এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > চোর, চোর শব্দে উত্তাল বিধানসভা, কবে লজ্জা হবে মমতার? প্রশ্নবাণ বিজেপির!

চোর, চোর শব্দে উত্তাল বিধানসভা, কবে লজ্জা হবে মমতার? প্রশ্নবাণ বিজেপির!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-চোর বললে নাকি দিদিমণির খুব গোসা হয়। প্রকাশ্য অনেক সভায় তিনি সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, তাকে চোর বলা যাবে না। আবার অনেক সময় রাগ তার এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে যে, দুর্নীতি ধরা পড়ে যাচ্ছে জন্য, চুরি ধরা পড়ে  যাচ্ছে আবার কোথাও কোথাও বলে ফেলেছেন, বেশ করেছি চুরি করেছি। আমরা যদি চোর হই, তাহলে তোমরা হচ্ছ ডাকাত। কিন্তু ঘুরিয়ে যে নিজেদের দুর্নীতি এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে অনেক জায়গায় রাগ সামলাতে না পেরে স্বীকার করে নিয়েছেন এই রাজ্যের পিসিমণি, তা স্পষ্ট। কিন্তু কেউ আশা করেনি যে, ক্ষমতায় বসে তিনি এইভাবে রাজ্যটাকে শেষ করে দেবেন। শিক্ষা নিয়োগ, রেশন দুর্নীতি যে ভয়াবহ আকার নিয়েছে, তারপর রাজ্যের সরকার অন্তত এই চুরির রাস্তা থেকে সরে আসবে। এমনটাই মনে করেছিলেন সকলে। কিন্তু না, এবার ক্যাগ রিপোর্টে যে ভয়াবহ দুর্নীতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তা নিয়ে যেভাবে বিরোধীরা চেপে ধরেছে, তাতে এটা স্পষ্ট যে, এই সরকারের লজ্জা বলতে কিছু নেই। এত দুর্নীতির পরেও চুপচাপ বসে থাকবেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এমন ভাব দেখাবেন, যেন তার কোনো দোষ নেই। সবটাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। কিন্তু এসব করে আর কতদিন! বিরোধীরা এবার এই ক্যাগ রিপোর্টকে হাতিয়ার করে যেভাবে বিধানসভার অধিবেশন শুরু হতেই চেপে ধরেছে এই শাসক দলকে, তাতে এবার বড় একটা কিছু হতে চলেছে এই বঙ্গ রাজনীতিতে।

প্রসঙ্গত, বিধানসভার অধিবেশন শুরু হতেই সেখানে ক্যাগ রিপোর্ট নিয়ে আলোচনার দাবি জানায় বিজেপি। কিন্তু এই বিধানসভার অধ্যক্ষ যে দলদাস, তার প্রমাণ তিনি বারে বারে দিয়েছেন। এদিনও সেই রকমই চিত্র উঠে এসেছে বলে অভিযোগ। স্বাভাবিক ভাবেই অধিবেশন কক্ষে এই দুর্নীতির বিষয় নিয়ে হৈ চৈ করার পর বাইরে বেরিয়ে এসেও চোর, চোর স্লোগান দিতে থাকেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সহ বিজেপি বিধায়করা। এখন অনেকে বলতেই পারেন যে, বিধানসভার অধিবেশনের বাইরে বেরিয়ে বিজেপি বিধায়কদের এই সোচ্চার হওয়ার কোনো অর্থ হয় না। অধিবেশন কক্ষে তো তারা আলোচনার দাবি জানিয়েও শেষ পর্যন্ত সফল হলেন না! তবে এই রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর সব কিছুতেই যে দলতন্ত্র কায়েম হয়েছে, এমনকি বিধানসভার অন্দরমহলকেও যে তারা ছাড়েনি, সেখানেও যে বিরোধীদের কথা বলতে দেওয়া হয় না, মানুষের দাবি তুলে ধরতে দেওয়া হয় না, এটা তো নতুন কিছু নয়। মানুষ তো সেটা জানে। আর আগেকার বিরোধী দলনেতার থেকে এখনকার বিরোধী দলনেতার কি পার্থক্য, সেটাও মানুষ দেখতে পাচ্ছেন। চোখে চোখ রেখে যেভাবে শুভেন্দু অধিকারী নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিরোধী দলকে, তাতে চাপে পড়ে যাচ্ছে এই সরকার। তাই যে চোর, চোর শব্দ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কান ঝালাপালা করে দিচ্ছে, এবার সেই শব্দ উল্লেখ করেই স্লোগান দিয়ে বিধানসভাকে প্রথম দিনেই শাসক দলের অস্বস্তির কারন করে তুললেন শুভেন্দু অধিকারী।

ইতিমধ্যেই কড়া প্রশ্নবানে এই শাসক দলকে বিদ্ধ করতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, আর কবে লজ্জা হবে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর! কবে তিনি এই দুর্নীতির কথা স্বীকার করবেন! ক্যাগ রিপোর্টেই তো স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, 2 লক্ষ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে এই রাজ্যের সরকার। চুরি করে করে রাজ্যটাকে এরা শেষ করে দিয়েছে। কিন্তু এভাবে পার পাওয়া যাবে না। গোটা ঘটনার তদন্ত হবে এবং চোরেরা জেলে যাবে বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূল শুধু ক্ষমতার জোরে নাচতে থাকুক। কিন্তু তাদের কি করে জব্দ করতে হয়, তা খুব ভালো জানেন শুভেন্দু অধিকারী। ক্যাগ রিপোর্ট নিয়েও সেটাই তিনি করবেন। দিল্লিতে গিয়েও এই ব্যাপারে একপ্রস্থ অভিযোগ জানিয়েছেন এই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তবে সংসদীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে রাজ্যের বিরোধী নেতা হিসেবে বিধানসভার ভেতরে এই নিয়ে সোচ্চার হওয়া তার কাজ। তাই সেটা তিনি প্রথম দিন অধিবেশন শুরু হতেই করে দেখিয়েছেন। বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, শিক্ষাতে যে দুর্নীতি হয়েছে, রেশনে যে দুর্নীতি হয়েছে এবং তারপর ক্যাগ রিপোর্টে যে দুর্নীতির কথা উল্লেখ রয়েছে, তাতে তিনি অন্তত ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন। এই লড়াইয়ে এই সরকারের মুখোশ খুলে দিতে তিনি যতদূর যেতে হয় যাবেন এবং শেষ পর্যন্ত চোরেদের জেলে না পাঠালে তার এই লড়াই থামবে না। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!