এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বাংলার বুকে গ্রেপ্তার বিজেপির দুই হেভিওয়েট সাংসদ! তীব্র চাঞ্চল্য রাজ্য রাজনীতিতে

বাংলার বুকে গ্রেপ্তার বিজেপির দুই হেভিওয়েট সাংসদ! তীব্র চাঞ্চল্য রাজ্য রাজনীতিতে

 

শাসকের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামলেই, বাংলায় বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছে ভারতীয় জনতা পার্টি। তবে বিজেপির সেই দাবি নিচুতলার নেতাকর্মীদের ক্ষেত্রে বাস্তব হলেও, বিজেপির কোনো জনপ্রতিনিধিকে হাতকড়া পরাতে দেখা যায়নি পুলিশকে। তবে এবার বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামানিক এবং খগেন মুর্মুকে গ্রেফতার করল রাজ্য পুলিশ। যা নিয়ে প্রবল চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বাংলার রাজনীতিতে।

বস্তুত, সম্প্রতি সংসদের দুই কক্ষ পাস হয়ে গিয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। আর এই বিল পাস হওয়ার পরেই তাতে রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করে দেওয়ায়, তা এখন আইনে পরিণত হয়ে গিয়েছে। আর নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন লাগু হওয়ার পর থেকেই তার বিরোধিতা করে আসছে দেখা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।

তবে গণতান্ত্রিক উপায়ে এই বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা হবে বলে তৃণমূলের তরফে বারবার আবেদন করা হচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে এই বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। কিছু উন্মত্ত জনতা কোথাও স্টেশন ভাঙচুর, কোথাও বাস পুড়িয়ে দেওয়া, আবার কোথাও বা টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে জনজীবনকে বিপর্যস্ত করেছে।

প্রথম থেকেই ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হচ্ছিল যে, কিছু জনতাকে দিয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এই বিলের বিরোধিতা করে রাজ্যে অশান্তি তৈরীর চেষ্টা করছে। আর এবার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে মালদহ জেলায় সাধারণ জনতার হামলায় যে সমস্ত স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা পরিদর্শন করতে গিয়ে গ্রেফতার হতে হল বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং নিশীথ প্রামাণিককে।

জানা যায়, মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর এবং ভালুকা রোড স্টেশনে এই বিলের বিরোধিতা করে ব্যাপক ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয় উন্মত্ত জনতা। এদিন বিজেপির দুই সাংসদ সেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে বেরিয়েছিলেন কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে মালদহের তিনশো কুড়ি মরেই তাদের কনভয় আটকে দেয় পুলিশ তারপরেই শুরু হয় উত্তেজনা। বিজেপি কর্মী বনাম পুলিশের ধস্তাধস্তি চরমে ওঠে। এর পরেই ব্যারিকেড দিয়ে দুই সাংসদকে আটকানোর চেষ্টা করে জেলা প্রশাসন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু তা সত্ত্বেও সামনের দিকে এগিয়ে যেতে মরিয়া চেষ্টা করেন বিজেপির 2 সাংসদ। পরবর্তীতে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে রাস্তায় বসে পড়েন খগেন মুর্মু এবং নিশীথ প্রামাণিক। আর তারপরেই তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে অবশ্য ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন নিয়ে ছাড়া পান কোচবিহার এবং উত্তর মালদার দুই বিজেপি সাংসদ। কিন্তু কেন এইভাবে দুজন জনপ্রতিনিধিকে গ্রেপ্তার করা হল! যদি তারা স্টেশন পরিদর্শন করতে চান, তাহলে তাদের বাধা দিল কেন রাজ্য পুলিশ?

কারণ দুজন সাংসদ হিসেবে তারা যদি কোনো ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, তাহলে কি তাতে পুলিশ আদৌ এইভাবে বাধা দিতে পারে! এদিন এই প্রসঙ্গে কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক বলেন, “হরিশ্চন্দ্রপুরের মানুষ অসহায় অবস্থায় রয়েছেন। তারা ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা বারবার আমাদের কাছে সমস্যার কথা জানিয়েছেন। ওই এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেএ দিন হরিশ্চন্দ্রপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের আটকে দিয়েছে। রাজ্যে যে পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে, তাতে তৃণমূল সরকার পরোক্ষভাবে সন্ত্রাসীদের মদত দিচ্ছে।”

এদিকে এই ব্যাপারে উত্তর মালদা লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, “হরিশ্চন্দ্রপুর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য আমরা রওনা দিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন আমাদের আটকে দিয়ে গ্রেপ্তার করেছে। এভাবে তারা আমাদের আন্দোলন ধামাচাপা দিতে পারবে না।” সত্যিই তো তাই! এইভাবে দুজন জনপ্রতিনিধিকে কি গ্রেফতার করা যায়! তৃণমূলের নেতারা যদি সেই গন্ডগোলের জায়গা পরিদর্শন করতে যেতেন, তাহলে কি পুলিশ প্রশাসন তাদের গ্রেপ্তার করতে পারত? নাকি শুধুমাত্র বিরোধীদল বলেই বিজেপির এই দুই সাংসদকে গ্রেপ্তার করা হল?

এখন তা নিয়েই নানা মহলে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। যদিও বা এই প্রসঙ্গে মালদহ জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “ইংলিশবাজার শহরে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে দুই সাংসদ এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেসময় ইংরেজবাজার থানার পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। পরে ব্যক্তিগত বন্ডে তাদের জামিন দেওয়া হয়। এই ঘটনায় সেরকম কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি।” বিশ্লেষকরা বলছেন, এটা অনেকটা গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো ঘটনা ঘটল।

একদিকে মালদহ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত যখন নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে ফুঁসছে, ঠিক তখনই বিজেপি সাংসদদের ক্ষতিগ্রস্ত ঘটনাস্থল দেখতে না দেওয়া, পুলিশ প্রশাসনের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলে দিল। যার ফলে এখন পুলিশের বিরুদ্ধে হয়ত বা আন্দোলনের পথ বেছে নিতে পারে ভারতীয় জনতা পার্টি। যা গোটা পরিস্থিতিতে রাজ্য তথা জেলা প্রশাসনকে অনেকটাই অস্বস্তিতে ফেলে দেবে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!