এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > পুজো উদ্বোধনে রাজ্যের হেভিওয়েট মন্ত্রীকে এবার বলে “গোল” দিলেন তরুণ বিজেপি সাংসদ?

পুজো উদ্বোধনে রাজ্যের হেভিওয়েট মন্ত্রীকে এবার বলে “গোল” দিলেন তরুণ বিজেপি সাংসদ?

কোচবিহার জেলা জুড়ে লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক উত্থান ঘটেছে ভারতীয় জনতা পার্টির। যার কারণে রীতিমতো চাপে পড়তে হয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। কিন্তু কোচবিহারের লড়াই শুধু যে তৃণমূল বনাম বিজেপি লড়াই নয়, এই লড়াই কোচবিহার জেলার দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বনাম কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের লড়াই বললেও ভুল হবে না বলে মত রাজনৈতিক মহলের।

আর এই লড়াইয়ের প্রভাব রীতিমতো পরিলক্ষিত হয় কোচবিহারের জেলা রাজনীতির আঙিনায় তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ মহলের। একাংশের মতে, রবিবাবুর সঙ্গে মতানৈক্যের কারণেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছিলেন বর্তমান কোচবিহারের সাংসদ তথা প্রাক্তন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের নেতা নিশীথ প্রামানিক। লোকসভা ভোটের লড়াইয়ে নিশীথবাবু তো রবিবাবুকে পর্যদস্ত করেছেন। আর এবার দূর্গাপুজা উদ্বোধন নিয়ে এই দুই ‘মহারথীর’ মধ্যে শুরু হয়েছে লড়াই বলেই স্থানীয় সূত্রের খবর!

এবারের শারোদৎসবে কে কতগুলো পুজো উদ্বোধন করবেন, তাই নিয়ে রীতিমত প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামানিকের মধ্যে। প্রতিবছরই জেলায় প্রায় সবকটি পুজোর উদ্বোধনের স্টার উদ্বোধক থাকেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। কিন্তু জনপ্রিয়তা প্রমাণ করার এই লড়াইয়ে এবারের পুজোয় রবিবাবুকে রীতিমতো টেক্কা দিতে দেখা যাচ্ছে নবনির্বাচিত কোচবিহারের সাংসদকে।

নিশীথবাবু জানিয়েছেন, এবারের দূর্গা পূজায় একশটি পুজো উদ্বোধন করবেন তিনি। তিনি বলেন, “এবার দুর্গা পূজোয় আমি জেলায় একশটি পুজো উদ্বোধন করব। মহালয়ার পরদিন থেকে উদ্বোধনের জন্য মণ্ডপে মণ্ডপে যাব।” অপরদিকে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ জানান, “প্রতিবছরই আমার কাছে প্রচুর পুজোর উদ্বোধনের আমন্ত্রণ আসে। এবারও অনেক উদ্বোধনের আমন্ত্রণ এসেছে। পঞ্চাশটির মতো পুজো উদ্বোধন করতে ক্লাবগুলোকে সময় দিয়েছি।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অপরদিকে নিশীথবাবুর একশটি পুজো উদ্বোধনের কথাকে কটাক্ষ করে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী দাবি করেন, “বাস্তবে 100 টি পুজো উদ্বোধন করা কোনো প্রকারেই সম্ভব নয়।” তিনি আরও জানান যে, সমস্ত পুজো উদ্বোধন করতে তিনি যেতে পারবেন না। তাদের আমন্ত্রণে সাড়া দিতে সপ্তমী অথবা অষ্টমীতে অথবা নবমীতে সেখানে উপস্থিত হবেন। তিনি স্পষ্টতই জানান, ইতিমধ্যেই একশো কুড়ি থেকে 125 টি আমন্ত্রণ এসেছে। তার কাছে কেউ যদি 100 টি পুজোর উদ্বোধনের কথা বলে থাকেন, তাহলে অনলাইনে সেটা করতে হবে বলে মত রবিবাবুর।

কিন্তু উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী যতই কোচবিহারের তরুণ বিজেপি সাংসদের পুজো উদ্বোধনকে কটাক্ষ করুন না কেন, জেলা রাজনীতির বুকে তাকে যে প্রতিমুহূর্তে তাঁর কাছে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর দুর্গাপুজোর উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে সেই চ্যালেঞ্জ আরও একবার প্রকাশ্যে চলে এল বলে মত রাজনৈতিক মহলের। কারণ বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব শারদোৎসবকে জনসংযোগের অন্যতম ক্ষেত্র বলেই মনে করেন রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা।

আর জনগণের মধ্যে বা পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যে জনপ্রিয়তার বিচারে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে ফলে পুজো উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে অতীতে বাংলা শরদোৎসবে পুজো উদ্বোধনের ট্র্যাডিশন না থাকলেও হালফ্যাশনে বেশ কয়েক বছর ধরেই এই পরম্পরা চলে আসছে। আর বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজ্যে তৃণমূল জমানার সূচনাপর্ব থেকেই পুজো উদ্বোধন অনুষ্ঠান শারদোৎসবের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এবার সেই তৃণমূলের তৈরি করা খেলার মাঠে তৃণমূলকে কি গোল দিয়ে দিলেন না নিশীথ প্রামানিক, এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলের অন্দরে। যার উত্তর পাওয়া যাবে পুজো উদ্বোধনের আঙিনায়।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!