বিজেপিকে ধাক্কা দিয়ে হুগলিতে ফিরহাদ হাকিমের হাত ধরে ‘ঘর ওয়াপসি’! তীব্র কটাক্ষ গেরুয়া শিবিরকে কলকাতা রাজ্য হাওড়া-হুগলি September 19, 2019 লোকসভা নির্বাচনে বাংলার 42 টি লোকসভা আসনের মধ্যে বিজেপি 18 টি এবং তৃণমূল 22 টি আসন দখল করে। আর সেদিক থেকে বিজেপি সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ব্যাপক সাফল্য পেলেও তৃণমূল 34 থেকে 22 এ নেমে আসার পরই বিভিন্ন পৌরসভার রং সবুজ থেকে গেরুয়া হয়ে যায়। তৃণমূল পরিচালিত অনেক পৌরসভার সিংহভাগ কাউন্সিলার বঙ্গ বিজেপির চাণক্য মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগদান করেন। যার ফলে কিছু সময়ের জন্য সেই পৌরসভাগুলো বিজেপির দখলে আসলেও অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করে। যে সমস্ত কাউন্সিলররা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন, তারা আবার বিজেপির প্রতি মোহভঙ্গ হয়ে নিজেদের প্রাক্তন দল তৃণমূলে ফিরে আসেন। যার ফলে সেই পৌরসভাগুলোয় আবার ঘাসফুল ফোটে। তবে তৃণমূলে এই ঘরওয়াপসি যে চলছেই, তা ফের এদিন প্রমাণ হয়ে গেল। হালিশহর, কাঁচরাপাড়া, নৈহাটি, গাড়ুলিয়ার পর হুগলির খানাকুল ও পুরশুড়ার গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সহ ১২ জন তৃণমূলে ফিরে এলেন। সূত্রের খবর, তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা হুগলি জেলার পর্যবেক্ষক ফিরহাদ হাকিম বুধবার তাঁদের হাতে পতাকা তুলে দিয়ে দলে ফিরিয়ে নেন। এদিন এই প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “লোকসভা ভোটের পরে ভয় দেখিয়ে দিল্লিতে ফাইভ স্টার পার্টি অফিসে নিয়ে গিয়ে তাঁদের বিজেপিতে যোগদান করানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা সেখানকার সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারেননি। তাঁরা ফিরে আসতে চাওয়ায় দলের সঙ্গে কথা বলেই তাঁদের ফিরিয়ে নেওয়া হল।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - জানা গেছে, এদিন খানাকুলের কিশোরপুর-১ এবং পুরশুড়ার রামমোহনমাল পঞ্চায়েতের সদস্যরা তাদের পুরনো দল তৃনমূলে ফিরে এলেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটের ফলাফলের পর কয়েকটি মহকুমায় তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার হিড়িক পড়ে যায়। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন পঞ্চায়েত ও পুরসভার জনপ্রতিনিধিরা বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু বীরভূমের লাভপুরের তৃনমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলাম বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই দলের মধ্যে হইচই শুরু হয়। যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও চরম আপত্তি ওঠে। পরবর্তীতে প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দিলে তা নিয়েও তীব্র বিতর্ক শুরু হয়। যারপর থেকেই বিজেপি’তে যোগদানের হিড়িক কিছুটা হলেও ধাক্কা খায়। যে সমস্ত কাউন্সিলররা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন, তারা ফের তৃণমূলে ফিরে আসতে শুরু করেন। হালিশহর, কাঁচড়াপাড়া, নৈহাটি, বনগাঁয় দলছুটরা ফেরত আসায় ফের পুরবোর্ড দখল করে তৃণমূল। একইভাবে গাড়ুলিয়া পৌরসভাতেও অনাস্থা আনে তৃণমূল। আরে মতো পরিস্থিতিতে যে 12 জন কাউন্সিলর বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, সেই 12 জন সদস্যকে নিয়ে কলকাতায় উপস্থিত হন হুগলি জেলা তৃণমূলের সভাপতি দিলীপ যাদব। আর এরপরই তাদের হাতে দলীয় পতাকা দিয়ে তাদের দলের স্বাগত জানান হুগলির পর্যবেক্ষক ফিরহাদ হাকিম। এদিনেই দলবদল এর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে পুজোর সময় রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের আশা নিয়ে কটাক্ষ করেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “টাকা দিয়ে পুজো দখল হয় না। পুজো করতে হয় হৃদয় দিয়ে। পাড়ার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে পুজো করতে হয়। আমাদের রাজ্যে তিনি আসবেন, আমরা ডাবের জল খাওয়াব। ওরা তো গণতন্ত্র ধ্বংস করে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করতে চাইছে। অমিত শাহ তার ব্যতিক্রম নন, মানুষ সব জানে। তিনি যেভাবে হিন্দি ভাষা নিয়ে বলছেন, তাতে তাঁদের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আমরা সব ভাষাকে সম্মান করি। সব ভাষার মর্যাদা পাওয়া উচিত। চম্বলের ডাকাত সহ যেভাবে বহিরাগতরা রাজ্য দখল করার নাম করে আসছে, তাতে আমরা আতঙ্কিত। এনআরসি চালু নিয়ে ভয় দেখাচ্ছেন তাঁরা। মানুষ তার জবাব দেবে। মানুষের চেয়ে বড় শক্তি আর কিছু হতে পারে না।” সব মিলিয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া কাউন্সিলরদের তৃণমূলে ফিরিয়ে সেই দলবদলের প্রক্রিয়া থেকেই বিজেপিকে জোর কটাক্ষ ফিরহাদ হাকিমের। আপনার মতামত জানান -