এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > বৈঠকে অনুপস্থিত, ফের কি ঘুটি সাজাচ্ছেন মুকুল! গুঞ্জনে জেরবার বিজেপি থেকে তৃণমূল!

বৈঠকে অনুপস্থিত, ফের কি ঘুটি সাজাচ্ছেন মুকুল! গুঞ্জনে জেরবার বিজেপি থেকে তৃণমূল!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –   তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গী ছিলেন তিনি। কস্মিনকালে কেউ ভাবতে পারিনি যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছেড়ে এই মুকুল রায় যোগ দিতে পারেন অন্য কোনো রাজনৈতিক দলে। কিন্তু সেই অকল্পনীয় ভাবনা এবং বিষয়কে বাস্তব করে দেখিয়েছেন মুকুল রায়। তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে প্রায় তিন বছর আগে যোগ দিয়েছেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে। পরবর্তীতে তৃণমূলের এক কালের সেকেন্ড ইন কমান্ড গত 2019 এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে বাংলায় ব্যাপক সাফল্য পাইয়ে দিয়েছেন। প্রমাণ করে দিয়েছেন, নিজের রাজনৈতিক কারিশমা।

তবে দীর্ঘদিন বিজেপিতে থেকে অন্য দল থেকে নেতা নিয়ে আসা থেকে শুরু করে বিজেপির গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে দেওয়ার পেছনে বহু পরিশ্রম করা মুকুল রায় বিজেপিতে মূল্য পাননি বলে অভিযোগ একাংশের‌‌। এক্ষেত্রে গেরুয়া শিবিরে যোগদান করার পর তার প্রধান লক্ষ্য ছিল বাংলা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে ক্ষমতাচ্যুত করা। বারবার বিভিন্ন নির্বাচনী জনসভায় সেই কথা তুলে ধরেছেন মুকুল রায়। তবে 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনের ব্যাটন কিছুটা তার হাতে থাকলেও এবং তিনি ভালোমতো খেললেও, 2021 সালের চূড়ান্ত খেলায় তাকে ক্যাপ্টেন করেনি ভারতীয় জনতা পার্টি।

যেখানে বিজেপির পক্ষ থেকে কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে মুকুল রায়কে প্রার্থী করে দিয়ে সারা বাংলা জুড়ে তাকে খেলার সুযোগ দেয়নি গেরুয়া শিবির। আর এই বিষয়টি ঠিকমত মেনে নিতে পারেননি মুকুল রায়। বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হয়ে নিজের আসনটি রক্ষা করে বিজেপির টিকিটে জয়লাভ করলেও, ক্রমাগত দলের সঙ্গে তার দূরত্ব বাড়তে শুরু করে। বর্তমানে অসুস্থ মুকুল রায়ের সহধর্মিনী কৃষ্ণা রায়। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি।

আর এই বিষয়টি নিয়ে সবথেকে বেশি ভাবিত মুকুল রায়। তবে তার স্ত্রীর অসুস্থতাকে কেন্দ্র করে বর্তমানে রাজ্য রাজনীতিতে ব্যাপক জল্পনা তৈরি হয়েছে। মুকুলবাবুর সহধর্মীনি অসুস্থ হওয়ার পর তাকে দেখতে গিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের বর্তমান সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি মুকুল রায়ের পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের সঙ্গেও বেশ কিছুক্ষণ কথা বলতে দেখা যায় অভিষেকবাবুকে।

তারপরে মুকুল রায়ের সেভাবে বিজেপির সক্রিয় না থাকা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে তার স্ত্রীকে দেখতে আসা নতুন করে জল্পনা তৈরি করে। আর তার মাঝেই এবার বিজেপির রাজ্য কমিটির বৈঠক হলেও, সেখানে মুকুল রায়ের অনুপস্থিতি নতুন ভাবনা তৈরি করেছে। একাংশ বলছেন, এটা মুকুল রায়ের নয়া স্ট্র্যাটেজি হতে পারে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, শুধুমাত্র দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি করা হয়েছে মুকুল রায়কে। সেদিক থেকে সদ্য দলে আসা শুভেন্দু অধিকারীকে বিরোধী দলনেতা করা হলেও, তাকে এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বসানো হয়নি। যার জেরে কিছুটা ক্ষুব্ধ হয়েছেন মুকুলবাবুর অনুগামীরা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মুকুলবাবুর সহধর্মিনীকে হাসপাতালে দেখতে আসার পরই হাসপাতালে এসেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে দিলীপবাবু কাকে দেখতে হাসপাতালে এসেছিলেন, তার কিছুই তিনি জানেন না বলে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন মুকুল রায়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে এবং দিলীপবাবুর সঙ্গে যে মুকুল রায়ের সখ্যতা যে খুব একটা ভালো নয়, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আর এই পরিস্থিতিতে একেবারে মুকুল রায়ের নীরবতা পালন এবং ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর বিধায়ক হয়েও রাজ্য কমিটির বৈঠকের মুকুল রায়ের অনুপস্থিতি গুঞ্জন ক্রমশ বাড়িয়ে দিল। অনেকে বলছেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অনেকক্ষণ ক্রিজে পড়ে থাকতে পারেন মুকুল রায়। হয়ত বা এখন সেই চেষ্টাই করছেন তিনি। যদিও বা মুকুল রায় জানিয়ে দিয়েছেন, নিজের ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে যন্ত্রণায় রয়েছেন তিনি।

জল্পনা আরও বেড়েছে, যখন বৈঠকে অনুপস্থিত মুকুল রায় সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দিলীপবাবু জানিয়ে দিয়েছেন, মুকুলবাবু করোনা পরিস্থিতির কারণে এবং পারিবারিক সমস্যার জন্য বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেননি। তবে মুকুলবাবুর অবশ্য স্পষ্ট কথা, তাকে এই বৈঠক সম্পর্কে কেউ কিছু জানায়নি। আর রাজ্য বিজেপির সভাপতির এক মন্তব্য এবং মুকুল রায়ের আর এক মন্তব্যকে কেন্দ্র করেই সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়কের পরবর্তী রাজনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে।

ঘনিষ্ঠরা বলছেন, মুকুলবাবুর সঙ্গে দিলীপবাবুর সম্পর্ক যে ভালো নয়, তা সকলেই জানেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বিধানসভা নির্বাচনের পরে ফলাফল খারাপ হওয়ার জন্য দিলীপবাবুর দিকে যখন অভিযোগের আঙুল তুলতে শুরু করেছেন অনেকে, তখন নীরবতা পালন করেছেন মুকুল রায়। নিজের সূক্ষ্ম মস্তিষ্কের ক্ষুরধার বুদ্ধির মধ্যে দিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার জন্য ঘুটি সাজাতে শুরু করেছেন তিনি।

এক্ষেত্রে শ্যাম এবং কুল দুই রক্ষা করে একদিকে বিজেপি নেতৃত্বের ওপর চাপ সৃষ্টি করে বড় পদ লাভ করার চেষ্টা করছেন মুকুলবাবু। আর সেই কারণেই এখন আড়ালে থেকে বড় কোনো রণনীতি স্থাপন করে দ্রুত পর্দাফাস করতে পারেন বঙ্গ বিজেপির চাণক্য বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!