এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > সিএএ বিরোধিতায় তৃণমূল দাপিয়ে মিছিল করলেও, পুলিশ বিজেপি সাংসদদের আটকাচ্ছে! বাড়ছে ক্ষোভ

সিএএ বিরোধিতায় তৃণমূল দাপিয়ে মিছিল করলেও, পুলিশ বিজেপি সাংসদদের আটকাচ্ছে! বাড়ছে ক্ষোভ

 

সংশোধিত নাগরিক আইনের বিল। একদিকে যেমন কলকাতায়, কখনও হাওড়া কখনও জোড়াসাঁকোতে সভা-সমিতি মিছিল করতে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে, তেমনই জেলায় জেলায় সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের বিরোধিতা করে রীতিমতো আন্দোলন করছেন তৃণমূল কংগ্রেস এবং তার শাখা সংগঠনগুলি।

কিন্তু রাজ্য থেকে শুরু করে জেলাস্তরে সিটিজেনশিপ অ্যাক্টের স্বপক্ষে প্রচার করতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি বলে একাধিকবার অভিযোগ করে এসেছে। আর এবার সেই একই অভিযোগ উঠল উত্তর দিনাজপুর জেলার করণদিঘিতে।

সূত্রের খবর, এদিন সংশোধিত নাগরিক আইনের বিরোধিতায় করণদিঘিতে ভাঙচুরের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিল বিজেপির এক প্রতিনিধিদল। কিন্তু বিজেপির তরফ থেকে অভিযোগ, এদিন সেই প্রতিনিধিদলকে কথা বলতে না দিয়ে করণদীঘির দোমোহনায় পুলিশের তরফ থেকে তাদেরকে আটকে দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে বুধবার বিকেলে ইসলামপুরের দলীয় কার্যালয় থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ সেন।

শুধু তাই নয়, বিজেপির প্রতিনিধিদলকে আটকে দেওয়ার প্রসঙ্গে যথারীতি সতর্কবার্তা দিতে দেখা যায় বিজেপির সাধারণ সম্পাদককে। গোটা বিষয়ে সুরজিৎ সেন বলেন, “গোটা ঘটনার ব্যাপারে প্রতিবাদ জানিয়ে একুশে ডিসেম্বর রাস্তায় নামবে বিজেপি।” কিন্তু পুলিশ দাবি করেছে, কোথাও বিজেপির কোনো প্রতিনিধিদলকে আটকানো হয়নি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বস্তুত, সোমবার বিকেলে চাকুলিয়া থানার কানকিতে 31 নম্বর জাতীয় সড়কে রীতিমতো অবরোধ করে সংশোধিত নাগরিক আইনের বিরোধিতা করতে দেখা যায় তৃণমূল কংগ্রেসকে। আর এই বিক্ষোভ প্রদর্শনের নেতৃত্বে ছিলেন স্বয়ং রাজ্যের পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী এবং গোয়ালপুকুরের বিধায়ক গোলাম রব্বানী। অভিযোগ, সিএএ বিরোধী এই সমাবেশ থেকেই রাস্তায় আগুন জ্বালানোর পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহনের একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এলাকায় ভাঙচুর করা হয়। এই ঘটনার ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে আলোচনা করতে উত্তর দিনাজপুর ভারতীয় জনতা পার্টির জেলা সভাপতি বিশ্বজিত লাহিড়ী, বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার এবং অন্যান্য নেতৃত্ব যখন রায়গঞ্জ থেকে রওনা দেয়, তখন সেই দলকে কানকিতে পৌঁছানোর আগেই দোমোহোনাতেই আটকে দেওয়া হয় পুলিশের তরফ থেকে বলে অভিযোগ।

এদিন এই ঘটনা প্রসঙ্গে ইসলামপুরের বিজেপি পার্টি অফিস থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ সেন বলেন, “কানকিতে তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী গোলাম রব্বানী সভায় উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়েছিলেন। তার ভাষণ শোনার পরেই দুষ্কৃতীরা একটি বাস জ্বালিয়ে দেয়। ভাঙচুর করা হয় প্রচুর গাড়ি। একটি টায়ারের দোকান থেকে নতুন টায়ার রাস্তায় ফেলে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় 80 হাজার টাকার টায়ার জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। জাতীয় সড়কের পাশে বিধানপল্লী এলাকায় বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে।

এদিন আমাদের দলের বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার, উত্তর দিনাজপুরের জেলা সভাপতি বিশ্বজিত লাহিড়ী সহ একাধিক প্রতিনিধিদল সেই সমস্ত ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করে তাদের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছেন। কিন্তু রায়গঞ্জ থেকে কানকি আসার পথে দোমহনা এলাকায় 34 নম্বর জাতীয় সড়কে তাদেরকে আটকে দেয় পুলিশ। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। ঘটনার 48 ঘণ্টা পার হয়ে যাওয়ার পরও এখনও ভাঙচুর কান্ডে কোন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আগামী 21 ডিসেম্বর আমরা রাস্তায় নামব। পুলিশ আটকাতে পারলে আটকাক। এটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ।”

এদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপির সভাপতি বিশ্বজিৎবাবু বলেছেন, “কানকি যাওয়ার পথে ডালখোলা কাছে পাতনোরে 34 নম্বর জাতীয় সড়কে আড়াআড়িভাবে একটি গাড়ি রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল। কিছু মানুষ পুলিশের মধ্যেই রাস্তার কেন হয়েছিল! পুলিশ আমাদের বিকল্প রাস্তা দিয়ে যেতে বলে। গাড়ি ব্যাক করে বিকল্প রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় সেই রাস্তাতে বিক্ষোভের ফলে যানজট ছিল। পুলিশ সরাসরি আমাদের আটকাইনি। কিন্তু আমরা যাতে কানকিতে যেতে না পারি, সেজন্য পুলিশ এই গুলি উড়িয়েছে।”

পুলিশের তরফ থেকে অবশ্য ভারতীয় জনতা পার্টির সব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। এদিন এই প্রসঙ্গে ইসলামপুর জেলা পুলিশ সুপার শচীন মক্কর বলেন, “কানকিতে আসার পথে বিজেপির কোনো প্রতিনিধিদলকে বাধা দেওয়া হয়নি। এছাড়াও ভাংচুরের ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তদন্ত চলছে।”

তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী নিজে সংশোধিত নাগরিক আইনের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করতে বলছেন, সেই সময় যদি ভাঙচুরের ঘটনায় রাজ্য সরকারের কোনো মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বাস ভাঙচুর সহ এলাকায় ভাঙচুর চালানোর সমাবেশে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ ওঠে, তাহলে শাসক দলের পক্ষে তা যথেষ্ঠ চিন্তার হতে পারে। তবে এর বিরোধিতা করার কোন রকম সুযোগ যে ভারতীয় জনতা পার্টি ছাড়বে না, তা বলাই বাহুল্য বলে মনে করছে একাংশ।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!