এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > কথা দিয়েও বিজেপিতে যোগদান অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত কংগ্রেস নেতারা,নিজের গড়ে অস্বস্তিতে বিজেপি রাজ্য সভাপতি

কথা দিয়েও বিজেপিতে যোগদান অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত কংগ্রেস নেতারা,নিজের গড়ে অস্বস্তিতে বিজেপি রাজ্য সভাপতি


রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের স্বয়ংসেবকদের দ্বারাই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। অটল বিহারী বাজপেয়ী থেকে শুরু করে নারেন্দ্র মোদী, বিজেপির সমস্ত প্রভাবশালী ব্যক্তিরাই একদা সংঘের শাখার সদস্য ছিলেন। কিন্তু জন্মস্থান এক হওয়া সত্ত্বেও বৈচারিক দিক থেকে প্রায়শই ঠোকাঠোকি লাগতে দেখা যায় সঙ্ঘের সঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টির।

আর তারই ছাপ এদিন দেখা গেল রেলকর্মী সংগঠন “রেলওয়ে মেনস কংগ্রেস” কর্মীদের রেল মজদুর সঙ্ঘে যোগদান পর্বে। গঠনগতভাবে কংগ্রেস প্রভাবিত রেলওয়ে মেনস সংগঠনের সদস্যদের গত সোমবার রেলওয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্র বোগদার ডিএম অফিসের সামনে এক প্রকাশ্য সভার আয়োজন করা হয়েছিল।

সেই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। এদিন সভার আড়ম্বর এবং সাজসজ্জায় বিন্দুমাত্র ত্রুটির আভাস ছিল না। কর্মীদের বসার স্থান থেকে শুরু করে সভা মঞ্চ, সর্বত্রই গেরুয়া শিবিরের ছাপ স্পষ্ট ছিল। সভায় রেলওয়ে মেনস কংগ্রেসের কর্মীরা মূলত আরএসএস প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন রেল মজদুর সঙ্ঘে যোগদান করবে এই ছিল কর্মসূচি।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত নির্দেশকের ইচ্ছামত নাটকের যবনিকা হল না। অর্থ্যাৎ ব্যাঘাত পড়ল এই যোগদান কর্মসূচিতে। কথামতো বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে সভায় হাজির ছিলেন বিজেপির জেলা নেতা প্রেমচাঁদ ঝাঁ, রেলের পরামর্শদাতা কমিটির সদস্য সঞ্জয় হাজরা থেকে শুরু করে আরও অনেক বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু শেষ অব্দি লক্ষ্য করা যায় রেলওয়ে মেনস কংগ্রেসের সদস্যরা নিজেদের দল ছেড়ে যে সংগঠনে যোগদান করবেন বলে মনস্থির করেছিলেন সেই রেল মজদুর সংঘের নেতারাই মঞ্চে অনুপস্থিত।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কথা ছিল, রেলওয়ে মেনস কংগ্রেসের প্রায় কয়েক হাজার সদস্যরাই শিবির পরিবর্তন করে গেরুয়া শিবিরে যোগদান করবেন। কিন্তু যোগদানকারী দলের নেতৃত্বদের গরহাজিরাতে অবশেষে ভেস্তে গেল এই বহু আকাঙ্খিত যোগদান কর্মসূচি। আর এহেন ঘটনায় এখন রীতিমতো বিরোধ বেঁধে গিয়েছে সভার আয়োজকদের সঙ্গে মজদুর সংঘের কর্মীদের।

কংগ্রেস প্রভাবিত ওই রেল কর্মী সংগঠনের দাবি, তাদের মজদুর সংঘে যোগদান করানোর কথা থাকলেও দক্ষিণ পূর্ব রেলের মজদুর সংঘের সভাপতি প্রহ্লাদ সিংহ সভায় না আসাতেই কংগ্রেস প্রভাবিত ওই শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েন। এদিন এই প্রসঙ্গে মেনস কংগ্রেসের দক্ষিণ পূর্ব রেলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, যিনি পদ ছেড়ে এসে ওই যোগদান কর্মসূচি সভার আয়োজন করেছিলেন, সেই অজয় কর বলেন, “আমরা জানতাম আরএসএস নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় বিজেপির সঙ্গেই রয়েছে রেলের মজদুর সংঘ। তাই সাংসদ দিলীপ দা ও বিজেপি নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। সেকথা প্রহ্লাদ সিংহ কে জানিয়েছিলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে দিলীপদা সহ বিজেপির নেতারা আসায় ওরা আসেনি।”

অপরদিকে সভামঞ্চ থেকে এই প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমাদের মতাদর্শে যে ট্রেড ইউনিয়ন রয়েছে, তা ভারতীয় মজদুর সংঘ। তার অধীনে চলা দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মজদুর সংঘের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন অজয় করেরা। তাই আমাদের আজ ডেকেছিলেন। আমরা এসেছি‌। আমরা সবাই তার সাথে আছি।”

অন্যদিকে সভার অন্যতম প্রধান মুখ, যিনি না আসাতে গোটা সভাটাই পন্ডুল হয়ে গেল, সেই প্রহ্লাদবাবু বলেন, “আমরা বলেছিলাম আমাদের অফিসের ভেতরে সভা করতে। কারণ আমরা চাই না অফিস টাইমে ডিআরএম অফিসের সামনে এভাবে সভা হোক। কিন্তু তা হয়নি। সেই সঙ্গে বিজেপি নেতাদের ডাকা হয়েছে। আমাদের সংগঠন অরাজনৈতিক। তাই আমরা এই সভায় যাইনি।”

কিন্তু এরকম ঘটনা ঘটায় কার্যত বড়সড় অস্বস্তিতে পড়েছেন যোগদান করতে চাওয়া কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন রেলওয়ে মেনস কংগ্রেস এবং আগামীদিনে তারা কোন সংগঠনের হয়ে কাজ করবে তা নিয়েও জোর জল্পনা শুরু হয়ে গেছে। এদিন এই প্রসঙ্গে অজয় কর বলেন, “আমরা প্রায় 6000 কর্মী মজদুর সঙ্গে যোগ দিতাম। প্রহ্লাদ সিংহ নিজেই আমাদের তাদের সংগঠনে যোগ দিতে বলেছিলেন। কিন্তু এবার আমরা দিলীপ ঘোষের সঙ্গেই আলোচনা করব।”

আর অজয়বাবুর এই কথার পরিপ্রেক্ষিতেই প্রহ্লাদবাবুর স্পষ্টতই জানিয়ে দেন যে, তাদের আর এই সংগঠনে নেওয়া হবে না। তবে দলবদলকে উদ্দেশ্য করে এত বড় সভা হলেও শেষ পর্যন্ত যখন শিবির বদল সম্ভব হল না, তখন কিছুটা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার ভঙ্গিতেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “ওটা বিএমএসের অনুষ্ঠান ছিল না। কিছু ইউনিয়নের লোক সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য ডেকেছিলেন। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমিও গিয়েছিলাম। বিএমএস জানিয়েছে যে তাদের সংগঠনে যোগ দেওয়ার অনুষ্ঠান তাদের দফতরেই হয়।”

কিন্তু দীলিপবাবু যাই বলুন না কেন, শ্রমিক সংগঠনকে কেন্দ্র করে সঙ্ঘ এবং বঙ্গ বিজেপির যে সংঘাত সামনে এসেছে, তা যে আগামীদিনে গেরুয়া শিবিরকে রীতিমতো ভোগাতে চলেছে, সেই বিষয়ে একমত প্রায় সকল রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাই।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!