এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ম্যারাথন জেরা শেষ, তবে বিপদ শুরু রুজিরার? গতিপ্রকৃতি দেখে হতাশ নয় বিজেপি!

ম্যারাথন জেরা শেষ, তবে বিপদ শুরু রুজিরার? গতিপ্রকৃতি দেখে হতাশ নয় বিজেপি!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-শ্বশুর, শাশুড়ির মতো ইডি দপ্তরে হাজিরা অন্তত এড়িয়ে যাননি রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই বুধবার তাকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দপ্তরে পৌঁছে যেতে দেখা যায়। তবে সন্ধ্যা গড়িয়ে যাওয়ার পরেও তাকে একের পর এক প্রশ্ন ইডি আধিকারিকরা করতে থাকেন। যার ফলে সকলেই উদগ্রীব ছিলেন যে, কখন রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় ভেতর থেকে বেরোবেন! তার জেরা পর্ব কখন শেষ হবে? অবশেষে তার শেষ হলো প্রায় আট ঘন্টা ধরে তাকে জেরা করার পর ছেড়ে দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যা দেখে অনেকে হতাশ হলেও বিরোধীরা কিন্তু মোটেই হাল ছাড়ছেন না। তারা বলছেন, এ তো সবে সন্ধ্যে হয়েছে। সামনের দিন আরও ভয়ংকর। এবার তো বিপদ শুরু হলো রুজিরাদেবীর বলেই দাবি একাংশের।

প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে কোম্পানির সিইও, সেই লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের যোগ রয়েছে বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের। আর তার ভিত্তিতেই সেই কোম্পানির প্রাক্তন ডিরেক্টর তথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এদিন তলব করা হয়েছিল। তিনি সময়ের মধ্যে এসে পড়ার সাথে সাথেই ইডি আধিকারিকরা প্রশ্ন করতে শুরু করেন। বিভিন্ন তথ্য তারা জানতে চান। প্রায় দীর্ঘ সময় ধরে রুজিরাদেবীকে জেরা করা হয়। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে এর আগে যখন তিনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মুখোমুখি হয়েছিলেন, তখন বিষয় অন্য থাকলেও, বাইরে বেরিয়ে এসে গাড়ির কাঁচ নামিয়ে তাকে নমস্কার করতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এদিন টানা জেরার পর গাড়ির কাঁচ নামানো তো অনেক দূরের কথা, গাড়ি না থামিয়েই তড়িঘড়ি ইডি দপ্তর ছাড়েন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহধর্মিনী। আর এই চিত্র দেখেই আশায় বুক বাঁধছে রাজ্যের বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি।

বিজেপির দাবি, রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বামী শেষ যখন ইডি দপ্তরে এসেছিলেন, তখন বাইরে বেরিয়ে অনেক বড় বড় কথা বলেছিলেন। তার গলায় শোনা গিয়েছিল সেই বস্তা পচা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কথা। তিনি স্পষ্ট করেছিলেন যে, বিজেপি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে নাকি লেলিয়ে দিচ্ছে তার পেছনে। কিন্তু সেসব ঢপের চপ বাংলার মানুষ গ্রহণ করছে না। বাংলার মানুষ চাইছেন, এবার ব্যবস্থা গ্রহণের পালা শুরু করুক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাই এদিন রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় টানা জেরার পর কিছুটা হলেও চাপে রয়েছেন। কারণ তিনি বুঝতে পেরেছেন যে, এবার মূল পর্বে পা রেখে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। এবার ধরার পালা তারা শুরু করবেন। তাই ইডি দপ্তর থেকে বেড়িয়ে হাসিমুখ নাকি দুঃখের মুখ, জেরা কেমন হলো, তা রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ দেখে বোঝার চেষ্টা করা হলেও, তার কোনো সুযোগ পাওয়া গেল না। কারণ তিনি গাড়ির কাঁচ ওপরে তুলেই পলায়ন করলেন। যার ফলে অনেকে বলছেন, যাদের মুখ থেকে এত বড় বড় কথা বেরোয়, তারা যখন গাড়ির কাঁচ বন্ধ করে ইডি দপ্তর ছেড়েছেন, তখন একটা বিষয় স্পষ্ট যে, এবার তারা চাপে পড়তে শুরু করেছেন। আগামী দিন বিপদ আসন্ন বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, বারবার বারবার বড় গলায় অনেক বড় বড় কথা বলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নাকি এক পয়সাও দুর্নীতি করেননি। কিন্তু যখন তিনি জেরার মুখোমুখি হন, তখন আবার রক্ষাকবচ নিয়ে সেখানে তাকে যেতে হয়, এটাই তার বীরত্বের প্রতীক। যাই হোক, তিনি কি করবেন, সেটা তার নিজস্ব ব্যাপার। কিন্তু তার সহধর্মিনী দীর্ঘ জেরার পর যেভাবে সংবাদমাধ্যমের সামনে নিজের মুখটা না দেখিয়েই চলে গেলেন, তাতে বিরোধীরা বলছে, এবার তো আসল খেলা শুরু করে দিয়েছে ইডি। এবার ভোর হওয়ার শুধু সময়ের অপেক্ষা। আর সেই ভোরেই বঙ্গ রাজনীতিতে ভূমিকম্প হবে। এতদিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন ছিল। তবে এদিন রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টানা জেরার স্টাইল দেখে আশ্বস্ত হচ্ছে বিরোধী শিবির। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!