এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > চোখ বুজে বিল পাশ নয় – প্রয়োজনে স্পিকার-এজিকে রাজভবনে তলব! কড়া অবস্থান স্পষ্ট করছেন রাজ্যপাল – জেনে নিন বিস্তারিত

চোখ বুজে বিল পাশ নয় – প্রয়োজনে স্পিকার-এজিকে রাজভবনে তলব! কড়া অবস্থান স্পষ্ট করছেন রাজ্যপাল – জেনে নিন বিস্তারিত

ভবিষ্যতে বিতর্ক এড়াতে চান তিনি। আর তাই তো বিধানসভার বিগত অধিবেশনে পাশ হওয়া গণপিটুনি প্রতিরোধ সংক্রান্ত বিলটিতে সব দিক খতিয়ে দেখার পরই সম্মতিসূচক স্বাক্ষর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার। আইন এবং সংবিধান মেনেই তিনি এবিষয়ে তাঁর কর্তব্য পালন করবেন বলে স্থির করেছেন। শুধু তাই নয়, এজন্য তিনি বিধানসভা থেকে অধিবেশনের বিবরণী সহ নথিপত্র তলব করবেন বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এমনকি প্রয়োজনে স্বয়ং অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ও অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত সহ কয়েকজন সংবিধান এবং আইন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনাও করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন জগদীপ ধনকার।

রাজ্যপালের এহেন কড়া অবস্থানের জেরে গণপিটুনি বিল বিধানসভায় পাশ হলেও তা নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরির সম্ভাবনা দেখা দিতে শুরু করেছে। কিন্তু নিজে থেকেই হঠাৎই এমন কেন সিদ্ধান্ত কেন নিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনটার? বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিলটি নিয়ে রাজ্যপালের কড়া অবস্থানের পিছনে রাজ্যের দুই বিরোধী শিবিরের দরবার মূল কারণ। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার কংগ্রেস পরিষদীয় তথা বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এবং বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী নবনিযুক্ত রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন। যেখানে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস পরিষদীয় দলের সহনেতা নেপাল মাহাত ও বিধায়ক জুলকারনানি।

মূলত বিধানসভায় বিরোধীদেরকে প্রাপ্য মর্যাদা না দেওয়া সহ শাসকদলের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ এই নতুন রাজ্যপালের কাছে জানিয়েছেন বাম এবং কংগ্রেস নেতৃত্ব। এছাড়াও রাজ্যের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং পুলিসের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির নালিশও করেন তাঁরা। তবে গণপিটুনি সংক্রান্ত বিল নিয়ে তারা এদিন রাজ্যপালের কাছে তাদের বক্তব্য পেশ করেন। আর বাম এবং কংগ্রেস এই দুই পরিষদীয় দলের বিল পাসের অভিযোগকে সামনে রেখেই এবার এই ব্যাপারে কড়া অবস্থান নিতে চলেছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে সাংবাদিক বৈঠকে আব্দুল মান্নান এবং সুজন চক্রবর্তী বলেন, “গণপিটুনি বিলের বিষয়বস্তু বা উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের তেমন কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু বিধায়কদের কার্যত অন্ধকারে রেখে রাতারাতি একই নম্বরের দুটি বিল বিলি করা হয় তিন দিনের ফারাকে। প্রথমটিতে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ক্ষেত্রে অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নিদান ছিল। কিন্তু বিধানসভায় আলোচনার দিন বিলি করা সংশোধিত বিলে সেই সাজা মৃত্যুদণ্ডে বলে উল্লেখ করা হয়। একই নম্বরের দুটি বিল পেশেই রাজ্যপাল অনুমোদন দিয়েছেন বলেও সরকারের তরফে সেদিন জানানো হয়। কিন্তু সেটা কতটা সঠিক, তা নিয়ে আমাদের ধন্দ এখনও রয়েছে। সর্বোপরি, এই ধরনের বিতর্কিত বিল জোর করে পাশ করালে ভবিষ্যতে এনিয়ে মামলা হলে সরকারই বিপদে পড়বে বলে আমরা সতর্কও করি। কিন্তু শাসকপক্ষ তাতে কর্ণপাত করতে চায়নি সংখ্যাগরিষ্ঠতার গরিমায়। শেষমেশ আমরা এনিয়ে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের দ্বারস্থ হয়েছি। উনি আমাদের সব দিক খতিয়ে দেখে সংবিধান ও আইন মোতাবেক পদক্ষেপ করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।”

এদিকে গণপিটুনি বিল পাসের ব্যাপারে রাজ্যপাল কড়া অবস্থান নিলে এদিন এই ব্যাপারে তার প্রতিক্রিয়া দেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, “বিলটি রাজভবনে পাঠানো হয়েছে কি না, বলতে পারব না। তবে উনি কী করবেন, সেটা ওঁর ব্যাপার। সংবিধান মেনে উনি কোনও আলোচনায় ডাকলে তখন এব্যাপারে ভেবে দেখব। এর বেশি এনিয়ে কিছু বলতে চাই না।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, এতদিন যে কোনো বিল খুব সহজেই সরকারের পক্ষ থেকে বিধানসভায় পাস করানোর পর তা রাজভবনে পাঠিয়ে গেলে তা পাশ হয়ে যেত। কিন্তু এবার আর তা না করে বিরোধীদের বক্তব্যকে মান্যতা দিয়ে নতুন রাজ্যপাল যেভাবে তার রাজ্যে আগমনের পর বিধানসভায় প্রথম বিল পাসের ঘটনায় কড়া অবস্থান নিলেন, তাতে ভবিষ্যতে রাজ্য বনাম রাজ্যপালের সম্পর্কের তিক্ততা আসতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করতে শুরু করেছে সমালোচক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!