প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের ঘর যেমন ভাঙতে শুরু করেছে বিজেপি, ঠিক তেমনই টলিউডে ও নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেছে পদ্মফুল শিবির। একের পর এক হেভিওয়েট অভিনেতা থেকে শুরু করে অভিনেত্রীদের নিজেদের দিকে টানতে শুরু করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আর এবার বিজেপির সঙ্গে খুব একটা ভালো সম্পর্ক নেই বললেই চলে, সেই বিশিষ্ট অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের পক্ষ থেকে মুকুল রায়ের জন্মদিনের শুভেচ্ছা বার্তা দিয়ে একটি ভিডিও বার্তাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো জল্পনা ঘনীভূত হতে শুরু করেছে।

বেশ কিছুদিন আগে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে বিজেপির বিরুদ্ধে মন্তব্য করার কারণে রীতিমত খবরের শিরোনামে চলে আসেন সায়নী ঘোষ। আর এর পরেই সেই সায়নী ঘোষকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মঞ্চ থেকে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার পরেই সেই সায়নী ঘোষের সঙ্গে তৃণমূলের ঘনিষ্ঠতা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। এমনকি এই বিশিষ্ট অভিনেত্রীর নামের পাশে কট্টর বিজেপি বিরোধী বলে একটি শব্দ বসে যায়।

তবে এবার সেই অভিনেত্রীর ভিডিও বার্তায় বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়ের জন্মদিনের শুভেচ্ছা দেওয়ায় গুঞ্জন বাড়তে শুরু করেছে রাজ্য রাজনীতিতে। তাহলে কি কিছুদিন আগেই একটি মন্তব্যের জরিযে সায়নী ঘোষকে নিয়ে বিজেপির অন্দরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, সেই সায়নীদেবীও কি এবার যোগদান করতে চলেছেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে?

সূত্রের খবর, বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা বঙ্গ রাজনীতির চাণক্য হিসেবে পরিচিত মুকুল রায়ের জন্মদিন উপলক্ষে এদিন নানা মহলের তরফ থেকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। যার মধ্যে ছিলেন অসংখ্য অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। আর সেই তালিকায় ছিলেন বিশিষ্ট অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। স্বাভাবিক ভাবেই যাকে নিয়ে এত বিতর্ক তৈরি হয়েছে, সেই তিনিই বিজেপি নেতার জন্মদিনের শুভেচ্ছা বার্তা দেওয়াতেই রীতিমত জল্পনা বাড়তে শুরু করে।

তাহলে কি বিজেপি প্রতি এবার নমনীয় হতে শুরু করলেন কিছুদিন আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠা সায়নী ঘোষ? বলা বাহুল্য, তৃণমূলের সঙ্গে এতটাই ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন এই সায়নীদেবী, যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার নাম নিয়ে তাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। এমনকি বাংলার মেয়েদের গায়ে হাত দিলে তিনি যে ছেড়ে কথা বলবেন না, তাও প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে মন্তব্য করে রীতিমত সরব হতে দেখা যায় তৃণমূল নেত্রীকে। আর এরপরই তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন মঞ্চে উপস্থিত হতে দেখা যায়।

এমনকি রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা মদন মিত্রকে “বাংলার ক্রাশ” বলে আখ্যায়িত করেন সায়নী ঘোষ। স্বাভাবিক ভাবেই তার তৃণমূল ঘনিষ্ঠতা নিয়ে রীতিমত গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। আর এই পরিস্থিতিতে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের জন্মদিনে সেই সায়নীদেবীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বার্তা আসায় জল্পনা যে ক্রমশ বাড়বে, তা বলাই যায়। তবে যতই জল্পনা তৈরি হোক না কেন, এই ব্যাপারে অবশ্য সমস্ত কিছু নস্যাৎ করে দিয়েছেন হেভিওয়েট এই অভিনেত্রী।

এদিন এই প্রসঙ্গে সায়নী ঘোষ বলেন, “মুকুল রায়ের সঙ্গে আমার পরিচয় দীর্ঘদিনের। ওনার জন্ম দিনের শু‌ভেচ্ছা জানানো খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। টলিউডের অনেকে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে বলে শুনলাম। কিন্তু সেই দলে আমি নেই। আমি বিজেপি শিবিরের সঙ্গে সৌহার্দ্য এবং সুসম্পর্ক বজায় রেখেছি। এটা কোনো গল্প নয়।” অর্থাৎ মুকুল রায়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালোর জন্যই তিনি তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন সায়নী ঘোষ।

কিন্তু যাকে নিয়ে এত বিতর্ক তৈরি হয়েছিল এবং তার সঙ্গে বিজেপির বিরোধিতা তৈরি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছিল নানা মহলের পক্ষ থেকে, সেই তিনি হঠাৎ করেই বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জনাবেন, তা মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। তবে গোটা পরিস্থিতিতে জল্পনাকে যতই উড়িয়ে দেওয়া হোক না কেন, তা যে ক্রমশ সংকটময় এবং গুঞ্জনের হতে চলেছে, তা বলাই যায়। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।