এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > সিএএ নিয়ে অশান্তি কিছুটা কমলেও আশঙ্কার কালো মেঘ বাংলার আকাশে! প্রশ্ন একটাই – স্বাভাবিক কবে?

সিএএ নিয়ে অশান্তি কিছুটা কমলেও আশঙ্কার কালো মেঘ বাংলার আকাশে! প্রশ্ন একটাই – স্বাভাবিক কবে?


 

গত শুক্রবার থেকেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে সংশোধিত নাগরিক আইনের বিরোধিতা করে রীতিমত হিংসাত্মক আন্দোলনে নামতে দেখা যায় কিছু সংগঠনকে। উত্তর থেকে দক্ষিণ বাংলার সর্বত্রই রেল অবরোধ, পথ অবরোধ, বাসে আগুন দেওয়া, রেলে আগুন দেওয়া, ভাঙচুর, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস সহ একাধিক ঘটনা সামনে আসতে থাকে।

সোমবার বিকেল আসতে আসতে দক্ষিণবঙ্গের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও এখনও পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে বিক্ষিপ্ত অশান্তি, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি ঘটনার ছবি সামনে আসছে। বস্তুত, মালদা থেকে শুরু করে উত্তর দিনাজপুর সর্বত্রই সরকারি বাস থেকে শুরু করে রেল স্টেশনে বিক্ষোভ, ভাঙচুর, পথ অবরোধের মত দৃষ্টান্ত ঝড় তুলেছে রাজ্য রাজনীতিতে।

রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে গত পরশু রীতিমতো বিজ্ঞপ্তি জারি করে আন্দোলনকারীদেরকে হিংসা ছেড়ে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করার বার্তা দেওয়া হয়। পাশাপাশি বিক্ষোভকারীরা যদি আইন না মেনে সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করে বিক্ষোভের নামে উত্তেজনা ছড়ায়, সেক্ষেত্রে প্রশাসনকে পরিস্থিতি কঠোর হাতে মোকাবেলা করতে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।

কিন্তু প্রশাসনের এত তৎপরতা সত্ত্বেও, সোমবার পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গা থেকে বিক্ষিপ্ত অশান্তি ছবি সামনে উঠে আসতে শুরু করে। বস্তুত, মালদহের সামসিতে বিক্ষোভকারীরা রেল স্টেশনের দিকে এগিয়ে যেতে শুরু করলে পুলিশের তরফ থেকে তাদেরকে বাধা দেওয়া হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ করে এবং তাতেও অবস্থার উন্নতি না হলে, পরবর্তীতে রবার বুলেট ছড়া এবং কাদানে গ্যাস ছোড়ার মাধ্যমে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। এই ঘটনায় 10 জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন জখম রয়েছেন বলেও খবর। একই অবস্থা মুর্শিদাবাদ জেলার। সেখানেও পুলিশ এবং বিক্ষোভকারীদের খণ্ডযুদ্ধে 160 জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পাশাপাশি বিভিন্ন জনকে পুলিশের পক্ষ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজ্যজুড়ে মোট গ্রেফতার হওয়া বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা 354 ছাড়িয়ে গেছে বলে রাজ্য পুলিশ সূত্রে খবর। মুর্শিদাবাদ জেলাতে পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, জেলার সুতি ব্লকের দুইটি পঞ্চায়েতের রীতিমতো 144 ধারা জারি করা হয় প্রশাসনের তরফ থেকে।

কিন্তু এক্ষেত্রে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে এখনো পর্যন্ত কোনো হিংসাত্মক ঘটনা না ঘটলেও আতংকের পরিস্থিতি রীতিমত ছড়িয়েছিল এলাকাজুড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং গুজব ছড়ানো আটকাতে হাওড়া জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়। কিন্তু এইরকম প্রাণচঞ্চল একটি এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে স্তব্ধ হয়ে পড়ে ব্যাংক এবং ডাকঘরের পরিষেবা।

এখনও পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়ার কোনো রকম খবর নেই। বরঞ্চ পরিস্থিতিকে শান্ত রাখার জন্য মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে প্রশাসন এমনটাই খবর। আবার বিক্ষিপ্তভাবে সোমবার দিনই বাঁকুড়া জেলাতে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদেরকে।

পরবর্তীতে পুলিশের তরফ থেকে লাঠি চালানো হয় এবং কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। উত্তর দিনাজপুর জেলায় বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানীর বিরুদ্ধে। জানা যায়, তার নেতৃত্বেই জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

এমনকি স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিক্ষোভের সময় উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করে। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে পুলিশের তরফ থেকে রীতিমতো লাঠিচার্জ করে মারমুখী জনতাকে ছত্রভঙ্গ করা হয়। যদিও পথ অবরোধ, ভাঙচুর তৃণমূলের কোনো মদত নেই বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। পুলিশের তরফ থেকেও নিজেদের গাড়ি ভাঙচুর করার ঘটনাকে স্বীকার করা হয়নি। তবে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহনের বাস এবং বেশ কয়েকটি সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে তা মেনে নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

দক্ষিণবঙ্গের বীরভূম জেলাতে দুবরাজপুরে কেন্দুলী মোরে টায়ার জ্বালিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। সাঁইথিয়াতে বিক্ষোভকারীরা রেল অবরোধ করে। শুধু তাই নয়, ট্রেন লাইনে খড়ের গাদা বসিয়ে তাতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার জেরে হাওড়া-সিউড়ি ইন্টারসিটি অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।

প্রায় আধঘন্টা পরে অবরোধ উঠে গেলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্য প্রশাসনের তরফ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে খবর করা হলেও, উত্তর থেকে দক্ষিণ যেইরকম খণ্ডখণ্ড বিক্ষোভের ছবি সামনে আসছে, তাতে করে আগামীদিনে রাজ্য প্রশাসনের কপালে চিন্তার ভাঁজ যে বাড়তে পারে, এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই বিশেষজ্ঞদের মনে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিক্ষোভকারীদেরকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বললেও, শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়! সেদিকে লক্ষ্য থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!