয়ে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!