এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > ছিঃ, কামদুনির প্রতিবাদী মৌসুমী, টুম্পাদের উদ্দেশ্যে একি উক্তি? কুনালের মন্তব্যে সোচ্চার বিরোধীরা!

ছিঃ, কামদুনির প্রতিবাদী মৌসুমী, টুম্পাদের উদ্দেশ্যে একি উক্তি? কুনালের মন্তব্যে সোচ্চার বিরোধীরা!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- প্রায় 10 বছর আগে ঘটে যাওয়া কামদুনির ঘটনায় হাইকোর্টে সুবিচার পাওয়া যাবে, এমনটাই আশা করেছিলেন সকলে। কিন্তু সেখানে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সঠিক তথ্য প্রমাণ না যারা দোষী তারা বেকসুর খালাস পেয়ে গিয়েছেন। অন্তত তেমনটাই অভিযোগ বিরোধীদের। আর এরপরেই প্রথম দিন থেকে এই ঘটনায় প্রতিবাদ করা টুম্পা কয়াল থেকে শুরু করে মৌসুমী কয়ালরা ভেঙে পড়েছেন। ভেঙে পড়েছে নির্যাতিতা মৃতার পরিবার। এখন তারা দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। কারণ তারা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন। তাদের একটাই দাবি, তারা সুবিচার চান। তবে যারা প্রতিবাদী, তাদের আন্দোলনকে আবার দমিয়ে দেওয়ার জন্য এবার শাসক পক্ষের পক্ষ থেকে এলো বড়সড় মন্তব্য। এদিন এমন একটি মন্তব্য করলেন তৃণমূল নেতা কুনাল ঘোষ, যাতে তাকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। বিরোধীদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, এত নিম্নরুচির পরিচয় কি করে দিতে পারেন এই তৃণমূল নেতা?

প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টের রায় প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন প্রথম দিন থেকে এই ঘটনায় প্রতিবাদ করা মৌসুমী কয়াল এবং টুম্পা কয়ালরা। তবে শাসকদলের অবশ্য এই প্রতিবাদীদের নিয়ে যে ব্যাপক আপত্তি, এদিন কুনাল ঘোষের মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে সেই বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে গেল। নাম না করে এদিন এই তৃণমূল নেতা বলেন, “যারা এই প্রতিবাদ করছে, প্রতিবাদের অর্থ কি ম্যাচিং শাড়ি ব্লাউজ পরে প্রতিবাদ করা? কান্নার নাটক করা? কাঁদতে কাঁদতে ঢলে পড়ছেন। এটা কখনও আসল প্রতিবাদ হতে পারে না।” আর তৃণমূল নেতার মুখ থেকে একজন মহিলা সম্পর্কে এই ধরনের মন্তব্য শুনে রীতিমত সোচ্চার হচ্ছেন অনেকেই। সমালোচকদের একাংশ বলছেন, সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খোলাই হয়ত কাল হয়েছে মৌসুমী কয়াল, টুম্পা কয়ালদের। প্রথম যখন এই ঘটনা ঘটে, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এলাকায় এসে প্রতিবাদীদের প্রশ্নের মুখে পড়ে তাদের সিপিএমের তকমা পর্যন্ত দিতে ছাড়েননি। ফলে তার দলের নেতার কাছ থেকে এমনটাই আশা করা যায়। কিন্তু প্রতিবাদী সত্তাকে ছেড়ে দিয়ে একজন মহিলাকে অন্তত এইরকম ভাষায় আক্রমণ না করলেই পারতেন কুনাল ঘোষ বলেই কটাক্ষ একাংশের।

বিরোধীদের দাবি, দীর্ঘদিন জেল খেটে আসা একজন আসামির কাছ থেকে এইরকম মন্তব্যই আশা করা যায়। হাইকোর্টে কামদুনি সুবিচার না পাওয়ার পর সকলেরই মন খারাপ। কিন্তু শাসক দলের নেতারা, যারা প্রতিবাদ করছে, তাদেরকেও আক্রমণ করতে ছাড়ছেন না। কোথায় তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াবেন, তারা সুবিচার পাননি, তাদেরকে সুবিচার পেতে সাহায্য করবেন। কিন্তু তা না করে নাম না করে টুম্পা কয়াল, মৌসুমী কয়ালদের যে ভাষায় আক্রমণ করলেন কুনাল ঘোষ, তাতে তার রুচিবোধ অবশ্যই প্রশ্নের মুখে রয়েছে। তিনি আবার প্রমাণ করে দিলেন, এ বাংলায় কোনো মহিলাই নিরাপদ নয়। এক্ষেত্রে যারা নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে, যাদের গলা পৌঁছে যাবে নবান্ন পর্যন্ত এবং তাদের চাপে পড়বে সরকার, সেখানে তৃণমূল নেতারা সেই প্রতিবাদীদের নির্লজ্জ আক্রমণ করতে পর্যন্ত ছাড়বেন না। কুনাল ঘোষ সেটাই প্রমাণ করে দিলেন বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূল নেতারা যত এই ধরনের মন্তব্য করবেন, ততই তারা নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনবেন। এমনিতেই সরকারের বিরুদ্ধে একটা স্রোত এই কামদুনির ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা রাজ্য জুড়েই তৈরি হয়েছে। বিরোধীরা বাড়তি হাতিয়ার পেয়ে গিয়েছে। তারা ক্রমাগত বলেই চলেছে যে, এই সরকার যারা দোষী তাদের পক্ষ অবলম্বন করছে। সেই কারণেই হাইকোর্টে সঠিক তথ্য প্রমাণ তারা দিতে পারেনি। যার জন্য আজকে দোষীরা ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। তবে সেখানে প্রতিবাদীরা যখন নিজেদের আওয়াজকে আরও তীব্র করছেন, তখন তাদের আক্রমণ না করে আন্দোলনকে সমর্থন জানাতে পারতেন কুনাল ঘোষ। কিন্তু উল্টে যেভাবে তাদের উদ্দেশ্যে মন্তব্য করে খেপিয়ে দেওয়ার কাজ করছেন এই তৃণমূল নেতারা, তাতে আখেরে ক্ষতি হচ্ছে রাজ্যের শাসক দলেরই। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!